কৌশিকি অমাবস্যায় গর্ভগৃহ বিগ্রহের পুজো। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
আর পাঁচটা অমাবস্যার থেকে তারাপীঠে কৌশিকী অমাবস্যার উদ্যাপন আলাদা ভাবে হয়। কারণ, কথিত আছে, এই তিথিতে তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করে দেবীর দর্শন পেয়েছিলেন বামাখ্যাপা। ফলে, এই দিনটিতে বরাবরই অসংখ্য দর্শনার্থী আসেন তারাপীঠে। স্থানীয়দের পাশাপাশি বাইরে থেকেও অনেকে আসেন। এ বার স্থানীয় দর্শনার্থীদের ভিড় থাকলেও, বাইরে থেকে আসা দর্শনার্থী অন্য বছরের তুলনায় কম ছিল বলে জানান লজ ও হোটেল ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটের পরে অমাবস্যা তিথি শুরু হয়। কিন্তু বুধবার রাত থেকেই তারাপীঠে পুজো দেওয়ার লাইন পড়ে যায়। তাই তারাপীঠ তারামাতা সেবাইত সমিতির পক্ষ থেকে বুধবার সারা রাতা মন্দির খুলে রাখা হয়েছিল। রাত তিনটের পরে দেবীর স্নান ও আরতির জন্য গর্ভগৃহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ আবার দরজা খুলে দেওয়া হয়। এ দিন ভোর থেকেই দেবীকে ফুলের সাজে সাজানো হয়। সন্ধ্যায় দেবীকে ডাকের সাজে রাজবেশে সাজানো হয়।
ভোরেই পুজো দিতে আসেন তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে এবং রাজ্যবাসীর কল্যাণে পুজো দেন। আশিস বলেন, ‘‘গত বারের চেয়ে ভিড় বেশি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও অঘটন বা কোনও আপত্তিকর কিছু ঘটেনি। লজের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়েও দুপুর পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাইনি।’’
বৃহস্পতিবার দুপুরে তারাপীঠে আসেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। সঙ্গে ছিলেন বোলপুর সাংসদ অসিত মাল। দুপুর একটা নাগাদ তারাপীঠ মন্দিরে আসেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। তারাপীঠ মন্দির সেবাইত সমিতির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় ও সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ দিন দুপুর পর্যন্ত দু’লক্ষাধিক দর্শনার্থী এসেছেন। ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য মন্দির চত্বরে ১০০ জন নিরাপত্তা কর্মী বাড়ানো হয়েছে। নজরদারির জন্য ২৫টি নজরদারি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।’’
তারাময় জানান, এ দিন গভীর রাতে দেবীর নিশি পুজো করা হবে। দুপুরে সাদা ভাত, পোলাও সহযোগে পাঁচ রকম ভাজা, পাঁচ তরকারি, মাছ, বলিদানের মাংস, পায়েস ও পাঁচ রকম মিষ্টির ভোগ নিবেদন করা হবে। নিশি পুজোতে খিচুড়ি, পোড়া শোল মাছ ও সুরার ভোগ নিবেদন করা হয়।
এই অমাবস্যার সময় তারাপীঠ শ্মশানে তন্ত্র সাধনার জন্য বিশেষ হোম হয়। এর জন্য দেশ, বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধু, সন্ন্যাসীরা আসেন। পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোর পর্যন্ত অমাবস্যা তিথি থাকার জন্য শ্মশানে গভীর রাত পর্যন্ত হোম চলবে। তাই সেখানে পর্যাপ্ত আলো এবং পুলিশি ব্যবস্থা করা হয়েছে। রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ধীমান মিত্র বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত দর্শনার্থীর ভিড় বাড়বে। সে মতো পুলিশি ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
অন্য দিকে, তারাপীঠ লজ মালিক সমিতির সভাপতি সুনীল গিরি বলেন, ‘‘গত বছর করোনার ভয় থাকায় কৌশিকী অমাবস্যায় ভিড় হয়নি। এ বছর গত বছরের থেকে বেশি ভিড় হলেও আগের মতো ভিড় হয়নি। ছোট-বড় অধিকাংশ লজের ঘর খালি আছে। এ দিন সাধারণ লাইনের বাইরে ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার লাইনের জন্য দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় হয়নি।’’ তারাপীঠ লজ মালিক সমিতির একাংশের দাবি, পুলিশ বুধবার দুপুর থেকে ছোট গাড়ি ঢুকতে বারণ করে দেওয়া ভিড় কম হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy