ধৃতের নাম চন্দ্রশেখর সিংহ ওরফে সাগর। নিজস্ব চিত্র।
বাঁকুড়ায় প্রকাশ্যে গলা কেটে খুন করা হয়েছে এক যুবককে। সেই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করল বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। ধৃতের নাম চন্দ্রশেখর সিংহ ওরফে সাগর। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুনের ঘটনার পর রাতেই সাগরকে বাঁকুড়া শহর লাগোয়া শ্যামদাসপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার তাঁকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, ত্রিকোণ প্রেম নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরে শেখ আমন নামে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, “বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে অভিযুক্ত চন্দ্রশেখর সিংহ ওরফে সাগরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমাদের অনুমান, সাগর ও আমনের দুই বন্ধুর ত্রিকোণ প্রেম সংক্রান্ত বিবাদ ছিল। তার জেরে এই খুন হতে পারে। ঘটনার তদন্ত চলছে।”
বাঁকুড়ার অভিজাত প্রতাপবাগান এলাকার জুনবেদিয়া কলেজ রোডের রাস্তায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে খুন করা হয় আমনকে। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর প্যান্টের পকেট থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইলের কল লিস্ট দেখে অন্তত ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ ছাড়াও প্রত্যক্ষদর্শী এবং আমনের বন্ধুদের বয়ান থেকে ত্রিকোণ প্রেম নিয়ে বিবাদের বিষয়টি জানা যায়। সেই সূত্রেই উঠে আসে সাগরের নাম। জেরায় ধৃত খুনের কথা স্বীকারও করেছেন বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বাঁকুড়ার মাচানতলার বাসিন্দা আমন এবং শ্যামদাসপুরের বাসিন্দা সাগর পূর্বপরিচিত। সম্প্রতি স্থানীয় এক তরুণীর সঙ্গে ত্রিকোণ প্রেমে জড়িয়ে পড়েন সাগর এবং আমন দু’জনেরই ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু। ওই দুই বন্ধুর মধ্যে বিবাদ শুরু হলে সাগরের বিরোধী গোষ্ঠীর পক্ষে দাঁড়ান আমন। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়া শহরের চাঁদমারিডাঙা এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতিও হয়। সেই হাতাহাতির সময় আমন সাগরকে মারধর করেন। হাতাহাতির পর তখনকার মতো বিষয়টি মিটে গেলে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে কৃষক বাজারে চা খেতে যান আমন। অভিযোগ, ওই সময় সাগর ফোন করে আমনকে আবার প্রতাপবাগান এলাকায় ডেকে পাঠান। আমন সেখানে যানও। কিন্তু সাগর প্রতিশোধ নিতে চাইছেন বুঝতে পেরেই পালানোর চেষ্টা করেন আমন। সেই সময়েই তাঁর উপর হামলা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ক্ষুর দিয়ে আমনের গলা কেটে দেওয়ার পরেই বাইক নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালান সাগর। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে আবার ফিরে আসেন তিনি। আমন সত্যিই মারা গিয়েছে্ন কি না, তা দেখতে তাঁকে দু’বার লাথিও মারেন। তার পর আবার বাইক নিয়ে চম্পট দেন।
আমনের পরিবার সাগরের ফাঁসির দাবি জানিয়েছে। অন্য দিকে, সাগরের আইনজীবী অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। আমার মক্কেল আমাকে জানিয়েছে, সে নির্দোষ। তদন্ত এখন একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আদালতে জামিনের আবেদন জানানো হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy