ময়ূরেশ্বরে ঝলকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফুল ও সবজি বাগান। নিজস্ব চিত্র।
বাগান বলতে রয়েছে স্কুল চত্বরে ইতিউতি ছড়িয়ে থাকা কাঠা দুয়েক জায়গা। সেই জায়গাতেই রকমারি আনাজের চাষ করে মিড-ডে মিলে স্বাদবৈচিত্র ফিরেছে ময়ূরেশ্বরের ঝলকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্বাদবৈচিত্রের জন্য বেড়েছে মিড-ডে মিল খাওয়ার প্রবণতাও।
স্কুল এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৫৯। মাথাপিছু সরকারি বরাদ্দ ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। বরাদ্দ টাকায় পড়ুয়াদের পাতে রকমারি আনাজ তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। একঘেয়েমি খাবারে ছাত্রছাত্রীদের দুপুরের খাওয়ার ব্যাপারে অনীহা দেখা দেয়। স্বাদবৈচিত্র ফেরাতে স্কুল চত্বরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জমিতেই আনাজ ও ফুলের বাগান করার সিদ্ধান্ত নেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই মতো বছর দুয়েক আগে পড়ুয়াদের নিয়ে আনাজ বাগান তৈরিতে নেমে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
সেই বাগানেই এখন ঢেঁড়স, সিম , ঝিঙে , কুমড়ো , লাউ , পালংশাক, করলা, বেগুন সহ রকমারি আনাজ ফলছে। মরশুমি সেই সব আনাজ দিয়েই রান্না করা হচ্ছে মিড-ডে মিল। স্বাদ ফিরেছে খাবারের। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মিড-ডে মিল খাওয়ার আগ্রহও বেড়েছে। চতুর্থ শ্রেণি ছাত্র প্রকাশ ধীবর , দিয়া মণ্ডল, তৃতীয় শ্রেণির দোয়েল দাস, অর্ণব মণ্ডলরা বলে, ‘‘আগে রোজ এক তরকারি-ভাত খেতে খেতে আমাদের মিড-ডে মিলে অরুচি ধরে গিয়েছিল। এখন সেই খাবারে বাড়ির রান্নার স্বাদ পাই।’’
মিড-ডে মিল রান্নার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দলনেত্রী পিঙ্কি কোনাই, সহ দলনেত্রী মানসী দাস বলেন, ‘‘আমাদেরও প্রায় রোজই এক তরকারি ভাত ছেলেমেয়েদের পাতে তুলে দিতে খারাপ লাগত। ওরা পাত পরিস্কার করে খেতও না। এখন চেটেপুটে খেয়ে নেয়। রান্না করা সার্থক মনে হয়৷’’ অভিভাবিকা কল্যাণী দাস, চন্দনা ধীবর, অরুণ ভল্লারা জানান, ছেলেমেয়েরা এখন স্কুলের রান্না করা খাবারের প্রশংসা করে। সহকারী শিক্ষক শ্যামল ঘোষ এবং আবুজার গাফফার শেখ বলেন, ‘‘নিজস্ব আনাজ বাগান থাকায় শুধু অর্থ সাশ্রয়ই নয়, কীটনাশক মুক্ত আনাজও পাওয়া যাচ্ছে। অর্থ সাশ্রয় হওয়ায় ছেলেমেয়েদের পাতে মাঝেমধ্যে মাছ-মাংস দিতে পারছি।’’
শুধু আনাজ বাগানই নয়, স্কুল আলো করে ফুটে রয়েছে বিভিন্ন ফুলও। সেই বাগান স্কুলের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। সাহায্য করছেন গ্রামবাসীও। প্রধান শিক্ষক বরুণ কুমার চক্রবর্তী জানালেন, আগে ৬০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী মিড-ডে মিল খেত। এখন ২০ শতাংশ বেড়েছে। গ্রামবাসীরাও স্বেচ্ছায় বাগান রক্ষণাবেক্ষণে শামিল হয়েছেন। সেটাও বড় পাওনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy