বিষ্ণুপুরের মহাপাত্রপুকুরে বৃহস্পতিবার ভোরে ছটপুজোয়। ছবি: শুভ্র মিত্র।
বুধবার বিকেলের পরে, বৃহস্পতিবার ভোর। ছটপুজো ঘিরে স্বাস্থ্যবিধি না-মানার ছবিটা বদলাল না। ছটপুজোর দ্বিতীয় অর্ঘ্য দিতে এ দিন ভোরে পুরুলিয়া শহর, আদ্রা, নিতুড়িয়া এলাকায় প্রচুর মানুষ ভিড় করেছিলেন বিভিন্ন জলাশয় ও নদীর পাড়ে। তবে হাতেগোনা কয়েক জন বাদে, মাস্কের দেখা মেলেনি কারও মুখে। যদিও বাজি-ডিজের চেনা দাপট ছিল না বলে দাবি।
পুরুলিয়ায় বড় আকারে ছট পালিত হয় পুরুলিয়া শহর, আদ্রা ও নিতুড়িয়ার পারবেলিয়া এলাকায়। ভোর হতেই ছটব্রতীদের ডালা সাজিয়ে পুরুলিয়া শহরের সাহেববাঁধ, বুচা বাঁধ, আদ্রার স্বর্গদুয়ার সরোবর, আমতালা ও নিতুড়িয়ার দামোদরের ঘাটগুলিতে দলে দলে ভিড় জমাতে দেখা যায়। তবে না ছিল দূরত্ববিধি মানার তাগিদ, না দেখা গিয়েছে মাস্ক পরার প্রবণতা। ছট পালনের যে সব ছবি সামাজিক-মাধ্য়মেও উঠে এসেছে, সেখানেও স্পষ্ট করোনা-বিধি না-মানার ছবিটা।
বিষয়টি কার্যত মেনে নিয়ে ‘পুরুলিয়া ছট পুজো সমিতি’র সম্পাদক শঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘সাহেববাঁধের ঘাটে যাওয়ার আগে, আমাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা ছটব্রতীদের মুখে মাস্ক আছে কি না, তা পরীক্ষা করেছেন। মাস্ক না থাকলে মাস্ক দিয়েছিল। কিন্তু অনেকে ঘাটে যাওয়ার পরে, মাস্ক খুলে রেখেছিল।”
তবে আগে ছটে যে ভাবে ডিজে বাজানো বা বাজি পোড়ানো হত, তেমনটা এ বারে হয়নি বলে দাবি। ছোট মাপের সাউন্ডবক্স নিয়ে শোভাযাত্রা করে পুকুরঘাটগুলিতে গিয়েছেন মানুষজন। তবে বুধবার সন্ধ্য়ার দিকে, আদ্রার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বাজি ফাটার আওয়াজ মিললেও তা বেশিক্ষণ চলেনি বলে দাবি। নিতুড়িয়াতেও বাজি ফাটেনি বলে দাবি করেছেন ছটপুজো কমিটির কর্মকর্তা তথা নিতুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শান্তিভূষণপ্রসাদ যাদবও। তাঁর কথায়, ‘‘মূলত কালীপুজোয় বাজি কিনে সেটাই ছটে ফাটায় কিছু লোকজন। কিন্তু এ বারে কালীপুজোয় বাজি নিষিদ্ধ থাকায় বাজির দাপট দেখা যায়নি।”
পাশাপাশি, এ দিন ছটের শেষে পুরকর্মীরা সাহেব বাঁধ-সহ শহরের অন্য পুকুরঘাটগুলি পরিষ্কার করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুরুলিয়ার পু্র-প্রশাসক নবেন্দু মাহালি। এ কাজে ছটপুজো সমিতির কর্মকর্তারাও পুরসভাকে সাহায্য করেছেন বলে জানান তিনি। আজ, শুক্রবার থেকে দামোদরের ঘাট পরিষ্কার করার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন নিতুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শান্তিভূষণপ্রসাদ যাদব। এ দিন ভোরে ঝালদার ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া সুবর্ণরেখার কয়েকটি ঘাট ঘুরে দেখেন পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোও।
ছটপুজো উপলক্ষে এ দিন ভোরে প্রায় ছ’হাজার মানুষ দুর্গাপুর ব্যারাজে ভিড় জমিয়েছিলেন বলে পুলিশের দাবি। দুর্ঘটনা এড়াতে জেলার ‘সিভিল ডিফেন্স’-এর দল হাজির ছিল। নদীর একাংশ বাঁশের ব্যারিকেড ও জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছিল। বিশেষ আলোর ব্যবস্থাও করা হয়। তবে ভোর থেকে ব্যারেজ লাগোয়া এলাকায় প্রচুর শব্দবাজি ফেটেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল বাঁকুড়ার সতীঘাটে, গন্ধেশ্বরীর ঘাটেও। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি কাউকেই। শব্দবাজির সঙ্গে প্রচুর আতশবাজিও পুড়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ভিড় ছিল বাঁকুড়ার লোকপুর ও কেঠারডাঙায় দ্বারকেশ্বরের ঘাটগুলিতেও।
উপচে পড়া ভিড় দেখা গিয়েছে বিষ্ণুপুরের মহাপাত্রপুকুর ও লালবাঁধেও। অভিযোগ, দূরত্ববিধি না মেনে, মাস্ক ছাড়া পুজো দিতে জড়ো হন মানুষজন। তারস্বরে বেজেছে সাউন্ডবক্সও। সঙ্গে শব্দবাজির দাপট চললেও পুলিশ-প্রশাসনের তরফে কোনও পদক্ষেপ হয়নি বলে স্থানীয় তরফে অভিযোগ উঠেছে। জেলা পুলিশের এক কর্তার যদিও দাবি, বাজি ফাটানোর কোনও অভিযোগ আসেনি। ভিড় নিয়ন্ত্রণেও পুলিশ সক্রিয় ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy