এই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধেই শিশু বিক্রির অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।
শিশুবিক্রির অভিযোগ উঠল বোলপুরের এক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নার্সিংহোমের দুই কর্মী এবং সদ্যোজাতের মা-সহ মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই শিশুকন্যাকে নার্সিংহোমের দুই কর্মীর কাছে মা বিক্রি করেছিলেন বলে পুলিশের দাবি। ওই দুই কর্মী আরও বেশি টাকার বদলে সেই শিশুকে আর এক দম্পতিকে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ। যদিও শিশুবিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে তিন জনকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বোলপুর আদালত। বাকিরা ১৪ দিনের জেলে হেফাজতে রয়েছেন।
যে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেটি রয়েছে বোলপুরের সিয়ান এলাকায়। নার্সিংহোমের কাছেই বোলপুর মহকুমা হাসাপাতাল। প্রায় ২৮ বছর ধরে নার্সিংহোমটি সেখানে রয়েছে বলে স্থানীয়েরা জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁইথিয়া থানা এলাকার বড়সিজা গ্রামের এক মহিলা ১০-১২ দিন আগে ওই নার্সিংহোমে পঞ্চম সন্তান প্রসবের জন্য ভর্তি হন। তিনি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। পরের দিন নার্সিংহোমের তরফে সদ্যোজাতের সঙ্গে ওই মহিলাকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
অভিযোগ, মেয়ে হওয়ায় তাকে বাড়ি নিয়ে যেতে চাননি ওই মহিলা। হাসপাতালের দুই কর্মী জয়ন্ত মাঝি ওরফে হেমন্ত ও স্বরূপ দাঁ-এর কাছে কুড়ি হাজার টাকায় বিনিময়ে সদ্যোজাতকের মা বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, নার্সিংহোমের ওই দুই কর্মী দালাল মারফত সেই শিশুকে লাভপুরের কুরুন্নাহার এলাকার দম্পতি সুজিত ও মধুমিতা মণ্ডলকে মোটা টাকায় বিক্রি করেন। গোপন সূত্রে এমনই খবর এসে পৌঁছয় লাভপুর থানার পুলিশের কাছে। লাভপুরের ওসি পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনার তদন্তে নামে।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রথমেই তারা লাভপুরের ওই দম্পতির কাছ থেকে শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে সুজিত ও মধুমিতাকে গ্রেফতার করে। তাঁদের জেরা করে পুলিশ শিশুটি কী ভাবে ও কোথা থেকে বিক্রি হল, সেটা জানতে পারে। এর পরেই একে একে সদ্যজাতের মা এবং নার্সিংহোমের ওই দুই কর্মী সহ বাকি ছ’জনকেও গ্রেফতার করে। শিশুটিকে উদ্ধার করে একটি হোমে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে ওই নার্সিংহোমে থাকা বাকি রোগীদের আত্মীয়-স্বজনফের মধ্যেও। তবে, সদ্যোজাতের মায়ের পরিবারের সঙ্গে এ দিন অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর) সুরজিৎ কুমার দে বলেন, “নার্সিংহোম থেকে শুরু করে যার যার মাধ্যমে শিশুটির হাতবদল হয়েছিল, তাদের প্রত্যেককেই আমরা গ্রেফতার করেছি। এর পিছনে অন্য কোনও চক্র রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ যদিও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের তরফে অনুমিতা ঘোষালের দাবি, “শিশুবিক্রির অভিযোগ মিথ্যা। মনে হচ্ছে, আমাদের ফাঁসানো হয়েছে। তবে আমরা পুলিশকে তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করব।”
জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক নিরূপম সিংহ বলেন, “এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এর যাতে পুনরাবৃত্তি না-ঘটে, তার জন্য জেলা প্রশাসনের তরফে কড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। লিখিত অভিযোগ পেলে ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy