Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

আজ বৈঠকে জেলা বিজেপি, দ্বন্দ্ব রুখতে বার্তা? জল্পনা

বৃহস্পতিবার শ্যামাপদ জানিয়েছেন, দুর্গাপুজো-কালীপুজোর পরে সকল সদস্যের সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং দলের সংগঠন মজবুত করা ও আগামী দিনের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে ওই বৈঠকে। শুধুই এই কারণেই কি বৈঠক?

শ্যামাপদ মণ্ডল, বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি। নিজস্ব চিত্র

শ্যামাপদ মণ্ডল, বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি। নিজস্ব চিত্র

শুভদীপ পাল
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০৪
Share: Save:

লোকসভা ভোটে ভাল ফল করলেও জয় আসেনি জেলার দুই আসনে। তবে, জেলার পাঁচটি বিধানসভা এবং পাঁচটি পুরসভায় তারা এগিয়ে লোকসভার ফলের নিরিখে। এত কিছুর পরেও জেলায় সংগঠনের হাল খুব ভাল নয়। সদস্য সংগ্রহ অভিযান কার্যত থমকে। মাথাচাড়া দিয়েছে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও। এই অবস্থায় আজ শুক্রবার, মহম্মদবাজারে দলের জেলার কার্যকর্তা, ব্লক মণ্ডল পরিচালন কমিটি সদস্য, মোর্চার সভাপতি এবং প্রাক্তন জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠকে বসছেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল।

বৃহস্পতিবার শ্যামাপদ জানিয়েছেন, দুর্গাপুজো-কালীপুজোর পরে সকল সদস্যের সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং দলের সংগঠন মজবুত করা ও আগামী দিনের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে ওই বৈঠকে। শুধুই এই কারণেই কি বৈঠক? বিজেপি-র জেলা স্তরের নেতাদের একাংশ দাবি করছেন না, তা নয়। তাঁরা প্রত্যেকেই ওই মিটিংয়ের জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু কী কারণে এই বৈঠক, তা নিয়ে তাঁরা প্রত্যেকেই ধোঁয়াশায় রয়েছেন। দলীয় সূত্রে খবর, গত কয়েক মাসে বিজেপির অন্দরের দ্বন্দ্ব কিছু ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে এসেছে। যার অন্যতম উদাহরণ, লোকসভা নির্বাচনের খরচ বাবদ টাকা ফেরতের দাবিতে দুধকুমার মণ্ডলের বাড়ি ঘেরাও, তাঁর সম্পর্কে রাজ্য নেতৃত্বেকে চিঠি পাঠানো।

এ ছাড়াও গত কয়েক মাসে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন সময় নানা পোস্ট, বর্তমান জেলা সভাপতিকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘কু-মন্তব্য’ বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বকে সামনে তুলে ধরেছে। সেই গোষ্ঠী কোন্দলে রাশ টানতেই এ দিনের বৈঠক বলে মনে করছেন জেলার বিজেপি নেতারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনই কয়েক জন নেতা জানিয়েছেন, শ্যামাপদ মণ্ডল গত চার মাস ধরে জেলা সভাপতি পদ সামলাচ্ছেন। কিন্তু এখন জেলা কমিটি গঠন করতে পারেননি। তা ছাড়া, বুথগুলিতেও নির্বাচন সম্পন্ন এখন হয়নি। মূলত কে কোন পদে পাবেন, বা আদৌ পাবেন কিনা, সেই নিয়েও বড় জটিলতা তৈরি হয়েছে দলের অন্দরে। এক জেলা নেতার দাবি, ‘‘ওই নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পরে পদ পাওয়া নিয়ে আবার দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসতে পারে। সেই আশঙ্কাতেই সভাপতি এখনও জেলা কমিটি গঠন করতে পারেননি।’’ জেলা নেতাদের একাংশের আরও অভিযোগ, শ্যামাপদ দলের বেশ কিছু নেতাকে আড়ালে রেখেই দল পরিচালনা করতে চাইছেন, কোনও কোনও ক্ষেত্রে তিনি চালাচ্ছেনও। যার ফল স্বরূপ দলের অন্দরে বিবাদের সৃষ্টি হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে সংগঠনের উপরে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়কে হাতিয়ার করে আন্দোলন তেমন দানা বাঁধছে না কেন, সে প্রশ্নও উঠছে দলের অন্দরে। ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচির অভাব তৃণমূলকে জেলায় নিজেদের গুটি সাজাতে সহায়তা করছে বলেও দাবি নিচুতলার কর্মীদের। লোকসভা ভোটের পরে তৃণমূল ছেড়ে অনেকে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি শিবিরে। তাঁদের একাংশ আবার ফিরেছেন পুরনো দলে। এই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

জেলার রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, লোকসভা ভোটের পরে বিজেপি-র সংগঠন শক্তিশালী হয়েছিল, কিন্তু গত কয়েক মাসে সেই বৃদ্ধির গ্রাফ এই জেলার ক্ষেত্রে ক্রমশ নিম্নমুখী। সেটা এনআরসি-র জুজুর কারণেই হোক, বা অন্য কোনও কারণে। কিন্তু সংগঠন যে কোথাও দুর্বল হয়েছে, তা ভালই বুঝছেন বর্তমান নেতৃত্ব। এর উপরে গোষ্ঠীকোন্দলও জেলা নেতৃত্বের ‘গলার কাঁটা’। এ সব কাটাতেই আজকের বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে।

যদিও এত তরফা ভাবে দল চালানো বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দাবি মানতে নারাজ জেলা বিজেপি সভাপতি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি-তে কোনও গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নেই। কে বা কারা এরকম বলছেন, কেনই বা বলছেন জানা নেই। আমাদের বৈঠকে কেবল পুজোর পরে সকলের সঙ্গে বসে আলোচনা এবং শুভেচ্ছা বিনিময় হবে। একই সঙ্গে দলের আগামী দিনের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Birbhum Inner Clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy