ট্রেন বন্ধের জের। শুনশান রামপুরহাট স্টেশন চত্বর। —নিজস্ব চিত্র।
ভোগান্তির আশঙ্কা ছিল। হলও তাই। ২০ দিন ট্রেন বন্ধের প্রথম দিনই কেউ কেউ ট্রেন ধরতেই গলদঘর্ম হলেন। কেউ কেউ ট্রেনে উঠেও ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারলেন না। পাশাপাশি, পর্যটকের সংখ্যা কমল তারাপীঠ, শান্তিনিকেতনেও।
আজ থেকে রামপুরহাট, সাদিনপুর, চাতরা স্টেশনে তৃতীয় লাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। এর জন্য ১০ জোড়া মেল, এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ১৮ জোড়া আপ ও ১৪ জোড়া ডাউন মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনকে ব্যান্ডেল-কাটোয়া-আজিমগঞ্জ রুটে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। বেশ কিছু মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রামপুরহাট থেকে হাওড়া যাওয়ার জন্য বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারের উপরে রামপুরহাট, তারাপীঠ, মল্লারপুর, সাঁইথিয়া, আমোদপুর, নলহাটি, মুরারই, চাতরা রাজগ্রাম-সহ লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের নগরনবি, পাকুড়, কোটালপুকুর, বারহারোয়া এলাকার বাসিন্দারা নির্ভরশীল। করোনার পরে ভাড়া বাড়িয়ে এটিকে স্পেশাল ট্রেন হিসেবে চালালেও এখনও অনেকে এই ট্রেনের উপরে নির্ভরশীল। আজ থেকে এই ট্রেনটি বাতিল হয়েছে। বাতিল হয়েছে ময়ূরাক্ষী এক্সপ্রেস, হাওড়া-মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস এবং বর্ধমানের লোকালগুলি। ফলে, এই অঞ্চলের বাসিন্দারা আজ থেকেই ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।
ভোগান্তি কমাতে তারাপীঠ রোড স্টেশন থেকে বর্ধমান স্টেশন পর্যন্ত ছ’জোড়া ট্রেন চালানোর কথা বৃহস্পতিবার রাতে জানিয়েছিল রেল। তারাপীঠ রোড স্টেশনে সেই ট্রেন ধরতে গিয়ে নিত্যযাত্রীদের গলদঘর্ম হতে হয়। যাত্রীদের একাংশ জানান, রামপুরহাট স্টেশনে মোটরবাইক রাখার স্ট্যান্ড রয়েছে। তারাপীঠ রোড স্টেশনে তা নেই। তাই বাস, অটো, টোটোয় রামপুরহাটের যাত্রীদের তারাপীঠ রোড স্টেশনে পৌঁছতে হয়। সেখানেও ঠিক সময়ে ট্রেন মেলেনি বলে অভিযোগ।
শ্রীনিকেতনে পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের কর্মী অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রামপুরহাট থেকে কোনওক্রমে বাসে তারাপীঠ রোড স্টেশনে আসি। এসে দেখি ২০ মিনিট দেরিতে ট্রেন ঢুকল। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের পরিবর্তে ১০টা ২০ মিনিটে ট্রেন ছাড়ে। পথে আরও দেরি করে।’’ রামপুরহাটের বাসিন্দা শৌভিক দত্ত সাঁইথিয়া হাসপাতালের কর্মী। আর এক বাসিন্দা পরেশ রায় সাঁইথিয়া হাই স্কুলের শিক্ষক। এই ট্রেন-পথের তাঁরা নিত্যযাত্রী। এই ক’দিন তাঁরা রামপুরহাট থেকে সাঁইথিয়া মোটরবাইকে যাতায়াতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, তিনপাহাড় থেকে একটি লোকাল ট্রেন-সহ পদাতিক, সরাইঘাট, বনাঞ্চল, হাওড়া-জামালপুর সুপারের মতো এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিকে রামপুরহাট স্টেশন পর্যন্ত রেল যখন চালাতে পারছে, তা হলে রামপুরহাট স্টেশন থেকে বর্ধমান পর্যন্ত একটি লোকাল ট্রেন রেল চালাতে পারত না!
হাওড়া, শিয়ালদহ, ঝাড়খণ্ড, উত্তরবঙ্গ থেকে অনেকে তারাপীঠে আসেন। ট্রেন বন্ধ থাকায় তারাপীঠে আজ ভিড় ছিল না বললেই চলে। তারাপীঠ মন্দির সেবায়েত সমিতির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পর্যটকদের অভাবে করোনা কালের মতো অবস্থা। পর্যটনশিল্প জোর ধাক্কা খাবে।’’ ট্রেন বন্ধের প্রভাব পড়েছে শান্তিনিকেতনেও। জনপ্রিয় সোনাঝুরি হাটে এ দিন পর্যটক অনেক কম এসেছেন বলে জানান হাট কমিটির সম্পাদক তন্ময় মিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy