Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কম খরচে চাষের যন্ত্র ভাড়ায় দেবে সমিতি

কৃষি উপ-অধিকর্তা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরুলিয়া জেলায় এই নিয়ে এই ধরনের সাতটি কেন্দ্র চালু হল।’’ তিনি জানান, দেশের কয়েকটি রাজ্য কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ব্যাপক উন্নতি করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০৬:৫০
Share: Save:

জিতুঝুড়ি গ্রামের চাষি শ্যামাপদ কর্মকার গত বছর ভরা বর্যায় ট্রাক্টর খুঁজতে হন্যে হয়েছিলেন। সপ্তাহ খানেক চেষ্টার পরে বেশি ভাড়া গুনে জমিতে হাল দিতে পেরেছিলেন তিনি। তাও জমির মাটি মন মতো হয়নি। আবার মানবাজারের শ্যামপুর গ্রামের সঘন মাহাতো জমি থেকে ধান তুলেও মজুরের অভাবে ঝাড়াই করতে পারেননি। তাঁদের মতো চাষিদের আক্ষেপ এ বার ঘুচতে চলেছে।

চাষিদের এ ধরনের সমস্যা মেটাতে এ বার রাজ্যের কৃষি দফতর ভর্তুকি মূল্যে চাষের যন্ত্র ভাড়া দেওয়ার কেন্দ্র চালু করল। মঙ্গলবার মানবাজার থানার জিতুঝুড়ি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি এবং গোপালনগর গ্রামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে এমনই দু’টি কেন্দ্র চালু হল। মানবাজারের বিধায়ক তথা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু ওই কেন্দ্রগুলি চালু করেন।

কৃষি উপ-অধিকর্তা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরুলিয়া জেলায় এই নিয়ে এই ধরনের সাতটি কেন্দ্র চালু হল।’’ তিনি জানান, দেশের কয়েকটি রাজ্য কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ব্যাপক উন্নতি করেছে। অন্ধ্রপ্রদেশে মাত্র ৭০০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়। ওই জল বিজ্ঞান সম্মতভাবে ব্যবহার করে অন্ধ্রপ্রদেশ এখন কৃষিতে সফল। পুরুলিয়াতে সেখানে ১৪০০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু সেই জল সংরক্ষণের অভাবে এবং ঠিকঠাক ব্যবহার না হওয়ার কারণে জলের অভাবে ফসল মারা যায়। নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে আধুনিক মানের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে এই জেলাতেই সোনা ফলার সম্ভাবনা দেখছেন কৃষি বিশেষজ্ঞেরা।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পগুলি ২৫ লক্ষ টাকার। কৃষি দফতরের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা পাওয়া গেছে। বাকি ১৫ লক্ষ টাকা সমবায় সমিতি ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছে।’’

চাষের যন্ত্রপাতি কী হারে ভাড়া দেওয়া হবে, তার তালিকাও টাঙিয়ে দিয়েছে জিতুঝুড়ি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি। সমিতির সম্পাদক বিবেকানন্দ লায়েক বলেন, ‘‘ট্রাক্টর প্রতি ঘণ্টায় ৫০০ টাকা, সেচের পাম্প ঘণ্টায় ৮০ টাকা, ধান কাটার মেশিন বিঘায় ২০০ টাকা, ধান ঝাড়ার মেশিন প্রতি দিন ৪০ টাকা— এই হারে ভাড়া ধার্য হয়েছে। বাজারে এর দেড় গুণ হারে চাষিকে ভাড়া গুনতে হয়। আগে এলে আগে পাবেন, এই নিয়মে আবেদনকারীরা ক্রম অনুযায়ী যন্ত্র ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন।’’

দফতরের আধিকারিকেরা মন্ত্রীকে কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার সম্পর্কে বোঝান। মন্ত্রী বলেন, ‘‘তেমন সুযোগ থাকলে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর থেকেও চাষিদের কী ভাবে সাহায্য করা সম্ভব, এ নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন। অনুষ্ঠানে কৃষি দফতরের আধিকারিক কৌশিক ঘোষ, জেলা কৃষি তথ্য আধিকারিক সুশান্ত দত্ত, মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কবিতা মাহাতো, মানবাজারের ব্লক কৃষি আধিকারিক অর্ক রায়চৌধুরী, পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা এবং বহু চাষি উপস্থিত ছিলেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Samiti Tractor Farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE