সভাস্থলে পাঠাতে জল প্যাকেটবন্দি করা চলছে। বাঁকুড়ার কারকডাঙায় জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের পাম্পহাউসে রবিবার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
৫৫ হাজার ডিম দিয়ে ৭০টি উনুনে ডালনা রাঁধবেন ১১০ জন রাঁধুনি। মুখ্যমন্ত্রীর সভা আগেও হয়েছে বাঁকুড়ায়। কিন্তু মঙ্গলবার সতীঘাটের কাছে কর্মিসভার জন্য যে আয়োজন চলছে, তা অন্য বারের থেকে চোখে পড়ার মতো আলাদা বলে মত দলের কর্মীদের একাংশেরই। বিরোধী শিবির থেকেও উড়ে আসছে কটাক্ষ।
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের অভিযোগ, “ঘণ্টাখানেকের কর্মিসভার জন্য কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারী জেলায় এসে তহবিল সংগ্রহ করতে নিষেধ করেছিলেন। আমাদের প্রশ্ন, তা হলে এই টাকা আসছে কোথা থেকে?” জেলা তৃণমূল সভাপতি শুভাশিস বটব্যালের অবশ্য দাবি, “আমাদের দলের সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের মাসিক ভাতা দলের এই কর্মসূচিতে দান করেছেন।’’ আয়োজনের বহরে ‘ভয় পেয়ে’ বিরোধীরা এমন প্রশ্ন তুলছেন বলে পাল্টা কটাক্ষ করছেন শুভাশিসবাবু।
মঙ্গলবার বাঁকুড়ার সতীঘাট বাইপাস এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মিসভা করার কথা রয়েছে। রবিবার সভাস্থল পরিদর্শন করে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল সূত্রের খবর, সভায় ৫০ হাজার কর্মীকে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে দল। কর্মীদের দুপুরের খাবারে থাকছে ভাত, ডিমের কারি, ডাল ও বাঁধাকপির তরকারি। গন্ধেশ্বরী সেতু সংলগ্ন একটি বেসরকারি উদ্যানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের খাবার তৈরির আয়োজন হচ্ছে। সেখানে দায়িত্বে রয়েছেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুখেন বিদ ও মেজিয়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়।
এ ছাড়াও শহর ও শহর লাগোয়া এলাকায় তিনটি জায়গায় আরও কয়েক হাজার মানুষের রান্নার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই উদ্যানে রান্নার জন্য জেলা ও জেলার বাইরে থেকে ১১০ জন রাঁধুনি আনা হয়েছে। প্রায় ৬০০ তৃণমূল কর্মী ভলান্টিয়ার হিসেবে গোটা বিষয়টি পরিচালনা করবেন। ৭০টি গ্যাসের আভেনে রান্না হবে। বড়জোড়ার একটি ফার্ম থেকে আনা হয়েছে ৫৫ হাজার ডিম। বস্তা বস্তা চাল, ডাল, আলু মজুদ করা হচ্ছে।
জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দলীয় কর্মীদের জন্য বাঁকুড়া শহর ও শহর লাগোয়া এলাকায় ছ’টি পার্কিং জ়োন গড়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। সেখানেই স্টল থাকবে। প্যাকেট করা খাবার স্টল থেকে দেওয়া হবে কর্মীদের। সুখেনবাবু, মলয়বাবুরা জানান, উদ্যান থেকে রান্না করা খাবার পার্কিং জ়োনের স্টলে নিয়ে যেতে ৩৫টি পিকআপ ভ্যান ভাড়া করা হয়েছে। সুখেনবাবু বলেন, “কর্মিসভার এক দিন আগেই রাঁধুনিরা এসে পড়বেন। সেই দিন থেকেই শুরু হয়ে যাবে আনাজ কাটার কাজ। সভার দিন সকাল ন’টার মধ্যেই রান্নার যাবতীয় কাজ সারা হয়ে যাবে।”
কর্মিসভার জন্য এমন আয়োজন শেষ কবে হয়েছিল, মনে করতে পারছেন না জেলা তৃণমূল নেতারা। প্রবীণ তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ স্মরণ করছেন, ২০১১ সালে রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে গন্ধেশ্বরীর কাছে সভা করে গিয়েছিলেন মমতা। সেখানে প্রচুর ভিড় হলেও খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি। জেলা তৃণমূল সভাপতি শুভাশিসবাবুর বক্তব্য, ‘‘এত মানুষের বাঁকুড়া শহরে খাবার জায়গা পেতেই মুশকিল হবে। সেই সমস্যা মেটাতেই আমরা আয়োজন করে রাখছি।’’ জেলা তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “কর্মিসভার আয়োজনে যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে সে দিকে আমার নজর রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy