সত্যবান পরামানিক। নিজস্ব চিত্র
ঝালদার কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি তপন কান্দু হত্যাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত বিচারাধীন বন্দি সত্যবান পরামানিক (৫১) রবিবার পুরুলিয়া সংশোধনাগারে অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন। সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের দাবি, মধুমেহতে অসুস্থ সত্যবান এ দিন সকালে শৌচাগার থেকে আসার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। জ্ঞান হারান। পুরুলিয়া মেডিক্যালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে জানানো হয়। তবে এই মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন সত্যবানের স্ত্রী বিমলা পরামানিক।
তপন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তে নেমে সিবিআই প্রথমে ধাবা মালিক সত্যবানকেই গ্রেফতার করেছিল। অভিযোগ, সত্যবানের ধাবাতেই তাঁর উপস্থিতিতে তপনকে খুনের পরিকল্পনা কষা হয়েছিল। যদিও সত্যবানের স্ত্রীর দাবি, তাঁর স্বামী নির্দোষ।
গত পুরভোটের পরে ২০২২ সালের ১৩ মার্চ সান্ধ্যভ্রমণে বেরিয়ে ঝালদা-বাঘমুণ্ডি রাস্তায় গোকুলনগরের অদূরে রাস্তার উপরে আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন তপন কান্দু। ঘটনার পরে জেলা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) তদন্তে নামে। সিট প্রথমেই গ্রেফতার করে তপন কান্দুর ভাইপো দীপক কান্দুকে। তিনি পুরভোটে তপনের বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন। এরপরে এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ঝাড়খণ্ডের বোকারোর গাইছাঁদ গ্রাম থেকে কলেবর সিংহকে গ্রেফতার করে সিট। তারপর দীপকের বাবা তথা তপনের দাদা নরেন কান্দু ও ঝালদারই কুটিডি গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আশিক খান গ্রেফতার হয়।
পরে হাই কোর্টের নির্দেশে ৪ এপ্রিল এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার গ্রহণের পরে সিবিআই সত্যবান পরামানিককে গ্রেফতার করে। এই হত্যাকাণ্ডে সিট ও সিবিআই এখনও পর্যন্ত মোট সাত জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার হওয়া বাকি দু’জন হল সুপারি কিলার অভিযোগে ধৃত জাবির আনসারি ও শশীভূষণ সিংহ। ধৃতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই।
সূত্রের খবর, আদালতে জমা করা চার্জশিটে সিবিআই দাবি করেছে, ঝালদার একটি ধাবায় বসে তপন খুনের ছক কষা হয়। বন্ধু নরেন কান্দু ও মহম্মদ আশিক খানের সঙ্গে যেখানে হাজির ছিলেন ধাবার মালিক সত্যবান নিজেও।
ঝালদায় সত্যবানের মৃত্যুর খবর পৌঁছনোর পরে গুঞ্জন শুরু হয়। হাটতলা এলাকায় সত্যবানের বাড়ির সামনে জটলা জমে। তাঁর বৃদ্ধ বাবা গোবর্ধন পরামানিক কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরে পুরুলিয়ায় যান স্ত্রী বিমলা পরামানিক। সেখানে তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে এই ঘটনার জন্য সরাসরি তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু ও জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বাঘমুণ্ডির প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাতোর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
বিমলার দাবি, ‘‘আমি আগেও বলেছি আমার স্বামী নির্দোষ। এই ঘটনায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি নিশ্চিত বিচারে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হতেন। এই মৃত্যুর জন্য পূর্ণিমা কান্দু ও নেপাল মাহাতোই দায়ী। আমিও এই মৃত্যুতে সিবিআই তদন্ত দাবি করছি।’’
ঝালদা পুরসভার কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি পূর্ণিমা বলেন, ‘‘মৃত্যু সবসময়ই দুঃখের। তবে আমি চেয়েছিলাম বিচারে দোষী প্রমাণিত হওয়ার পরে অভিযুক্তদের ফাঁসি হোক। এই অভিযুক্তকে সিবিআই গ্রেফতার করেছিল। মামলাটিও বর্তমানে বিচারাধীন। তাই এ নিয়ে আর মন্তব্য না করাই ভাল।’’
জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘পূর্ণিমা কান্দুর আবেদনের ভিত্তিতে হাই কোর্ট এই হত্যার তদন্তভার সিবিআইকে দেয়। তদন্ত আমি বা আমরা করছি না, সিবিআই করছে। গ্রেফতারও আমরা করিনি, সিবিআই করেছে। এই ধরনের হাস্যকর অভিযোগের জবাব হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy