প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল পরিচালিত রঘুনাথপুর ১ ব্লকের বেড়ো পঞ্চায়েতের প্রধান মনিকা মণ্ডলের বিরুদ্ধে ব্লক প্রশাসনের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন উপপ্রধান-সহ সাত সদস্য। তাঁদের অভিযোগ, প্রধান পঞ্চায়েত কার্যালয়ে নিয়মিত আসেন না। উন্নয়নের কাজেও তিনি ব্যর্থ। প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়েছে। বিডিও (রঘুনাথপুর ১) রবিশঙ্কর গুপ্ত বলেন, ‘‘বেড়ো পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এসেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।”
এর আগে দলেরই সদস্যদের আনা অনাস্থায় পদ ছাড়তে হয়েছিল পঞ্চায়েত প্রধান, তৃণমূলের পূর্ণিমা কৈবর্ত্যকে। ছ’মাস আগে প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন মনিকা। বেড়ো পঞ্চায়েতে মাঝেমধ্যেই তৃণমূলের অন্দরে ‘গোষ্ঠী কোন্দল’ মাথাচাড়া দেয়। পূর্ণিমা প্রধান থাকাকালীন তৃণমূলেরই কিছু কর্মী পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। কলকাতা হাই কোর্ট পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয়। তার পরেই, পূর্ণিমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সহ নানা অভিযোগ তুলে অনাস্থা আনেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশ। অপসারিত হতে হয় পূর্ণিমাকে। নতুন প্রধান হন মনিকা।
মনিকার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে উপপ্রধান রবিলাল মান্ডি ও পঞ্চায়েত সদস্য রামানুজ আচারিয়ার অভিযোগ, ‘‘প্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার পরে উন্নয়নের কাজে অনীহা দেখা দিয়েছে প্রধানের। উনি পঞ্চায়েতের অন্য সদস্যদের বাদ দিয়ে নিজের মর্জিমাফিক পঞ্চায়েত পরিচালনা করছেন।” তাঁদের দাবি, ‘‘পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ৬০-৭০ লক্ষ টাকা পঞ্চায়েতের তহবিলে পড়ে আছে। উন্নয়নের নানা কাজের প্রস্তাব প্রধানকে দেওয়া হয়েছিল। তিনি কোনও প্রস্তাবেই সম্মত হচ্ছেন না।” রামানুজ বলেন, ‘‘কয়েকমাস পরেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই সময়ে উন্নয়নের কাজকর্ম না হলে ভোটে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য। প্রধান কাজ করতেই চাইছেন না। বাধ্য হয়েই ওঁর অপসারণ চেয়েছি।”
মনিকার পাল্টা দাবি, ‘দুর্নীতিকে’ প্রশ্রয় না দেওয়ায় তাঁকে সরাতে অনাস্থা অনেছেন কয়েক জন সদস্য। প্রধানের অভিযোগ, ‘‘আগের প্রধানের জমানায় ওই সদস্যেরাই লুটেপুটে খেয়েছেন। তার দায় পড়ে প্রধানের ঘাড়ে। এ বারও একই কাজ করতে চেয়েছিলেন ওঁরা। আপত্তি তোলায় আমাকে অপসারিত করতে চাইছেন।” তাঁর দাবি, ‘‘অনাস্থা প্রস্তাব আনার মূল যড়যন্ত্রী উপপ্রধান রবিলাল।’’ এ নিয়ে উপপ্রধানের বক্তব্য, ‘‘কাজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় আগের প্রধানকে সরিয়েছিলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য। সকলে ভেবেছিলেন দায়িত্ব পেয়ে মনিকা সুষ্ঠু ভাবে কাজ করবেন। কিন্তু উনি কোনও কাজই করতে পারেন না। সে কারণেই সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য অনাস্থার পক্ষে সায় দিয়েছেন।”
ঘটনাপ্রবাহে বিরক্ত তৃণমূল নেতৃত্ব। অনেকেই মনে করছেন দলের ব্লক স্তরে ‘দ্বন্দ্বের’ প্রভাবে বেড়ো পঞ্চায়েতে বারবার অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি ব্লক সভাপতি মিহির বাউড়িকে দায়ী করেছেন ব্লকের আর এক নেতা প্রদীপ মাজি। তিনি বলেন, ‘‘আমি যখন ব্লক সভাপতি ছিলাম, তখন পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনার জন্যই দল আমাকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। বর্তমান ব্লক সভাপতির জমানায় বারবার অনাস্থা আসছে ওই পঞ্চায়েতে। কেন ওঁকে পদ থেকে সরানো হবে না?” এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি মিহিরকে। তাঁর মোবাইলে পাঠানো মেসেজেরও উত্তর আসেনি। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘বেড়ো পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে আসা অনাস্থাকে দল সমর্থন করছে না। দু’পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটাতে বলা হয়েছে ব্লক সভাপতিকে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy