মুরারইয়ে অভিষেক। নিজস্ব চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে পানীয় জল ও নিকাশির দাবি জানালেন রামপুরহাট শহরের চামড়াগুদাম এলাকার মহিলাদের একাংশ।
‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে মঙ্গলবার বীরভূমে এসেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বিকেলে মাড়গ্রাম যাওয়ার পথে চামড়াগুদামে স্থানীয় মহিলারা অভিষেকের গাড়ি ঘিরে ধরেন। তাঁদের দেখে গাড়ি থামিয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন অভিষেক। পরে এলাকার বাসিন্দা লালবানু বিবি বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় রাস্তা নেই, টাইম কল নেই, জল নিকাশি ব্যবস্থা নেই। এলাকার বিধায়ককে বলা হয়েছে। কিন্তু কিছু করেননি। সেই কারণে অভিষেকের কাছে আমরা দাবি জানিয়েছি।’’ মহিলারা জানান, অভিষেক দাবির বিষয়গুলি তাঁর আপ্ত সহায়ককে দিয়ে ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করেছেন। সমস্যা সমাধান করার আশ্বাসও দিয়েছেন।
মুর্শিদাবাদ থেকে এ দিন সকালেই জেলায় আসার কথা ছিল অভিষেকের। পরে অবশ্য কর্মসূচিতে কিছুটা বদল হয়। সকাল থেকেই লোহাপুর-নলহাটি, নলহাটি-মুরারই এবং নলহাটি-রামপুরহাট রাস্তার দখল নেয় রাজ্য ও জেলা পুলিশ। বিকেল ৪টে নাগাদ মুর্শিদাবাদ ছেড়ে নলহাটি ২ ব্লকের লোহাপুর কাঁটাগড়িয়া মোড়ে এসে পৌঁছন অভিষেক। সেখানে তাঁকে পুষ্পস্তবক ও গলায় হার দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ শতাব্দী রায় মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী ছাড়াও জেলার তৃণমূল বিধায়ক ও নেতারা।
গাড়ির উপর চেপে মানুষজনের উদ্দেশে হাত নাড়তে থাকেন অভিষেক। সাড়ে চারটেয় নলহাটি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করেন। দাঁড়িয়ে থাকা কর্মীদের সঙ্গে হাত মেলান। কয়েক হাজার কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দা তাঁকে দেখার জন্য ভিড় জমিয়েছিলেন। নলহাটি থেকে চাতরার সভাস্থলের উদ্দেশে রওনা হন অভিষেক। রাস্তার দুই পাশে ছিল ভিড়। চাতরা গণেশলাল হাইস্কুলের মাঠের জনসভায় এ দিন প্রত্যাশিত ভাবেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন অভিষেক। একশো দিনের কাজ এবং আবাস যোজনার টাকা আটকানো নিয়ে কেন্দ্রকে দোষারোপ করেন। অভিষেক বলেন, ‘‘২০২১ সালে বাংলায় হেরে যাওয়ার আক্রোশে একশো দিনের কাজের টাকা দু’বছর যাবত আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আবাস যোজনার টাকাও আটকে রেখেছে।’’ অভিষেক হিসাব দিয়ে বলেন, ‘‘বীরভূম জেলায় প্রায় ১৪ লক্ষ লোক রয়েছেন, যাঁদের জীবন জীবিকা ১০০ দিনের কাজের উপরে নির্ভর করে। ৮৪ হাজার লোক রয়েছেন, যাঁরা কাজ করে বসে রয়েছেন কিন্তু তাঁদের প্রাপ্য টাকা এখনও ছাড়া হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ একমাত্র রাজ্য, যাদের বাড়ির টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র সরকার।’’
সভা শেষে মারগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন অভিষেক। রামপুরহাট ঢোকার আগে করিম মোড় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজনের সঙ্গে জন সংযোগ করেন। মাড়গ্রামের হাতিবাঁধা মোড় থেকে রোড-শো শুরু করেন। রাস্তার পাশে পুলিশের ব্যারিকেড ভিড়ের চাপে ভেঙে যায়। বাড়ির ছাদেও অনেকেই ভিড় করেন অভিষেককে দেখতে। গ্রামের মহিলারা শঙ্খধ্বনি ও ফুল ছিটিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান।
জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘জেলায় প্রথম দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যে জনজোয়ার হয়েছে, তাতে বিরোধীদের আর কোনও কথা বলা উচিত নয়।’’ যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণের মন্তব্য, ‘‘জনজোয়ার হয়েছে কি না, তা পঞ্চায়েত ভোটে বুঝতে পারবে তৃণমূল। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, এ দিন অধিকাংশ জায়গা ফাঁকা ছিল। লোক হবে না ভেবে সব কর্মসূচি বদল করে সময় নিয়েও যুবরাজের কর্মসূচিতে লোক আনতে ব্যর্থ তৃণমূল। লোক না হওয়ায় অনেক নেতার চাকরি যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy