এ এক মেলবন্ধনের ছবি। সম্প্রীতির অনন্য নজির। সাত দশকেরও বেশি সময় আগে পুরুলিয়ার পুঞ্চায় কালীপুজোর সূচনা করেছিলেন এক মুসলমান পুলিশ আধিকারিক। সেই পুজো খ্যাতি পায় চরণপাহাড়ি কালী নামে। সেই পুজো ঘিরে এখন উৎসবের চেহারা পুঞ্চায়। হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সকলেই যোগ দেন ওই পুজোয়।
কথিত আছে, বাংলার ১৩৫৭ সালে পুঞ্চা ফাঁড়ির ওসি জিটি লতিফ স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন কালীর। স্বপ্নে কালী তাঁকে জানিয়েছিলেন যে, পাশের পাহাড়ে তাঁর চরণচিহ্ন রয়েছে। তা নিয়ে এসে পুজো করার নির্দেশ দেন স্বপ্নে। পর দিন ওই পুলিশ আধিকারিক পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে একটি পাথরের উপর কালীর ‘পদচিহ্ন’ দেখতে পান। এর পর আশপাশের গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি পুজো শুরু করেন। প্রথমে একটা ছোট মন্দির তৈরি করে পুজো শুরু করেন তিনি। কালক্রমে গ্রামবাসী-সহ অন্যদের সহযোগিতায় মন্দিরের আকার বড় হয়। সেই পুজো চলছে এখনও।
আরও পড়ুন:
-
চোখে জল কোহলির, কাঁধে তুলে নিলেন রোহিত, রুদ্ধশ্বাস জয়ের পর অন্য ছবি মেলবোর্নে
-
ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে নেই ধর্মের বেড়াজাল, পুজো দিতে আসেন মুসলিম এবং খ্রিস্টানরাও
-
ঘূর্ণিঝড় সিত্রংয়ের তাণ্ডবে কোন এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে? কলকাতায় কেমন প্রভাব?
-
তিলের নাড়ু বলে অপমান! মোদীকে পাল্টা ঠুকে কেজরি বললেন, ‘আমজনতা ফেলনা নয়’
অসীম মুখোপাধ্যায় নামে পুজো কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘এই পাহাড়ের নাম আগে চরণপাহাড়ি ছিল না। ব্রিটিশ আমলে এটা ছিল ওয়াচ টাওয়ার। সেই সময় জিটি লতিফ নামে এক পুলিশ আধিকারিক মায়ের স্বপ্নাদেশ পান। তিনি এই পাহাড়ে একটি পাথরে মায়ের চরণচিহ্ন দেখতে পান। তার পরই এই পাহাড়টির নাম হয় চরণপাহাড়ি। পুজো উপলক্ষে এখানে বসে বিশাল মেলা। যদিও করোনাকালে দু’বছর সে ভাবে পুজো হয়নি। বসেনি মেলাও। তবে এ বছর সব কিছুই আগের মতো ঘটা করে করা হবে।’’ হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ চাঁদা আদায় থেকে শুরু করে কালীপুজোর সব ব্যবস্থা করে থাকেন। পুঞ্চার এই চরণপাহাড়ি হয়ে ওঠে এক মিলনক্ষেত্র।