প্রতীকী ছবি
গত কয়েক বছর ধরে সুস্বাদু আম্রপালি ফলিয়ে আমচাষে নজর কেড়েছে বাঁকুড়া। নাম ছড়িয়েছে বাঁকুড়ার মিষ্টি আমের। চাষিরা লাভের মুখ দেখায় জেলায় বেড়েছে আম চাষের পরিধিও। এ বার ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’ এবং সাম্প্রতিক ঝড়-বৃষ্টিতে আম চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জেলায়। ঝরে গিয়েছে আম। গাছে থাকা অবশিষ্ট আম কালচে হয়ে গিয়েছে। লাভ তো দূরের কথা, এ বার আম চাষের খরচ উঠবে কিনা, তা নিয়ে চিন্তায় চাষিরা।
জেলায় বহু স্বনির্ভর গোষ্ঠী আমবাগান গড়েছেন। ফি বছর ভাল মুনাফাও হয়েছে চাষে। জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে খবর, বাঁকুড়ায় ২,৬৮০ হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়। যার মধ্যে ১,৬০৮ হেক্টর জমির ফলন এ বার ঝড়-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে। ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। প্রায় আট হাজার টন আম প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়েছে। উদ্যানপালন দফতরের এক আধিকারিক জানান, গত কয়েকবছরে আম চাষ অনেটকাই বেড়েছে বাঁকুড়ায়। গড়ে ১৪ হাজার টন আম উৎপাদন হয় জেলায়। তবে এ বার ফলনের অর্ধেকও বাঁচানো যাবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কিত কৃষি আধিকারিকেরা।
জেলা উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক মলয় মাজি বলেন, “দফায় দফায় ঝড় বৃষ্টিতে আমের ফলন এ বার সে ভাবে হয়নি। অনেক চাষিই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তবে যাঁরা শেষ পর্যন্ত ফলন তুলতে পারবেন, তাঁরা দাম পাবেন।”
প্রশাসনের দাবি, একশো দিনের কাজ প্রকল্পে এবং উদ্যানপালন দফতরের উদ্যোগে জেলায় কয়েকশো আমবাগান তৈরি হয়েছে। আমচাষ স্বনির্ভরতার পথ দেখিয়েছে বহু স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে। ছাতনায় তেমনই একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য বামাপ্রসাদ দে বলেন, “প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে আমাদের আম বাগান। বছরে এক বার আম ফলিয়ে অনেক লাভ হয়। সমস্ত সদস্যেরাই লাভের অংশ পান। তবে এ বার আর তা হবে না।” তিনি জানান, প্রতি বিঘায় অন্য বার যেখানে ১৫ কুইন্টাল আম ফলে, সেখানে এ বার পাঁচ কুইন্টাল আমও মিলছে না।
জেলায় বাণিজ্যিক ভাবে আম চাষ করতে এগিয়ে এসেছেন অনেকেই। বাঁকুড়ার দামোদরপুরের চাষি সিদ্ধার্থ সেন গত পাঁচ বছর ধরে আম্রপালি চাষ করে ভিন দেশে বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, “এ বার আম চাষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। ঝড়-বৃষ্টির জন্য ফলনই হল না এ বার।” খাতড়ার আম-চাষি সঞ্জয় পন্ডার আক্ষেপ, ‘‘এ বার ঝড়ে পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে আমবাগান।’’
বাঁকুড়া উদ্যানপালন দফতরের ফিল্ড অফিসার সঞ্জয় সেনগুপ্ত বলেন, “বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখছি, হয় গাছ থেকে আম ঝরে পড়েছে, না হয় কালো হয়ে গিয়েছে। যতটুকু আম বেঁচে আছে, দ্রুত ঘরে তোলার জন্য আমরা চাষিদের বলছি।” আম-চাষিরা ক্ষতিপূরণের দাবিও তুলছেন এই অবস্থায়। বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি শুভাশিস বটব্যালের দাবি, “ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। আম-চাষিদের বিষয়ে রাজ্য সরকার ভাবছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy