Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
International Women's Day

অভাবের আঁধারে শিক্ষার আলো ছড়ান জ্যোৎস্না

গ্রামবাসীরাই জানান, জ্যোৎস্নার ঘরে অভাবের অমাবস্যা রয়েছে আজীবন। বছর ৭২-র বৃদ্ধার সংসার চলে সরকারি বার্ধক্য ভাতা ও সাহায্যে।

খুদে পড়ুয়াদের মাঝে জ্যোৎস্না সেনগুপ্ত।

খুদে পড়ুয়াদের মাঝে জ্যোৎস্না সেনগুপ্ত। নিজস্ব চিত্র।

তারাশঙ্কর গুপ্ত
পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৪ ০৯:২৫
Share: Save:

উপর থেকে দেখলে তিনি গ্রামের এক নিম্নবিত্ত পরিবারের বধূ। বয়সের রেখা, দারিদ্রের আঁচড় তাঁর মুখে স্পষ্ট বোঝা যায়। কিন্তু কাজে কর্মে তিনি এখনও সবুজ, সতেজ এবং বিশেষ। কেউ তাঁকে বলেন পারুলিয়ার টেরেসা। কারও কাছে তিনি মুশকিল আসান। একখানা মানব দরদী মনের দৌলতে পাত্রসায়রের পারুলিয়া গ্রামের জ্যোৎস্না সেনগুপ্ত গ্রামবাসীদের কাছে হয়ে উঠেছেন অনন্য। গত ৩০ বছর ধরে গ্রামের দুঃস্থ শিশুদের বিনা পয়সায় পড়াচ্ছেন এই বৃদ্ধা।

গ্রামবাসীরাই জানান, জ্যোৎস্নার ঘরে অভাবের অমাবস্যা রয়েছে আজীবন। বছর ৭২-র বৃদ্ধার সংসার চলে সরকারি বার্ধক্য ভাতা ও সাহায্যে। কিন্তু নিজের দুর্দশার অন্ধকার কাটিয়ে গোটা গ্রামে শিক্ষার আলো ছড়াতে জানেন বৃদ্ধা। বই-খাতা নিয়ে কচিকাঁচারা ঘিরে বসে তাঁকে।

জ্যোৎস্না বলেন, “আমি নিজে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। স্বামীর তেমন রোজগার ছিল না বলে টিউশন পড়ানো শুরু করি। তখন পাঁচ টাকা করে নিতাম। মেয়ের বিয়ের পরে মনে হল আমার দিন চলে যাবে, গরিবের পয়সা নিয়ে আর কী হবে? তখন থেকেই টাকা নেওয়া বন্ধ করি।” শিক্ষিকা জ্যোৎস্নার একমাত্র চাহিদা গ্রামের শিশুদের শিক্ষার প্রথম সিঁড়িতে তুলে দেওয়া।

স্থানীয় বাসিন্দা শান্তিগোপাল ভট্টাচার্য বলেন, “বহু দিন ধরে উনি নিখরচায় সকাল, বিকেল গ্রামের দুঃস্থ শিশুদের টিউশন পড়ান। খুব উপকার হয় আমাদের।” পাড়ার বৌমাদের ভরসার জায়গা ৭২-র জ্যোৎস্না। কমলা চট্টোপাধ্যায়, কৃষ্ণা ভট্টাচার্যরা বলেন, “বিপদে আপদে কাকিমাকে ডাকলেই উনি হাজির হয়ে যান। আমাদের পরিবার ভাবেন।”

আলাদা করে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন হয়নি জ্যোৎস্নাকে ঘিরে। কারণ বৃদ্ধার কাজ তাঁকে প্রত্যেক দিন বিশেষ করে তোলে। পারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের দিন-রাত কাটে জ্যোৎস্নার আলোতেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Patrasayar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy