Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Snake

সাপ ঠেকাতে আজও চল বেড়িবন্ধনের

জ্যেষ্ঠ শেষের দিনটি গ্রাম বাংলায় বর্ষা শুরুর দিন হিসেবে পরিচিত। পঞ্জিকা মতে, দিনটি বিষ সংক্রান্তি হিসেবেও চিহ্নিত।

ময়ূরেশ্বরে পাকা বাড়িতেও গোবরের দাগ। নিজস্ব চিত্র

ময়ূরেশ্বরে পাকা বাড়িতেও গোবরের দাগ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২০ ০১:৪৭
Share: Save:

বিশ্বাসযোগ্যতা থাক বা না-থাক, বাড়িতে সাপের অনুপ্রবেশ রুখতে বিষ সংক্রান্তিতে আজও বহু জায়গায় গোবরের বেড়িবন্ধন দেওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে। কোথাও কোথাও বেড়িবন্ধনকে ‘এড়িবেড়ি’ দেওয়া বলা হয়ে থাকে। প্রচলিত রয়েছে বিষ প্রতিরোধী হিসেবে ‘তেঁতোমেতো’ খাবার রীতিও।

জ্যৈষ্ঠ শেষের দিনটি গ্রাম বাংলায় বর্ষা শুরুর দিন হিসেবে পরিচিত। পঞ্জিকা মতে, দিনটি বিষ সংক্রান্তি হিসেবেও চিহ্নিত। সর্প
বিশারদদের মতে, বর্ষার শুরু থেকেই ডিম ফুটে সাপের বাচ্চা জন্মাতে থাকে। বাচ্চা সহ সাপেরা নিভৃত আশ্রয়ের খোঁজে গৃহস্থের বাড়ি বেছে নেয়। তাদের আটকাতেই প্রাচীনকাল থেকেই বিষ সংক্রান্তির দিনে ভোরবেলায় সারা বাড়িতে গোবরের বেড়ি দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। এ বারও অন্যথা হয়নি।

ময়ূরেশ্বরের নবগ্রামের ইতি ভাণ্ডারী, লাভপুরের ধনডাঙ্গার সুলতা মণ্ডলরা জানান, গোবরের বেড়ি দিয়ে সাপ আটাকানো যায় কিনা বলতে পারবেন না। তাঁদের কথায়, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে মা-শাশুড়িদের মুখ থেকে শুনে আসছি বিষ সংক্রান্তির দিন গোবরের বেড়ি দেখলে সাপেরা নাকি মুখ ফিরিয়ে নিয়ে চলে যায়। সেই বিশ্বাসেই প্রতি বছরই বাড়িতে গোবরের বেড়ি দিয়ে আসছি।’’ সর্প বিশারদ হিসেবে পরিচিত অজয়পুর হাইস্কুলের শিক্ষক তথা জাতীয় বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর সদস্য দীনবন্ধু বিশ্বাস জানিয়েছেন, গোবরের জন্য সাপ পালিয়ে যায় এমন নয়। অনেক সময় গোয়াল ঘর থেকেও বাচ্চা সহ সাপ উদ্ধার হয়েছে। তবে গোবরের একটা ঝাঁঝালো গন্ধ রয়েছে। এ জন্য সাপেরা গোবরের কাছে যেতে চায় না। সেই ধারণা থেকেই গোবরের বেড়িবন্ধনের রীতি চালু হয়েছিল বলে মনে হয়।

এ দিন বহু পরিবারে ‘তেঁতোমেতো’ খাবারও চল রয়েছে। মুসুর ডাল, নিমপাতা, কেলে কাঁকড়ার (এক ধরণের কষা বুনোফল) মিশ্রণ ‘তেঁতোমেতো’ হিসেবে পরিচিত। সকালে স্নান করে তেঁতোমেতো মুখে দেওয়ার পরে অন্য কিছু খাওয়া চলে। ভাতেও কেলেকাঁকড়া, করলা, নিমপাতা ভাজা, সজনে শাক, মসুরি কলাই বড়া এবং আমড়া টক খাওয়া হয়। পেঁয়াজ, রসুন সহ আমিষ জাতীয় খাদ্য এবং পাটের শাক, ঢেঁড়সের মতো পিচ্ছিল খাবার নিষিদ্ধ। কোথাও কোথাও সদর দরজা, গোয়ালঘর, হরিমন্দির, ঠাকুরঘর এবং রান্নাঘরে কলাপাতায় ‘তেঁতোমেতো’ পরিবেশন এবং বিভিন্ন জায়গায় নিমশাখা গুঁজে রাখার রীতি আছে।

লাভপুরের শাহআলমপুরের বাসন্তী মণ্ডল, আমোদপুরের শান্তিলতা সেনরা বলছেন, ‘‘তেঁতোমেতো খেলে শরীরের দূষিত ভাব কেটে গিয়ে বিষ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে বলে শুনে আসছি। সেই জন্য আজও পরিবারে ‘তেতোমেতো’ খাওয়ার চল রয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Snake Ritual
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy