Advertisement
২১ জানুয়ারি ২০২৫
ভিড় করে বসে পরীক্ষায় প্রশ্ন
Exam

কোথাও কলেজের অদূরে, কোথাও কলেজেই

কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে যুক্তি, এমন কিছু পরীক্ষার্থী রয়েছেন, যাঁদের প্রত্যন্ত এলাকায় বাড়ি। সেখানে নেটওয়ার্ক কাজ করে না। অনেকের স্মার্টফোনও নেই। তাঁদের কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত।

বিতর্কে:পরীক্ষার পর খাতা জমার তোড়জোড় বোলপুরে।

বিতর্কে:পরীক্ষার পর খাতা জমার তোড়জোড় বোলপুরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২০ ০১:০৩
Share: Save:

অনলাইনে পরীক্ষার পরিবর্তে কলেজে বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠল জেলার দুই কলেজের বিরুদ্ধে। বোলপুর কলেজে অন্তত শ’খানেক পড়ুয়া পরীক্ষা দিয়েছেন বলে অভিযোগ। তুলনায় কিছু কম ছিল বোলপুরেরই পূর্ণিদেবী মহিলা কলেজের পরীক্ষার্থী। দুটি ক্ষেত্রেই অনেকের ছিল না মাস্কটুকুও। আবার লাভপুর শম্ভুনাথ কলেজের পাশেই মাদ্রাসায় ব্যবস্থা হয়েছিল বলে কিছু শিক্ষকেরই অভিযোগ। কলেজের অধ্যক্ষ নিশীথনাথ চক্রবর্তী অবশ্য এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে যুক্তি, এমন কিছু পরীক্ষার্থী রয়েছেন, যাঁদের প্রত্যন্ত এলাকায় বাড়ি। সেখানে নেটওয়ার্ক কাজ করে না। অনেকের স্মার্টফোনও নেই। তাঁদের কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত। পূর্ণিদেবী মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুনীলবরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা প্রথমে পড়ুয়াদের বলেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ মেনেই পরীক্ষা দিতে হবে। কিন্তু, বেশ কিছু পড়ুয়া অনলাইনে পরীক্ষা দিতে পারবে না বলে আবেদন করে। এর পরেই সবার সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিই।’’ বোলপুর কলেজের অধ্যক্ষ নুরসাদ আলি এই ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। স্কুল, কলেজে পড়ুয়াদের হাজিরাতেও নিষেধ রয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এই পরিস্থিতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ কী ভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজে ডেকে পরীক্ষা নিলেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এ বার ইউজিসি এবং রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই মতো এ দিন অনলাইনে প্রশ্নপত্রের প্রথম পাতা এবং উত্তরপত্রের প্রথম পাতা ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হয়। পড়ুয়ার সেই প্রশ্ন ডাউনলোড করে বাড়িতে বসে তাতে উত্তর লিখে সেই উত্তরের কপি ইমেল মারফত বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায়। যাঁরা অনলাইনে সেই কাজ করতে পারবেন না, তাঁদের কলেজে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা ছিল।

জেলায় যে হারে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে, তাতে এ ভাবে পরীক্ষা নেওয়া উচিত হয়নি বলে মনে করছেন অনেকেই। কলেজের বেশ কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকারাও এই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

বিতর্ক পিছু ছাড়েনি লাভপুর শম্ভুনাথ কলেজেও। কলেজ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য কলেজের মতোই এ দিন শম্ভুনাথ কলেজে বিভিন্ন বিষয়ে অর্নাস তৃতীয়বর্ষ এবং ষষ্ঠ সিমেস্টারের পরীক্ষা ছিল। প্রায় ১০০ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। কলেজেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে স্থানীয় মাদ্রাসায় পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয় বলে কিছু কলেজ শিক্ষকেরই দাবি। এ দিন মাদ্রাসা গেটের সামনেও ছাত্রছাত্রীদের জটলা দেখা যায়। কয়েক জন জানান, কলেজে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, সেটা বাতিল করে মাদ্রাসায় পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কলেজ কর্তৃপক্ষ বা মাদ্রাসা, কেউই সেই দাবি মানতে চাননি। মাদ্রাসা পরিচালন সমিতির সভাপতি শেখ সালাম বলেন, ‘‘মাদ্রাসায় পরীক্ষা হচ্ছে না। তাই গেটের সামনে কলেজ পড়ুয়াদের জটলার কারণ বলতে পারব না।’’ কলেজের অধ্যক্ষ নিশীথনাথ চক্রবর্তীও দাবি করেছেন, ‘‘কলেজে পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা ভিত্তিহীন। কলেজের পক্ষ থেকে অন্য কোথাও পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়নি। হাতে হাতে উত্তরপত্র জমা দেওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীরা হয়তো পছন্দ মতো জায়গা বেছে নিয়েছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Exan Bolpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy