আকুড়াবাদে বিজেপির কর্মী সম্মেলন। পরে বিষ্ণুপুরে ধস্তাধস্তি। নিজস্ব চিত্র
ভোটের সময়ে পুলিশ, বিডিওরা তৃণমূলের সুবিধা করে দিতে গেলে তাঁদের ‘ট্রিটমেন্ট’ দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এ ক্ষেত্রে দলও পাশে থাকবে বলে কর্মীদের আশ্বাস দেন তিনি। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের ভুয়ো উপভোক্তাদের তালিকা বানিয়ে জমা দেওয়ার নিদান দিয়েছেন তিনি। রাজ্য সভাপতির দাবি, সেই তালিকা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়া হবে।
সোমবার বাঁকুড়া ২ ব্লকের আকুড়াবাদে দলের পঞ্চায়েত কর্মী সম্মেলনে যোগ দিতে আসেন সুকান্ত। কর্মসূচি সেরে তিনি বিষ্ণুপুর ও কোতুলপুরে যান। আকুড়াবাদের সম্মেলন থেকে সুকান্ত বলেন, “নিচুতলার পুলিশেরা বেশির ভাগ ভাল। দু-চারটে আইসি আছেন, যারা ‘হাওয়াই চটি’ আইসি। আর জেলার এসপিগুলো, কেন্দ্রের মাইনে নিচ্ছে আর নিচুতলার পুলিশদের দিয়ে উল্টো-পাল্টা কাজ করাচ্ছে। আর বিডিওরা বেচারা ‘দিদি’র অফিসার হয়ে গিয়েছে।”
এর পরে এক ধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, “এঁরা ভোটের সময়ে যদি তৃণমূলের হয়ে দালালি করে, তা হলে আপনারা ভুলে যাবেন এরা বিডিও বা পুলিশ। দালালকে যে ভাবে ট্রিটমেন্ট করতে হয়, সে ভাবেই আপনারা ট্রিটমেন্ট করবেন। পার্টি আপনাদের সঙ্গে আছে।” ভদ্রতাকে দুর্বলতা মানা উচিত নয়, হুঁশিয়ারি তাঁর। সুকান্তের মন্তব্যকে উস্কানিমূলক দাবি করে তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রশাসনিক আধিকারিক ও পুলিশকর্মীরা মানুষকে পরিষেবা দেন। বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে তাঁদের ‘সফট টার্গেট’ হিসেবে বেছে নিচ্ছে। দলীয় কর্মীদের উস্কানি দিচ্ছেন। আসলে গত বিধানসভা ও পুর-নির্বাচনের পরে ওদের পায়ের তলার জমি সরে গিয়েছে। অবসাদ থেকে ওদের রাজ্য সভাপতি এমন মন্তব্য করছেন।”
ঘটনা হল, কিছু দিন আগে তৃণমূলের গঙ্গাজলঘাটি (১) সাংগঠনিক ব্লক সভাপতি হৃদয়মাধব দুবে সংশ্লিষ্ট বিডিওর বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে সুকান্তের দাবি, “আসলে বিডিও তো দালালি করছেন তৃণমূলের। তাতেও লাভ হল না। এর কারণ সম্মান যদি আপনি এক বার বিসর্জন দেন, আর পাওয়া যায় না। তাই মেরুদণ্ড সোজা রেখে নিয়ম পালন করুন।”
এর পাশাপাশি, আবাস যোজনায় দুর্নীতি নিয়ে কেন্দ্রের কাছে নালিশ জানানোর নিদান দিয়েছেন সুকান্ত। জেলার তৃণমূল পরিচালিত এক পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষের স্বামী স্কুলশিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও তাঁর নাম উপভোক্তা তালিকায় রয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর। তিনি বলেন, “তৃণমূল যতই বলুক কেন্দ্রের পাঠানো টাকার ঘর খাব, আমরা খেতে দেব না। চার চাকা বা পাকা বাড়ির মালিক তৃণমূলের যে নেতারা আবাস যোজনায় ঘর পেয়েছেন, তাঁদের সবার নামের তালিকা গড়ে আমাদের জেলা সভাপতি, সাংসদ-বিধায়কদের কাছে এক কপি করে জমা দিন। সেই কাগজ জেলা সভাপতি, বিধায়কেরা আমাদের কাছে পৌঁছে দেবেন। সেই লিস্ট নিয়ে গিয়ে কেন্দ্রের মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের কাছে দেব।” এ নিয়ে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
বাঁকুড়ার কর্মসূচি সেরে বিষ্ণুপুরে যান সুকান্ত। এ দিন বিষ্ণুপুর ব্লক দফতরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দুর্নীতির প্রতিবাদে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। ব্লক অফিসের সামনে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের। পরে সেখানে পৌঁছন সুকান্ত। সেখান থেকে কোতুলপুরে গিয়ে এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সেরে দলের একটি অঞ্চল সম্মেলনে যোগ দেন। পরে তিনি জয়রামবাটীতে মাতৃমন্দিরে যান। বিজেপির কর্মসূচি নিয়ে অলকের যদিও দাবি, “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় যোগ্য উপভোক্তা বাছাইয়ে প্রশাসনের কড়া নজর রয়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থে এ সব নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে বিজেপি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy