উপহার হাতে নবদম্পতি। নিজস্ব চিত্র।
উপহার, পটচিত্রের আদলে চিত্রিত টবে লাগানো একটি স্বর্ণচাঁপা গাছ। ‘গাছবন্ধুর’ বিয়েতে এমন উপহার নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ৩০০কিমি পথ উজিয়ে বীরভূমে হাজির হলেন রবীন্দ্র পরিষদের সদস্যরা। রবিবার ওই ঘটনার সাক্ষী থাকালেন বীরভূমের সদাইপুরের জামথালিয়া গ্রামের যুবক সাদিকুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা খাতুন।
হঠাৎ পূ্র্ব মেদিনীপুর থেকে বীরভূমে ছুটে আসার নেপথ্যেও সেই ‘গাছ’-ই। পৃথিবীতে সবুজকে ছড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে তাঁরা এগিয়ে চলেছেন বলে জানালেন পূর্ব মেদিনীপুরের রবীন্দ্র পরিষদের সদস্য প্রতীক জানা, রজত দাস, মানিক ভুঁইয়া, দেবগোপাল মণ্ডল এবং স্মরণিকা পড়ুয়ারা । তাঁদের সঙ্গে একই ‘মিশনে’ যুক্ত বীরভূমের যুবক সাদিকুরও।
বাংলাদেশ থেকে কৃষিতে (উদ্যানপালনে)স্নাতকোত্তর করা বীরভূমের ওই যুবক বর্তমানে হাওড়া মহকুমার জগৎবল্লভপুর ব্লকের কৃষি দফতরের কর্মী। পৃথিবীতে গাছ লাগানোর উদ্দেশ্যে তৈরি হওয়া পরিবেশ কর্মীদের একটি মঞ্চ, ‘প্ল্যানেট ফর প্ল্যান্টেশনে’ যুক্ত থাকার সুবাদে সাদিকুরের সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপূরের সমমনস্ক সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাঁরা জুড়ে আছেন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও। সকলেই গাছ লাগাতে ভালবাসেন।
সবুজের অভিযানে শামিল হওয়া এই দুই জেলার কিছু উৎসাহী তরুণ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ায় হলদি নদীর তীরে ৫০টি গাছ লাগিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে। অনুষ্ঠানের নাম বৃক্ষবন্ধন। একই ভাবে বাংলাদেশের হলদি নদীর ধারেও লাগানো হয়েছিল ৫০টি গাছ।
সেই আত্মীয়তা সূত্র ধরে সাদিকুরের বিয়ের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে রবিবার হাজির হয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের বন্ধুরা। রবিবার প্রীতিভোজের আসর বসেছিল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপনগরীর কমিউনিটি হলে। সেখানে উপস্থিত হয়ে রবীন্দ্র পরিষদের সদস্যরা বললেন, ‘‘আমরা জেলার নানা প্রান্তে এতদিন অনেক গাছ লাগিয়েছি। সেই গাছ নিয়েই রবিবার সুদূর বীরভূমে পৌঁছলাম।’’ সাদিকুর বললেন, ‘‘গ্রুপে থাকা বন্ধুদের বিয়ের সময় আমরা একটি গাছকে দত্তক হিসাবে উপহার দিয়ে থাকি। আমার বিয়েতে সেই ধারাই বজায় রাখলেন পূর্ব মেদিনীপুরের বন্ধুরা।’’
রবীন্দ্র পরিষদের সম্পাদক প্রতীক জানা বলেন, ‘‘দত্তক হিসেবেই গাছটি নববদম্পতিকে দেওয়া হল। বিবাহের পর তাঁরা দু’জনে এই স্বর্ণচাঁপা গাছের দায়িত্ব নেবেন তাকে রক্ষা করতে।’’ শুধু নবদম্পতিকে গাছ উপহার দেওয়াই নয় শান্তিনিকেতনে গিয়েও কিছু গাছ লাগিয়েছেন প্রতীকবাবুরা। সাদিকুর বলছেন, ‘‘গাছ ছাড়া পৃথিবী টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। গাছের প্রতি ভালবাসা ও আন্তরিকতার জন্য এতটা ছুটে এসেছেন ওঁরা। খুব খুশি হয়েছি এই অনন্য উপহার পেয়ে।’’ খুশি ফারজানাও। রবীন্দ্র পরিষদের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি জানালেন, ‘‘আমি নিজেই উদ্ভিদবিদ্যার ছাত্রী তাই গাছের গুরুত্ব বুঝি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy