Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

আটকে থাকা বেতন মিলছে 

পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক অভিযোগ করেন, ‘‘পুরপ্রধান স্বেচ্ছাচারিতা চালাচ্ছেন। বেতন না পেলেও আমি এসডিও অফিসে যেমন কাজে যাচ্ছি, তেমনই যাব।’’

কর্মীদের হাজিরা খাতায় চোখ ঝালদার পুরপ্রধানের। নিজস্ব চিত্র

কর্মীদের হাজিরা খাতায় চোখ ঝালদার পুরপ্রধানের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩০
Share: Save:

অনিশ্চয়তা কেটে যাওয়ায় বেতন পেতে শুরু করেছেন ঝালদার পুরকর্মীরা।

পুরপ্রধান এবং নির্বাহী আধিকারিকের মনোমালিন্যের জেরে নভেম্বর মাসের বেতন আটকে গিয়েছিল ঝালদার পুরকর্মীদের। তবে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের যুগ্ম সচিবের নয়া নির্দেশ অনুসারে পুরপ্রধান ও পুরসভার ফিনান্স অফিসার যৌথ ভাবে ‘চেক’ সই করার পরে কর্মীদের বেতন দেওয়া নিয়ে সমস্যা কাটে। পুরসভা সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত কর্মীরা তাঁদের বেতন পেতে শুরু করেছেন। তবে পুরভবনে গরহাজির থাকা নির্বাহী আধিকারিক রাজকুমার চৌধুরীর বেতন আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুরসভার বিরুদ্ধে। তাই কর্মীরা গত বৃহস্পতিবার থেকে তাঁদের পাওনা পেতে শুরু করলেও নভেম্বর মাসের বেতন হাতে পাননি ওই নির্বাহী আধিকারিক।

পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক অভিযোগ করেন, ‘‘পুরপ্রধান স্বেচ্ছাচারিতা চালাচ্ছেন। বেতন না পেলেও আমি এসডিও অফিসে যেমন কাজে যাচ্ছি, তেমনই যাব।’’ তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ মানতে চাননি পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার। তাঁর দাবি, ‘‘নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে অফিসে আসার পরে নির্বাহী আধিকারিক আর অফিসমুখো হননি। দিনের পর দিন কাজে না এলে তাঁর বেতন পাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।’’ যদিও নির্বাহী আধিকারিকের দাবি, নিরাপত্তার অভাব বোধ করাতেই তিনি পুরভবনে না গিয়ে এসডিও অফিসে যাচ্ছেন। তবে বিষয়টিকে মান্যতা দিতে নারাজ পুরপ্রধান। তাঁর মন্তব্য, ‘‘কে, কোথায় বসে কী কাজ করছেন, সেটা আমার জানার কথা নয়।’’

এসডিও (ঝালদা) সুশান্তকুমার ভক্ত বলেন, ‘‘এটা নির্বাহী আধিকারিকের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনি আমাকে কিছু জানাননি। তাছাড়া পুরো ব্যাপারটাই পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক্তিয়ারভুক্ত।’’

পুরপ্রধান এবং নির্বাহী আধিকারিকের ‘দ্বন্দ্ব’ না ঘুচলেও বেতন পেয়ে স্বস্তি পেয়েছেন পুরকর্মীরা। তাঁদের মধ্যে সুভাষ গড়াই, শ্রীকান্ত চন্দ্র প্রমুখ বলেন, ‘‘এ বার বেতন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় বেশ চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। সে ভয়টা কেটে গিয়েছে।’’ তবে আগামী দিনে যাতে এ রকম না হয় সেটা পুরপ্রশাসনের দেখা দরকার বলে জানাচ্ছেন পুরকর্মীরা।

ঝালদা পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, শুধু বেতন দেওয়াই নয়, সই-বিহীন অবস্থায় পড়ে থাকা বিভিন্ন প্রকল্পের চেকেও সই করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর গত মাসে একটি নির্দেশ জারি করে জানায়, এ বার থেকে নির্বাহী আধিকারিকের সঙ্গে ফিনান্স অফিসারের যৌথ ভাবে চেক সইকে মান্যতা দেওয়া হবে। এত দিন পুরপ্রধান এবং নির্বাহী আধিকারিক সই করতেন। তারপর থেকেই অচলাবস্থা শুরু হয় ওই পুরসভায়।

পুরপ্রধান জোর করে কিছু চেকে সই করতে তাঁকে বাধ্য করছেন অভিযোগ তুলে দফতরে আসা একপ্রকার বন্ধই করে দেন নির্বাহী আধিকারিক। এ নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগও জানান তিনি। অচলাবস্থার কথা পুরপ্রধানের পক্ষ থেকে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে জানানো হলে চলতি মাসের ৬ তারিখ রাজ্যের পুর দফতর একটি নির্দেশ জারি করে জানায়, যতক্ষণ নির্বাহী আধিকারিক গরহাজির থাকছেন, ততক্ষণ পুরপ্রধান ও ফিনান্স অফিসার চেকে সই করতে পারবেন। তবে নির্বাহী আধিকারিক কাজে যোগ দিলে ফের তিনি ও ফিনান্স অফিসার চেকে সই করবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Jhalda Municipality Wages
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy