নিজস্ব চিত্র
কালীপুজো ও দীপাবলি ঘিরে এ বারও বাজির শব্দ-তাণ্ডবের আশঙ্কা করছেন বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। তবে দুই জেলার পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাস, শব্দবাজি রুখতে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। যদিও কালীর বিসর্জনের আগে না আঁচিয়ে বিশ্বাস করতে রাজি নন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিবারই পুলিশ আশ্বাস দেয়। তার পরেও শব্দবাজি ঢুকে যায় জেলায়। রাতভর শব্দের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ হতে হয় শিশু ও বয়স্কদের।
পুলিশের দাবি, গত কয়েক বছরে কালীপুজোয় পুরুলিয়া জেলায় অনেকটাই দাপট কমেছে নিষিদ্ধ শব্দবাজির। এ বারেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পুজোর কয়েকদিন আগে থেকেই তৎপরতা শুরু হয়েছে পুলিশের। সূত্রের খবর, বাজি ঢোকা আটকাতে কালীপুজোর এক সপ্তাহ আগে থেকেই আন্তঃরাজ্য ও আন্তঃজেলা সীমানায় শুরু হয়েছে ‘নাকা চেকিং’। এ ছাড়া, প্রতিটি থানায় বাজারগুলিতে নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি বন্ধে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে আদ্রা-সহ কয়েকটি থানা আবার বাজি বিক্রেতাদের ডেকে জানিয়ে দিয়েছে, নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু বাজি বাজেয়াপ্ত করাই নয়, বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
বাঁকুড়া জেলারও বেশ কয়েকটি জায়গায় ইতিমধ্যেই শব্দবাজি আটক করা শুরু হয়েছে। বাঁকুড়া জেলা পুলিশের দাবি, গোটা পুজো মরসুম জুড়েই শব্দবাজি রুখতে অভিযান চলছে সারা জেলায়। এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকশো প্যাকেট নিষিদ্ধ শব্দবাজি সারা জেলায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার পরেও লুকিয়ে শব্দবাজি বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না। সোমবারই বেলিয়াতোড়ের নতুন বাজার এলাকায় চারটি দোকানে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। সেখান থেকে প্রায় ৭০ প্যাকেট চকোলেট বোমা ও কিছু গাছ-বোমা উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। বেলিয়াতোড় থানা জানিয়েছে, ওই ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অন্য দিকে, বাঁকুড়ার জয়পুরে সোমবার সন্ধ্যায় মোট ১২০টি চকোলেট বোমা উদ্ধার করা হয়। পুলিশের দাবি, দুই সাইকেল আরোহী ব্যাগে করে চকোলেট বোমা নিয়ে যাচ্ছিলেন। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ তাঁদের তাড়া করে। তখন সাইকেল আরোহীরা ব্যাগগুলি ফেলে দিয়ে চম্পট দেয়। পুলিশের দাবি, ওই চকোলেট বোমাগুলি বাঁকুড়া জেলার জয়পুরের দোকানে বিক্রি করার জন্যই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও জানান, নিষিদ্ধ শব্দবাজি রুখতে দুর্গাপুজোর সময় থেকেই জেলার প্রত্যেকটি থানাকে সক্রিয় হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। তিনি বলেন, “প্রত্যেকটি থানাই নিজেদের এলাকায় শব্দবাজি বিক্রি রুখতে নজরদারি চালাচ্ছে। পুজোর সময় থেকেই জেলা জুড়ে শব্দবাজি উদ্ধার হচ্ছে নিয়মিত। জেলায় শব্দবাজি ফাটানো রুখতে পুলিশ তৎপর।”
পুরুলিয়া জেলার মধ্যে রঘুনাথপুর মহকুমার কিছু এলাকায় ঘটা করে কালীপুজো করা হয়। আবার অবাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ এমন কিছু এলাকায় কালীপুজোর তুলনায় দেওয়ালিতে শব্দবাজি দেদার ফাটানোর অভিযোগ ওঠে। তবে পুলিশের দাবি, গত কয়েক বছর ধরেই কালীপুজো ও দেওয়ালির আগে নিয়মিত অভিযান ও ধরপাকড় শুরু হওয়ায় নিষিদ্ধ শব্দবাজি এখন এই মহকুমা এলাকায় অনেক কম বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দাদের একাংশ।
তবে নজরদারিতে আলগা দিতে নারাজ পুলিশ প্রশাসন। পুলিশেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, নিষিদ্ধ শব্দবাজির একাংশ পাশের ঝাড়খণ্ড থেকে লুকিয়ে চুরিয়ে পুরুলিয়া জেলায় ঢোকে। তাই ঝাড়খণ্ড সীমানায় থাকা থানাগুলিকে বিশেষ ভাবে সর্তক করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy