Advertisement
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

পরীক্ষা বাড়ছে পুরুলিয়ায়

‘আরটিপিসিআর’ যন্ত্রে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরে ল্যাবরেটরি পরিদর্শন করেন জেলাশাসক, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।

পুরুলিয়া মেডিক্যালে  আরটিপিসিআর যন্ত্র পরিদর্শনে কর্তারা। নিজস্ব চিত্র

পুরুলিয়া মেডিক্যালে  আরটিপিসিআর যন্ত্র পরিদর্শনে কর্তারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২০ ০৮:১৩
Share: Save:

প্রতিদিনই পুরুলিয়া জেলায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা-সংক্রমণ। জেলার তিনটি পুরসভার পাশাপাশি, সমস্ত ব্লকই বর্তমানে সংক্রমণের আওতায়। জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা তিনশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে সংক্রমণের নিরিখে ৫৭ জন আক্রান্তকে নিয়ে এ মুহূর্তে শীর্ষে রয়েছে পুরুলিয়া পুরসভা। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসনিক আধিকারিক থেকে তাঁদের দেহরক্ষী, পুলিশ, ইএফআর জওয়ান—সংক্রমিতের তালিকায় অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে নমুনা পরীক্ষা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।

দেশব্যাপী টানা ‘লকডাউন’-এর সময় ভিন্ রাজ্য থেকে ঘরে ফেরা এ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য পুরুলিয়াকে অন্যতম প্রধান ‘করিডর’ করা হয়েছিল। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, লক্ষাধিক পরিযায়ী শ্রমিক পুরুলিয়া ছুঁয়ে রাজ্যে ফিরলেও পুরুলিয়ায় প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে মে মাসের শেষ সপ্তাহে। ‘লকডাউন’ ঘোষণার পর থেকে টানা দু’মাস ‘গ্রিন জ়োন’ ছিল পুরুলিয়া জেলা। প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পরে একশো ছুঁতে সময় লেগেছিল এক মাসেরও বেশি। একশো থেকে দুশোতে পৌঁছতে সময় লেগেছিল ২৩ দিন। আর দুশো থেকে তিনশো ছুঁতে সময় লেগেছে আট দিন।

এই অবস্থায় নমুনা পরীক্ষা বাড়ানোকেই ‘পাখির চোখ’ বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা পরীক্ষা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বর্তমানে দৈনিক আটশো জনের পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই সংখ্যা আমরা দ্রুত দৈনিক এক হাজারে নিয়ে যাব।’’

নমুনা পরীক্ষার জন্য পুরুলিয়া এত দিন নির্ভরশীল ছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের উপরে। গত জুলাইয়ে ‘ট্রু-ন্যাট’ যন্ত্রে জেলায় প্রথম করোনা পরীক্ষার কাজ শুরু হয়। আইসিএমআর-এর নির্দেশিকা মোতাবেক এই যন্ত্রে কেবলমাত্র মাত্র নেগেটিভ রিপোর্টই গ্রহণযোগ্য। গত ৩০ জুলাই থেকে জেলায় ‘আরটিপিসিআর’ যন্ত্রে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রথম দু’দিন ট্রায়াল রান ছিল। ট্রায়াল পিরিয়ডে পরীক্ষা রিপোর্ট আইসিএমআর-এর কাছে পাঠাতে হয়। আইসিএমআর-এর অনুমোদনের পরেই পুরোদমে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা প্রতি দিন প্রায় পাঁচশো জনের পরীক্ষা করতে পারছি। এই যন্ত্রে বর্তমানে ২৪ ঘণ্টা পরীক্ষার কাজ চলছে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘পুরুলিয়াতে সংক্রমণ খানিকটা দেরিতে ছড়াতে শুরু করেছে। অতিমারির সংক্রমণের যা হার, পুরুলিয়াতেও তার ব্যতিক্রম হবে না। এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষাই এক মাত্র সংক্রমণ ঠেকানোর উপায়। পরীক্ষার মাধ্যমে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়ার পরে তাঁকে আলাদা করা, সেই সঙ্গে কিছু নিয়ম মেনে চলা দরকার।’’

‘আরটিপিসিআর’ যন্ত্রে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরে ল্যাবরেটরি পরিদর্শন করেন জেলাশাসক, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘ট্রু-ন্যাটের পাশাপাশি, এখন জেলাতেই আরটিপিসিআর যন্ত্রে করোনা-পরীক্ষা হচ্ছে। এ ছাড়া, দ্রুত রিপোর্ট পেতে আমরা র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিটও ব্যবহার করছি। দু’হাজার কিট পেয়েছিলাম। তা শেষ হওয়ার পরে আরও আড়াই হাজার কিট জেলায় আসছে। ব্লকগুলিকেও পরীক্ষা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy