Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
জিলিপি

আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছে না জিলিপি !

পুকুরিয়ায় পাঁচশোরও বেশি পরিবারের বসবাস। প্রায় সবাই কাঁসা-পিতলের বাসন তৈরির সঙ্গে যুক্ত। অনেক কাল আগে থেকেই এই গ্রামের বিশ্বকর্মা পুজো ও ভাদু পুজো বিখ্যাত। আর সেই উৎসবের মূল আকর্ষণ জিলিপি।

মস্ত: পুকুরিয়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

মস্ত: পুকুরিয়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:০৪
Share: Save:

বিশ্বকর্মা পুজোর গ্রামে ভাজা হয় বিখ্যাত জিলিপি। বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের বিক্রমপুরের পুকুরিয়া গ্রামের অনেকেই তা উপহার পাঠাতেন আত্মীয়ের বাড়িতে। এ বছর করোনার উৎপাতে ভাটা পড়েছে সেই প্রথায়। জেলার লোকসংস্কৃতির গবেষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আত্মীয়স্বজনের বাড়ি নানা মরসুমি খাবার পাঠানোর রেওয়াজ বাঙালির সংস্কৃতিতে অনেক পুরনো। সে গরমে বাগানের আম-কাঁঠাল হোক বা পার্বনের সময়ে এলাকার প্রসিদ্ধ কিছু। পুকুরিয়া গ্রামের বছর পঁচাত্তরের বৃদ্ধ শিবরাম কর্মকার ও সত্তর বছরের গোপাল কর্মকার অনেক ভেবেও মনে করতে পারলেন না, এর আগে কবে বিশ্বকর্মা পুজোর সময়ে আত্মীয়-বাড়িতে জিলিপি পাঠানো হয়নি।

পুকুরিয়ায় পাঁচশোরও বেশি পরিবারের বসবাস। প্রায় সবাই কাঁসা-পিতলের বাসন তৈরির সঙ্গে যুক্ত। অনেক কাল আগে থেকেই এই গ্রামের বিশ্বকর্মা পুজো ও ভাদু পুজো বিখ্যাত। আর সেই উৎসবের মূল আকর্ষণ জিলিপি। এক-একটির ওজন হয় পাঁচশো গ্রাম থেকে চার কিলোগ্রাম পর্যন্ত। আত্মীয়ের বাড়ি, বিশেষত মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে অনেকেই সেই জিলিপি পাঠান। কেউ কেউ জানাচ্ছেন, এ বছর উপহার দেওয়ার সামর্থ্য নেই। কেউ বলছেন, পাঠানোর ঝামেলার কথা।গ্রামের বাসিন্দা রেখা কর্মকার বলেন, ‘‘ছেলের বিয়ের সম্বন্ধ হয়েছে কলকাতায়। গ্রামের রীতি অনুযায়ী, নতুন সম্পর্ক হলে সেই বাড়িতে জিলিপি পাঠানো হয়। কিন্তু সেটা আর হল না। মেয়ের শ্বশুরবাড়িতেও পাঠাতে পারিনি।’’

গ্রামের অনেকেই জানাচ্ছেন, করোনা-পরিস্থিতির মধ্যে যাতায়াতে সমস্যা রয়েছে। আত্মীয়ের বাড়িতে হাজির হলে, সংক্রমণের আতঙ্ক বড় হয়ে উঠতে পারে বলে দ্বিধা করছেন অনেকে। তার উপরে, দূরের আত্মীয়বাড়ি থেকে ঘুরে এলে ‘কোয়রান্টিন’ থাকার বিষয়টিও রয়েছে।পুকুরিয়া গ্রামের বাসনের কারিগর কুমারেশ কর্মকার জানান, এ বছর ব্যবসায় বেশ মন্দা চলছে করোনার জন্য। গ্রামের থেকে ব্যবসায়ীরা বাসন কিনে নিয়ে যেতেন। এ বছর তাঁরাও আসছেন খুবই কম। ফলে, প্রচুর পরিবার সংসার চালাতেই হিমসিম খাচ্ছে। প্রতি বছর বিশ্বকর্মা পুজোয় জিলিপি তৈরি করেন পুকুরিয়ার সুকুমার কর্মকার, সত্যসাধন কর্মকার ও আশিস কর্মকার। তাঁরা বলেন, ‘‘অন্য বছর প্রচুর চাহিদা থাকত। আট থেকে ১০ কুইন্টাল জিলিপি বিক্রি হয়ে যেত। এ বছর অর্ধেকও হল না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

জিলিপি Jilipi Simlapal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy