কাউন্সিলর খুনের প্রতিবাদে ঝালদার মানুষকে রং না খেলার আর্জি জানিয়েছিল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার শহরে মাইকে প্রচারও হয়। শুক্রবার দিনভর কার্যত সুনসান রইল শহরের রাস্তাঘাট। শহরের কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে রং খেলা হলেও, অধিকাংশ এলাকার পথঘাটই ছিল ফাঁকা। নিহত কাউন্সিলরের বাড়ি যেখানে, সেই আনন্দবাজার এলাকা ছিল থমথমে।
দোলের সকালে জনশূন্য ঝালদার রাস্তা। নিজস্ব চিত্র
কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের ঘটনার তদন্তে দোলের দিন বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করল পুলিশ। শুক্রবার দিনভর ঝালদা থানায় এই জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চলে। ছিলেন আইজি (বাঁকুড়া রেঞ্জ) সুনীল চৌধুরী, পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন এবং ঘটনার তদন্তে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) সদস্যেরা। তবে কাদের জেরা করা হয়েছে, সে বিষয়ে জেলা পুলিশের তরফে কোনও তথ্য মেলেনি। এ দিনই নিহত কাউন্সিলর তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দুর ফোন তদন্তের জন্য নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
১৩ মার্চ বিকেলে রাস্তায় আততায়ীদের গুলিতে খুন হন ঝালদার সদ্য নির্বাচিত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন। পুলিশ এক প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে। পরে নিহতের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু আইসি (ঝালদা) সঞ্জীব ঘোষ, নিহতের ভাইপো তথা পুরভোটে তপনের বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী দীপক কান্দু ও তাঁর বাবা নরেন কান্দু-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সে অভিযোগটি মূল অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে দীপককে। ওই অভিযোগপত্রে নাম থাকা কয়েক জনকেই এ দিন জেরা করা হয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি।
খুনের ঘটনার পরে কয়েকটি ‘অডিয়ো ক্লিপ’ (আনন্দবাজার সেগুলির সত্যতা যাচাই করেনি) ‘ভাইরাল’ হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, নিহত তপনকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানোর জন্য তাঁর ভাইপো মিঠুনকে ঝালদার আইসি যে ‘চাপ’ দিচ্ছিলেন, তার ‘নমুনা’ রয়েছে ওই ‘ক্লিপ’গুলিতে। এ দিন মিঠুনের দাবি, ‘‘আমার সঙ্গে ঝালদার আইসি-র কথোপকথনের অডিয়ো ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছিল। পুলিশ তদন্তের স্বার্থে আমার ফোনটি নিয়েছে। আমাকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। যা জানানোর, জানিয়েছি।’’ আইসি-র সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
কাউন্সিলর খুনের প্রতিবাদে ঝালদার মানুষকে রং না খেলার আর্জি জানিয়েছিল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার শহরে মাইকে প্রচারও হয়। শুক্রবার দিনভর কার্যত সুনসান রইল শহরের রাস্তাঘাট। শহরের কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে রং খেলা হলেও, অধিকাংশ এলাকার পথঘাটই ছিল ফাঁকা। নিহত কাউন্সিলরের বাড়ি যেখানে, সেই আনন্দবাজার এলাকা ছিল থমথমে।
শহরের বাসিন্দা শরৎ কান্দুর কথায়, ‘‘এলাকায় এ রকম একটা খুনের ঘটনার পর থেকে মন ভাল নেই। তাই পাড়ায় সবাই মিলে ঠিক করা হয়, এ বার দোলের উৎসব বন্ধ থাক।’’ শহরের বিরসা মোড়ে মোবাইলের যন্ত্রাংশের দোকান খুলে বসেছিলেন সাঙ্কি সাউ। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণত দোলের দিন সকাল থেকে রং নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়ি। এ বার রং খেলব না, তাই সকাল থেকে দোকানেই আছি।’’ কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতোর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ঝালদার মানুষ শান্তিপ্রিয়। এই খুনের ঘটনা তাঁদের আতঙ্কিত করেছে। শহরের মানুষ আমাদের আবেদনে সাড়া দেওয়ায় কৃতজ্ঞ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy