E-Paper

জলের নীচে জমি, ভয় ধরাচ্ছে কুঁয়ে

ব্লক কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার লাভপুরে ২২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধানচাষের লক্ষমাত্রা ধার্য হয়েছে। এখনও পর্যন্ত চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৮০ হেক্টরে।

লাভপুরে কুঁয়ে নদীতে জল বাড়ছে। (ডান দিকে), বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ আটকানো চলছে।

লাভপুরে কুঁয়ে নদীতে জল বাড়ছে। (ডান দিকে), বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ আটকানো চলছে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৪ ০৯:৫৮
Share
Save

এক রাতের ভারী বৃষ্টিতে দু’কূল ছাপিয়ে বইছে কুঁয়ে নদী। এর ফলে লাভপুর ব্লকের কুরুন্নাহার এবং ঠিবা পঞ্চায়েত এলাকার নদী তীরবর্তী গ্রামে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গলাইচণ্ডী, শীতলগ্রাম, ঠিবা, খাঁপুর, কাঁদরকুলো, জয়চন্দ্রপুর, চতুর্ভুজপুর, হরিপুরের মতো গ্রামের বাসিন্দাদের ঘুম উবেছে। প্রশাসনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাঁধ মেরামত করছেন তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লাভপুরের মাঝ বরাবর বয়ে গিয়েছে কুঁয়ে নদী। প্রায় প্রতি বছর বর্ষায় কুঁয়ে নদী এবং লাঙলহাটা বিলের জলে কুরুন্নাহার, ইন্দাস ও ঠিবা পঞ্চায়েত এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ বারেও ভারী বৃষ্টিতে সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই তলিয়ে গিয়েছে বিঘের পর বিঘে ধানী জমি। ভেসে গিয়েছে বহু পুকুরের মাছ। কাঁদরকুলোর উৎপল মণ্ডল, খাঁপুরের মানব মণ্ডল ৮ বিঘে করে জমিতে ধান পুঁতেছিলেন। বাকি ৪ বিঘে জমি ধান পোঁতার জন্যে তৈরি করা ছিল। ছিল বীজতলাও। সব এখন জলের তলায়। দু’জনে বলছেন, ‘‘বিঘে প্রতি ৫-৬ হাজার টাকা খরচ করে ধান পুঁতেছিলাম। সব এখন জলের তলায়। এক দিনের মধ্যে জল না-সরলে সব হেজেমজে শেষ হয়ে যাবে।’’

ব্লক কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার লাভপুরে ২২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধানচাষের লক্ষমাত্রা ধার্য হয়েছে। এখনও পর্যন্ত চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৮০ হেক্টরে। তার মধ্যে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ৫১২৯ হেক্টর জমি। এ ছাড়াও ২৪ হেক্টর কলাই, ৩৯ হেক্টর ভুট্টা, ১১ হেক্টর বাদাম-সহ অন্যান্য ফসল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ব্লক সহ কৃষি আধিকারিক কাজল সাহা জানান, দিন দুয়েকের মধ্যে জল না-সরলে ওই সব জমির ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

ভেসে গিয়েছে বেশ কিছু পুকুরের মাছও। খাঁপুরের সুজয় মণ্ডল, বিকাশ মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ করে আমরা পুকুরে মাছ চাষ করেছিলাম। নদীর জল ঢুকে সেই সব পুকুর ভেসে গিয়েছে।’’ ব্লক মৎস দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির জলে ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশটি পুকুর ভেসে গিয়েছে। এ দিকে কাঁদরকুলো গ্রাম লাগোয়া সেতুটি তলিয়ে যাওয়ায় কীর্ণাহারের সঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকার সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ২০-২৫ কিলোমিটার ঘুরপথে অথবা নৌকায় যাতায়াত করতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।

শনিবার বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপারে সজাগ থাকার প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইক যোগে প্রচার করা হয়। এ দিন সকালে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এলাকায় যান লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, বিডিও শিশুতোষ প্রামাণিক, থানার ওসি সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায়, কীর্ণাহারের ওসি আশরাফুল হক, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তী , ঠিবা অঞ্চল সভাপতি সায়িন কাজী প্রমুখ। বিধায়ক বলেন, ‘‘যে-সব জায়গায় বাঁধ দুর্বল আছে, সেখানে গ্রামবাসী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় সেচ দফতরের কর্মীরা মাটির বস্তা দিয়ে মেরামত করছেন। প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।’’

বিকেলে লাভপুরে পরিদর্শনে যান জেলা সভাধিপতি কাজল শেখও। তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য প্রশাসন প্রস্তুত।’’ বিডিও জানান, আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। ব্লকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ঠিবা এবং কুরুন্নাহার পঞ্চায়েত এলাকায় দু’টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। সেখানে ২০টি পরিবারকে সরিয়ে আনা হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।