দোল, হোলির দিনে ধান কেনার অভিযোগে ২২টি চালকলের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
বুধবার মন্ত্রী বলেন, ‘‘বাঁকুড়া, বীরভূম, হুগলি এবং পুরুলিয়ায় ওই চালকলগুলি গত ৪ থেকে ৮ মার্চের মধ্যে প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার কুইন্টাল ধান কিনেছে চাষিদের কাছ থেকে। ধানের দাম বাবদ তারা চাষিদের যে চেক দিয়েছে তার মধ্যে ৪০টি বাউন্স করেছে। এখন সেই সব চাষিদের কাছ থেকে বাউন্স করা চেক ফিরিয়ে নিয়ে নতুন করে চেক দেওয়া হচ্ছে।’’
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই চেক বাউন্সের ঘটনার পরেই নজরে আসে পুরো বিষয়টি। তখনই দেখা যায়, ওই সব চালকল দোল ও হোলির দিনে ধান কিনেছে। সাধারণত, দোল ও হোলির দিন এ রাজ্যে ধান-চাল চাষিরা বিক্রি করেন না। তাই খাদ্য দফতরের ধারণা, ওই চালকলগুলি কম দামে আগে থেকে কোনও ভাবে ধান কিনে রেখে ছিল। ছুটির দিনগুলিতে তারা সেই ধান বেশি দামে খাদ্য দফতরকে বিক্রি করেছে। চাষিদের কাছ থেকে না কি ফড়েদের থেকে এই ধান কেনা হচ্ছে, তা-ও দেখা হবে বলে খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দোলের দিনে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ ধান কেনায় আমাদের সন্দেহ হয়েছে। চাষিদের কাছ থেকে ওই ধান কেনা হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে চালকলগুলিকে নির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে বলা হয়েছে চালকলগুলিকে। তা না দেখাতে পারলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
চেক বাউন্স করার অভিযোগ অবশ্য অন্য জেলাতেও উঠেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগমের (ইসিএসসি) কাছে ধান বিক্রি করে টাকা মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকশো চাষি। ইসিএসসি-র তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, শিবির চলাকালীন, বিশেষত ৪ থেকে ৯ মার্চ যে ধান কেনা হয়েছে তা চাষিরা নন, ফড়েরা বিক্রি করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার তদন্ত চলছে। তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত টাকা দেওয়া হবে না।
খাদ্যমন্ত্রী জানান, অন্য জেলাতেও দোল বা হোলির সময়ে ধান কেনার ঘটনা ঘটেছে কি না, খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে জেলা খাদ্য নিয়ামকদের। বেনিয়ম ঘটে থাকলে খাদ্য দফতর চাষিদের প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দেবে। খাদ্য দফতরের কাছে চালকলগুলির ‘সিকিউরিটি মানি’ বাবদ যা জমা রয়েছে, সেখান থেকে খাদ্য দফতর টাকা কেটে নেবে। চালকল মালিকদের অনেকে অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, শিবির হয়েছে সরকারি সংস্থার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে। তাই চেক বাউন্স বা দোলের সময়ে ধান কেনার জন্য চালকল দায়ী নয়। বীরভূমের চালকল মালিক সংগঠনের সভাপতি দীপক প্রামাণিক পাল্টা দাবি করেন, ‘‘এর পরেও রাজ্য সরকার চালকলের দেওয়া লেভির চালের টাকা আটকে রেখে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত শেষ করে টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’’ হুগলির এক চালকল মালিক আবার এই প্রসঙ্গে দাবি করেন, ‘‘এই মরসুমে ধান চাষিদের পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে তাঁরা উৎসবের দিন হিসেবে কিছু রাখেননি। ওই দিন যে সব জায়গায় ধান বিক্রির কথা ছিল কাজ হয়েছে। হুগলিতে ইতিমধ্যে ছ’টি চালকলে তদন্ত করে সরকারি স্তরে দেখা গিয়েছে সেখানে ওই নির্দিষ্ট দিনে কাজ হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy