বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এ বছরও পৌষমেলা না করলেও জেলা প্রশাসন, বোলপুর পুরসভা, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ ও ব্যবসায়ী সমিতি সকলের সহযোগিতায় গত বারের মতো এ বারও শুক্রবার থেকে বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে শুরু হয়েছে বিকল্প পৌষমেলা। কোভিড কমে আসার জন্য মেলায় ভিড় জমলেও ফের যে ভাবে বিদেশে কোভিডের বাড়বাড়ন্তের খবর মিলছে তাতে কিছুটা উদ্বেগও রয়েছে অনেকের মনে।
প্রথম দিনে বিকল্প পৌষমেলায় সেভাবে ভিড় চোখে না পড়লেও দ্বিতীয় দিনে দূর দূরান্ত থেকে পর্যটকেরা মেলায় ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। আগে এই দিনটিতে বাজি পোড়াতো বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, কিন্তু মাঝে পরিবেশ আদালতের নির্দেশে বাজি পোড়ানো বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘদিন পর বিকল্প পৌষমেলার তরফে শনিবার সেই বাজি পোড়ানো আয়োজন করা হয়। দ্বিতীয় দিন তাই ছিল জমজমাট। কোভিডের চিন্তার মধ্যেই বহু মানুষকে এ দিন মাস্ক ছাড়াই খোলা মুখে মেলা চত্বরে ঘুরতে দেখা যায়। বাজি পোড়ানো নিয়ে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘বিকল্প পৌষমেলায় শব্দ বিধি মানা হয়নি এবং বাজি পোড়ানো হয়েছে বলে শুনেছি। তাতে পরিবেশ আদালতের আদেশ কতটা লঙ্ঘিত হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে বাজি ফাটানোর ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট ও পরিবেশ আদালতের বিধি-নিষেধ রয়েছে।’’
বিশ্বভারতী এ বার পৌষমেলা না করলেও পৌষ উৎসব পালন করেছে। পাশাপাশি শনিবার ৮ পৌষ বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। সেই মতো এ দিন পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে আম্রকুঞ্জে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সাম্মানিক দেওয়া হয়। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এ বার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই অধ্যাপিকা বিপাশা রাহা। তিনি ছাড়াও ছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, শিক্ষাসত্র ও পাঠভবনের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়ারা।
এ দিনের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে পাস করে যাওয়া প্রায় ৪০০ জন পড়ুয়ার হাতে সপ্তপর্ণী তুলে দেওয়া হয়। তাদের হাতে সপ্তপর্ণী তুলে দেন উপাচার্য। তবে অনুষ্ঠানে পড়ুয়াদের অমনোযোগ কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করতে দেখা যায় উপাচার্যকে। উপাচার্য বলেন, “দুঃখের কথা আমরা তোমাদের সেই শিক্ষা দিতে পারিনি। আমাদের যখন এই অনুষ্ঠান চলছে ছাত্রছাত্রীরা কেউ ছবি তুলতে ব্যস্ত, তো কেউ আলাপ-আলোচনা করতে ব্যস্ত। আমারা সেই নিয়মানুবর্তিতা শেখাতে পারিনি।’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘এখন শিক্ষকদের অশ্রদ্ধা করাটা একটা বৈশিষ্ট্য হয়ে গিয়েছে। এটা উপাচার্য হওয়ার সুবাদে আমি বহুবার লক্ষ্য করেছি। আমাদের ছেলেমেয়েরা যখন অভদ্রতা করে, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে, যারা এই পাঠভবন শিক্ষাসত্রের, তখন খুব দুঃখ হয়।’’ বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এ বছরও মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মারক বক্তৃতা আয়োজিত হয় বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে। সন্ধ্যায় ছাতিমতলায় আলোকসজ্জা করা হয়। একই সঙ্গে এ দিন ভানুসিংহের পদাবলী নৃত্যনাট্য অনুষ্ঠিত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy