হতাশ: পুরুলিয়া হাসপাতালে রোজি পরভিন। নিজস্ব চিত্র
নিজের স্কুল, পরীক্ষাকেন্দ্র ও পরীক্ষা পরিচালন কমিটির সমন্বয়ের অভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারল না এক অন্তঃসত্ত্বা। শুক্রবার পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টা দুয়েক আগে রোজি পরভিন নামে ওই ছাত্রীর অসুস্থতার খবর জানানোর পরেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়নি।
হুড়া থানা এলাকার একটি মাদ্রাসার ছাত্রী সন্তানসম্ভবা রোজি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় বৃহস্পতিবার রাতে তাকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার পরীক্ষা কেন্দ্র হুড়া গার্লস হাইস্কুল। রোজির মামাশ্বশুর জয়নুল আনসারির কথায়, ‘‘রোজি হাসপাতাল থেকেই ইংরেজি পরীক্ষা দিতে চেয়েছিল। সে জন্য এ দিন সকাল পৌনে আটটা নাগাদ প্রথমে ওর স্কুলের প্রধান শিক্ষককে আমি ঘটনাটি জানাই। তিনি কী করবেন বুঝতে না পেরে ন’টা নাগাদ আমি নিজেই মাগুড়িয়ায় ওই প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে যাই। তিনি আমাকে হুড়া গার্লস হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠান। পরীক্ষা শুরুর কিছুটা আগে পরীক্ষাকেন্দ্রের সেন্টার ইনচার্জকে আমি ব্যাপারটা জানাই। তিনি বিভিন্ন জায়গায় ফোন করলেন। কিন্তু ততক্ষণে পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছিল। ইনচার্জ জানালেন, দেরি হয়ে গিয়েছে, আর পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।’’
যদিও কেনও ওই ছাত্রী পরীক্ষা দিতে পারলেন না, তা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আহমদুল্লা আনসারি দাবি করেন, ‘‘ওই ছাত্রীর অভিভাবক এমনিতে দেরি করেই এসেছিলেন। আমি তাঁকে সেন্টার ইনচার্জের কাছে পাঠিয়েছিলাম।’’ নিজে কেন উদ্যোগী হননি? এর সদুত্তর তাঁর কাছে পাওয়া যায়নি।
হুড়ার সেন্টার ইনচার্জ অদ্বৈত ঘোষ দাবি করেন, ‘‘ওই ছাত্রীর জন্য আমাদের পক্ষে কী করণীয় তা জানতে আমি কন্ট্রোলরুমের মোবাইলে ফোন করি। কিন্তু ফোনের ‘স্যুইচ অফ’ ছিল। অন্য একটি নম্বর থাকলেও তা কেউ ধরেনি। এরপরে জেলার পরীক্ষা পরিচালন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কের সঙ্গে যখন যোগাযোগ করি, ততক্ষণে পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক তাঁকে আগে ফোন করে সমস্যার কথা জানালে, সময় পাওয়া যেত।
জেলা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কংসেশ্বর মাহাতো বলেন, ‘‘ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের ইনচার্জ বা ওই ছাত্রীর স্কুলের প্রধান শিক্ষক যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন, তাহলে আমরা ছাত্রীটিকে হাসপাতালেই পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারতাম। এ জন্য হাসপাতালে পৃথক ঘর প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।’’ তিনি জানান, তাঁদের কাছে যখন ছাত্রীটির খবর আসে, তারপরে সব ব্যবস্থা করতে সাড়ে দশটা পেরিয়ে যেত। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা পরে আর পরীক্ষা নেওয়া যায় না বলে পর্ষদের নিয়ম রয়েছে। তাই এ দিন কোনও ব্যবস্থা তাঁরা করতে পারেননি।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে রোজি বলে, ‘‘পরীক্ষা দিতে না পেরে খুব খারাপ লাগছে। একটা বছর নষ্ট হয়ে গেল। অথচ বাড়ির লোক সব রকম ভাবে যোগাযোগ করেছিল।’’a
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy