—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। রয়েছে শৌচাগার, পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা। তা সত্ত্বেও বন্ধ হয়ে গিয়েছে জেলার বেশ কিছু জুনিয়র হাইস্কুল। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষকের অভাব, কোথাও বা ছাত্রছাত্রীর অভাবে স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে রয়েছে। এর ফলে এক দিকে যেমন সার্বিক শিক্ষাবিস্তার বিঘ্নিত হচ্ছে, তেমনই পরিকাঠামো বাবদ বরাদ্দ সরকারি অর্থ জলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল সরকার ক্ষমতা আসার পরে সার্বিক শিক্ষাবিস্তারের উদ্দেশ্যে প্রতিটি ব্লকে ৮-১০টি করে নতুন জুনিয়র হাইস্কুল অনুমোদন দেয়। ওই সব স্কুলের বাড়ি, শৌচাগার, বিদ্যুৎ, পানীয় জল সহ অন্য পরিকাঠামোও গড়া হয়। কিন্তু স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। অবসরপ্রাপ্তদের অতিথি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করে স্কুল চালু করা হয়েছিল। ওই শিক্ষকদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে স্থায়ী বা ফের অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি বলে অভিযোগ। এর ফলে স্কুলগুলি তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।
২০১৭ সালে ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়ায় একটি জুনিয়র বালিকা বিদ্যালয় অনুমোদন পায়। ন’টি ঘরের স্কুলবাড়ি, পাঁচিল, শৌচাগার, পানীয় জলের ব্যবস্থাও করা হয়। দু’জন অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে স্কুল চালু হয়। ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ১৮১ জন। ২০১৯ সালে ইংরাজি, ভূগোল, অঙ্কের তিন জন স্থায়ী শিক্ষকও বরাদ্দ হয়। কিন্তু সেই শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। ২০২২ সালে একমাত্র অতিথি শিক্ষককের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্কুলটি। ছাত্রীদের অন্য স্কুলে গিয়ে ভর্তি হতে হয়েছে।
একই অবস্থা লাভপুরের আবাডাঙা, ঠিবা, কাশিয়ারা স্কুলেও। ২০১৭ সালে আবাডাঙায় একজন অতিথি শিক্ষক এবং ৩০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে স্কুল চালু হয়। স্কুলবাড়ি-সহ অন্য পরিকাঠামোও গড়া হয়। অতিথি শিক্ষকের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০২১ সালে স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়।
২০১৪ সালে তিন জন অতিথিশিক্ষক ও ৪০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে চালু হয় কাশিয়ারা জুনিয়র হাইস্কুল। স্কুলবাড়ি সহ অন্য পরিকাঠামো নির্মাণ করা হয় সেখানেও। একে একে অতিথি শিক্ষকদের কার্যকালের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় ২০১৯ সাল থেকে স্কুলটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
সমস্ত পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও ২০১৫ সালে ২৫ জন ছাত্রছাত্রী এবং দু'জন অতিথিশিক্ষক নিয়ে চালু হওয়া ঠিবা জুনিয়র হাইস্কুলটিও একই কারণে ২০১৮ থেকে বন্ধ। জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, বর্তমানে জেলায় জুনিয়র হাইস্কুলের সংখ্যা ২৯৬টি। তার মধ্যে ৪১টি বন্ধ। বেশিরভাগই শিক্ষকের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অধীরকুমার দাসের ক্ষোভ, ‘‘শিক্ষক নিয়োগ না করে চমক সৃষ্টির জন্য যথেচ্ছ হারে স্কুল খুলে দেওয়াটা ভ্রান্ত শিক্ষানীতির পরিচয়। বদলি নীতিও ওই অব্যবস্থার জন্য দায়ী। স্কুলগুলি চালু করা না হলে পরিকাঠামো গড়ার জন্য কোটি কোটি টাকা জলে যাবে।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) চন্দ্রশেখর জাউলিয়া বলেন, ‘‘অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুলগুলি চালু করার চেষ্টা চলছে। স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy