Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
bankura

রক্ষীই বন্দির হাতে মাদক ‘তুলে দেন’

আদালত চত্বরে দেবব্রত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। বাঁকুড়া সংশোধনাগারে বন্দিদের হাতে মোবাইল ফোন, মাদকের জোগান বন্ধ করা যায়নি। কী ভাবে বন্দিদের হাতে মাদক আসছে, তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন কারা-কর্তারা। 

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২০ ০২:২০
Share: Save:

সংশোধনাগারের ভিতরে বন্দির হাতে মাদক তুলে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া কারারক্ষীকে আট দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল বাঁকুড়া আদালত। শুক্রবার মাদক সেবন করে এক বন্দির অচেতন হওয়ার ঘটনার পরে, ‘সিসিটিভি ফুটেজ’ দেখে কারারক্ষীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। শনিবার ভোরে অভিযুক্ত কারারক্ষী দেবব্রত ভৌমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার তাঁকে বাঁকুড়া আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত চত্বরে দেবব্রত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
বাঁকুড়া সংশোধনাগারে বন্দিদের হাতে মোবাইল ফোন, মাদকের জোগান বন্ধ করা যায়নি। কী ভাবে বন্দিদের হাতে মাদক আসছে, তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন কারা-কর্তারা।

ডিআইজি কারা (‌মেদিনীপুর রেঞ্জ) শুভব্রত চট্টোপাধ্যায় এ দিন দাবি করেন, “সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ় দেখে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, দেবব্রতই ওই বন্দিকে মাদক এনে দিয়েছিলেন। ওই কারারক্ষীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়া বন্দিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন।’’

মাদক সেবনে অসুস্থ হয়ে পড়া বিচারাধীন বন্দি সুমন সিংহ ওরফে মোটা রাজা খড়্গপুরের রেল-মাফিয়া শ্রীনু নায়ডু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, সুমনের সেলে তল্লাশি চালিয়ে গাঁজা ও গাঁজার ছিলিম-সহ বিভিন্ন নেশার সামগ্রী ও দু’টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “অভিযুক্ত কারারক্ষীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংশোধনাগারে মাদক সরবরাহে আর কেউ জড়িত রয়েছেন কি না ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, তা জানার চেষ্টা করা হবে।”

শ্রীনু নায়ডু হত্যাকাণ্ডের মামলায় আর এক অভিযুক্ত সঞ্জয় প্রসাদকেও বাঁকুড়া সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল। গত অক্টোবরে সংশোধনাগারের সেল থেকেই ফোন করে খড়্গপুরের ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে তোলা আদায়ের অভিযোগ ওঠে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে, বাঁকুড়া সংশোধনাগারের নিরাপত্তায় ফাঁক-ফোকর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বর্তমানে সঞ্জয় অন্য জেলে।

সুমনকে বাঁকুড়া সংশোধনাগারে আনা হয় মাস তিনেক আগে। সূত্রের খবর, প্রথম দিনেই তল্লাশিতে তাঁর কাছ থেকে কিছু পরিমাণ গাঁজা পাওয়া যায়। সে জন্য বাঁকুড়া সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ সুমনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন। সংশোধনাগার সূত্রের খবর, সুমনকে তিন নম্বর সেলে একা রাখা হয়েছিল। শুক্রবার সকাল ৭টা নাগাদ কারারক্ষীদের নজরে আসে, সুমন অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তার মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বার হচ্ছে। দ্রুত তাকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে পাঠানো হয়।

কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতাল থেকে জানা যায়, অতিরিক্ত পরিমাণে মাদক সেবনেই ওই বন্দি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পরেই বাঁকুড়া সংশোধনাগারের সুপারিন্টেন্ডেন্ট বিশ্বরূপ বিশ্বাস দ্রুত ওই সেলের সিসিটিভি-র ফুটেজ় খতিয়ে দেখেন। কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা দেখেন, বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ২টো নাগাদ দেবব্রত সুমনের সেলে মাদক এনে দিচ্ছেন। দেবব্রতই ওই সেলের পাহারায় ছিলেন। পরে সেই মাদক নিয়ে সুমন সেলের বাথরুমে চলে যান। সেখান থেকে ধোঁয়া ওড়ার দৃশ্যও সিসিটিভি-র ফুটেজ়ে ধরা পড়েছে। রাতে বেশ কয়েকবার সুমনকে নেশা করতে দেখা গিয়েছিল। পরে তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন।

সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের দাবি, অন্য বন্দিরাও নেশা করছেন কি না, বা লুকিয়ে ফোন ব্যবহার করছেন কি না, তা দেখা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Bankura Prison
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy