ফাইল চিত্র
সরকারি পলিটেকনিক কলেজের ছাত্রী নিবাসে তাণ্ডব চালানোর ঘটনা সামনে এসেছে বুধবার সকালে। শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ৩৬ ঘণ্টা কেটে গেলেও ওই ঘটনার নেপথ্য কে বা কারা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। তবে পর্যন্ত প্রকৃত দোষী চিহ্নিত না করতে পারলেও ঘটনার পিছনে যে পরিযায়ী শ্রমিকেরাই আছেন সেটা এক প্রকার নিশ্চিত ধরেই এগোচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসন। ওই কেন্দ্রে এখন আছেন ৫৮ জন পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে বেশ কিছুজনের নিভৃতবাস পর্ব কাটিয়ে ফেললেও তদন্তের জেরে বুধবার থেকে কাউকেই ছাড়া হয়নি।
১৯ মার্চ আচমকা কলেজ ছুটি হয়ে যাওয়ার পর তিলপাড়ার রামকৃষ্ণ শিল্পবিদ্যাপীঠ নামে ওই সরকারি কলেজেটির ছাত্র ছাত্রীরা হস্টেলগুলি থেকে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। ২৩ মার্চ লকডাউন শুরু হতেই জেলা প্রশাসন ওই কলেজটির ছাত্র ও ছাত্রী নিবাসের যে রুমগুলি খালি, সেগুলিকে প্রথমে ত্রাণ শিবির ও পরে সরকারি নিভৃতবাস কেন্দ্র হিসেবে নেয়। মঙ্গলবার রাতে ওখানকারই এক আবাসিক মারফত এক ছাত্রী জানতে পারেন তাঁদের প্রত্যেকের ঘরের তালা ভেঙে ঘর লণ্ডভণ্ড করার কথা।
বুধবার সকালে কয়েকজন ছাত্রী হস্টেলে গিয়ে দেখেন, ঘরের তালা ভাঙা। বইপত্র-সহ নানা জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ঘরময়। বেডিং বিছানা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। প্রত্যেকটি আলমারি ও ট্রাঙ্কের তালা ভাঙা। উধাও হয়ে গিয়েছে পোশাক, গুরুত্বপূ্র্ণ নথি, ড্রয়িং, প্রজেক্ট থেকে টাকা পয়সা। ঘটনায় চরম ব্যথিত ছাত্রীরা। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এমন কাণ্ড ঘটল। প্রশ্ন তোলা হয়, কলেজ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঘটনার নেপথ্যে কারা সেটা জানতে না পারায় হতাশা আরও বেড়েছে।
দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তি চেয়ে বৃহস্পতিবার আরও কয়েকজন ছাত্রী দেখা করেন মহকুমাশাসকের সঙ্গে। বিডিও (সিউড়ি ১) আজ শুক্রবার কলেজে তদন্তে যাবেন। অন্য দিকে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে লিখিত অভিযোগ হলেও প্রত্যেক ছাত্রীকে ঠিক কী কী খোয়া গিয়েছে সেটা নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে বলা হয়েছে সিউড়ি থানার পক্ষ থেকে। পুলিশ জানিয়েছে ঘটনার তদন্ত চলছে।
বীরভূমকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করা ভিন্ জেলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ওখানে রাখার জন্য ও পরে জেলার পরিযায়ী শ্রমিকেরা দফায় দফায় এ পর্যন্ত দুশোর বেশি শ্রমিক ওখানে ছিলেন। কিন্তু ঘটনাটি খুব বেশি আগের নয় বলেই মনে করছে পুলিশ বা প্রশাসন। বেশ সময় নিয়ে এমনটা করা হয়েছে বলেও প্রশাসনের কর্তারা নিশ্চিত। তাঁদের যুক্তি, ঘটনাটি খুব বেশি দিন হলে সেটা প্রশাসনের নজরে আসত। এ দিন পুলিশ গিয়ে এখন নিভৃতবাসে থাকা আবাসিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মহকুমাশাসক আগেই বলেছিলেন, যে বা যাঁরাই ওখানে থেকেছেন প্রত্যেকের পরিচয় নথিভুক্ত রয়েছে প্রশাসনের কাছে। দোষ করে পার পাওয়া যাবে না। সেই আশায় বুক বেঁধেছেন ছাত্রীরাও।
তবে ওই নিভৃতবাস কেন্দ্রের আবাসিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আগেও উঠেছে। মে মাসের প্রথম দিকে এঁটো পাতা চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা নিয়ে আবাসিকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন তিলপাড়ার বাসিন্দারা। এ বার এই ঘটনার পরে সেই ক্ষোভ আরও বেড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy