দুলালচন্দ্র দে
প্রতিদিন সকাল-বিকাল মাঠে গিয়ে শরীরচর্চা করতেন। ‘লকডাউন’ ঘোষণার পরে, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দুলালচন্দ্র দে (৬২) অভ্যাস জারি রাখতে বাড়ির ছাদে ব্যাডমিন্টন খেলা শুরু করেছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ স্ত্রীর সঙ্গে ব্যাডমিন্টন খেলার সময় ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হল তাঁর। এ ব্যাপারে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ময়না-তদন্তের জন্য দেহ রাখা হয়েছে বিষ্ণুপুর হাসপাতালের মর্গে। ঘটনায় শোকস্তব্ধ বিষ্ণুপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের শালবাগান।
অবসর গ্রহণের পরে, দুলালবাবু ওন্দার কাঁটাবাড়ি স্কুলে অতিথি শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। স্ত্রী কাঞ্চন মণ্ডল বিষ্ণুপুর পুরসভার একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। শুক্রবার দুলালবাবুর ছোট ছেলে শৌনক মণ্ডল জানান, তাঁর বাবা খেলাধুলো ছেড়ে থাকতে পারতেন না। তাঁর কথায়, ‘‘করোনা-আতঙ্কে আমরা কেউই বাইরে যেতাম না। প্রতিদিন বাড়ির ছাদে বাবা ব্যাডমিন্টন খেলতেন। কখনও আমার সঙ্গে, আবার কখনও মায়ের সঙ্গে। দুর্ঘটনার সময়ে আমি নীচের ঘরে ছিলাম।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আচমকা একটা শব্দ হতেই আমি ছাদে যাই। দেখি মা কাঁদতে কাঁদতে নীচে নামছেন। নীচে গিয়ে দেখি বাবা পড়ে রয়েছেন। বুকে, হাতে ও মাথায় চোট লেগেছে।’’
চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। দুলালবাবুকে দ্রুত বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে দুর্গাপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে অবস্থার অবনতি হয় দুলালবাবুর। তখন ফের তাঁকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। শৌনক বলেন ‘‘চিকিৎসকদের কাছে শুনলাম, পাঁজরের হাড় ভেঙে ফুসফুসে ঢুকে যাওয়ায় বাবার মৃত্যু হয়েছে। ‘লকডাউন’ না থাকলে দুর্ঘটনা ঘটত না।’’ দুলালবাবুর বড় ছেলে সস্ত্রীক পুণেতে থাকেন। তাঁদের খবর পাঠানো হয়েছে। যদিও ‘লকডাউন’ চলায় তাঁদের বাড়ি ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেশীরা ভিড় করেছেন দুলালবাবুর বাড়িতে। কাঞ্চনদেবী নিজেকে ঘরবন্দি করে রেখেছেন। প্রতিবেশী মানস প্রতিহার জানান, দুলালবাবু বরাবরই খেলাধুলো এবং শরীরচর্চা করতেন। প্রতিদিন সকালে উঠে মাঠে যেতেন। তবে ‘লকডাউন’ ঘোষণার পরে মাঠের বদলে খেলার জন্য বেছে নিয়েছিলেন ছাদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy