উদ্ধারের পরে ‘কালু’। নিজস্ব চিত্র
নিখোঁজের পরিবারের খোঁজ পেতে সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য মাঝেমধ্যেই পুলিশ নেয়। এ বার রটওয়েলার প্রজাতির একটি কুকুরের মালিকের খোঁজ পেতে ফেসবুকের সাহায্য নিল পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার পুলিশ। মালিকের খোঁজ না মিললেও কুকুরপ্রেমী কিছু সংগঠন ও পরিবার আগ্রহ প্রকাশ করে। তাঁদের মধ্যে বাছাই করে বীরভূমের বক্রেশ্বরের একটি পরিবারকে কুকুরটি দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে টহলদার পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের নজরে আসে, বরাবাজারের হুল্লুং গ্রামের মোড়ে ওই কুকুরটি রাস্তার পাশে বসে রয়েছে। গলায় বকলস বাঁধা ছিল। কুকুরটির চেহারা সাধারণ কুকুরের থেকে বেশ কিছুটা বড়। সিভিক ভলান্টিয়ার রাকেশ মাহাতো ও অলোক মাহাতোর কথায়, ‘‘কুকুরটাকে দেখেই বুঝেছি, কারও পোষ্য। কী ভাবে এখানে চলে এল, বুঝতে পারছিলাম না। তবে ক্ষুধার্ত ছিল। তাই সঙ্গে থাকা কিছু বিস্কুট ও জল খেতে দিই। গায়ে-মাথায় হাত বোলাই। তার পরেই কুকুরটি আমাদের গাড়িতে উঠে পড়ে।’’ কুকুরটির মুখে আঘাতের ক্ষত ছিল। থানায় নিয়ে এসেই এক পশু চিকিৎসককে ডাকা হয়। তার পর থেকে থানা চত্বরেই ক’টা দিন ছিল। গায়ের রং কালো বলে থানার সবাই নাম রেখেছিল— কালু। থানার আইসি সৌগত ঘোষের স্ত্রী সুমিতা মাঝে মধ্যেই রান্না করা মাংস, বিস্কুট পাঠিয়ে দিতেন কালুর জন্য।
কুকুর পোষায় অভিজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এই কুকুরটির বয়স বেশি নয়। রটওয়েলার মূলত পাহারাদার কুকুর। অসম্ভব প্রভুভক্ত। তবে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ না দিলে অসুবিধায় পড়তে হতে পারে। কারণ এই প্রজাতির কুকুরের দৈহিক শক্তি প্রচুর।
সৌগতবাবু বলেন, ‘‘ওকে ঠিকমতো রাখা প্রয়োজন বলে মালিকের খোঁজ পেতে ফেসবুকে ছবি দিয়ে পোস্ট করি। মালিক বা কুকুরপ্রেমী কোনও প্রতিষ্ঠানও যোগাযোগ করতে পারে বলে জানিয়েছিলাম।’’ তিনি জানান, কলকাতা, বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে চারটি প্রতিষ্ঠান ও পাঁচটি কুকুরপ্রেমী পরিবার যোগাযোগ করে। তবে প্রকৃত মালিকের খোঁজ মেলেনি। সৌগতবাবুর সংযোজন: ‘‘ওই কুকুর নিয়ে কেউ যাতে ব্যবসা করতে না পারেন, সে ব্যাপারে সতর্ক ছিলাম। খোঁজখবর নিয়ে শেষে বক্রেশ্বরের পলাশবনের একটি পরিবারকে কালুকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা কালুকে নিয়ে গিয়েছেন।’’
বক্রেশ্বরের পলাশবনের বাসিন্দা সরকারি চাকরিজীবী শক্রঘ্ন আকুড়ে ও তাঁর সম্পর্কিত ভাই রিঙ্কু অঙ্কুর ‘কালু’কে পেয়ে খুব খুশি। শুক্রবার রিঙ্কু ফোনে বলেন, ‘‘বাড়িতে আগে জার্মান শেফার্ড কুকুর ছিল। সে নেই। কালুকে পেয়ে ওর অভাব পূর্ণ হল। আমাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে থাকবে। তবে ওর মেজাজ বুঝতে কয়েকটা দিন সময় লাগবে।’’
বরাবাজার থানায় কালুর পরিচর্যা করা সিভিক কর্মী রাকেশ ও অলোক মনমরা। তাঁরা বলেন, ‘‘ক’টা দিন কালুর দেখাশোনা করেছি। এখন যেন কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy