Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

আন্তরিকতায় সাফল্য, দাবি বাঁকুড়ার ২ স্কুলের

অপর্যাপ্ত পরিকাঠামো। কিন্তু হাল ছাড়েননি শিক্ষকেরা। তাতেই সাফল্য মিলেছে বলে দাবি বাঁকুড়ার সিমলাপাল মদনমোহন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক শ্যামরঞ্জন সিংহ এবং বাঁকুড়া বঙ্গ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিমেষ চৌধুরীর।

বাঁকুড়া বঙ্গ বিদ্যালয় ও সিমলাপাল মদনমোহন উচ্চবিদ্যালয়। নিজস্ব চিত্র

বাঁকুড়া বঙ্গ বিদ্যালয় ও সিমলাপাল মদনমোহন উচ্চবিদ্যালয়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া ও সিমলাপাল শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০ ০২:৫৫
Share: Save:

অপর্যাপ্ত পরিকাঠামো। কিন্তু হাল ছাড়েননি শিক্ষকেরা। তাতেই সাফল্য মিলেছে বলে দাবি বাঁকুড়ার সিমলাপাল মদনমোহন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক শ্যামরঞ্জন সিংহ এবং বাঁকুড়া বঙ্গ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিমেষ চৌধুরীর। এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরনোর পরে, জেলার শিক্ষামহলের চর্চায় উঠে এসেছে এই দু’টি স্কুলের নাম। সম্ভাব্য মেধাতালিকায় এগিয়ে রয়েছেন সিমলাপাল মদনমোহন উচ্চবিদ্যালয়ের ১০ জন ও বাঁকুড়া বঙ্গ বিদ্যালয়ের আট জন পড়ুয়া।


গত কয়েকবছর ধরেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় সিমলাপাল মদনমোহন উচ্চবিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নাম দেখা যাচ্ছে। এই স্কুল থেকেই ২০১৩ সালে রামানুজ সিংহ মহাপাত্র উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যের মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছিলেন। তার পরে ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ সালেও উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতীর তালিকায় থেকেছেন স্কুলের অনেকে।


স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামরঞ্জন সিংহ বলেন, “ধারাবাহিক ভাবে স্কুল সাফল্য পাচ্ছে ঠিকই। তবে এ বার একেবারে দশ জন পড়ুয়ার উঠে আসা একটা অন্য মাত্রা দিয়েছে। স্কুলের মানোন্নয়নের জন্য সমস্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের এক যোগে প্রয়াস সফল হল।” তিনি জানান, স্কুলে এখন ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১,৬২৬। শিক্ষক রয়েছেন ৩৭ জন। স্কুলের একটি ঘরেই চলে জীববিদ্যা, পদার্থবিদ্যা, ও রসায়নের ‘ল্যাবরেটরি’। ফলে সমস্ত পড়ুয়াকে ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যেতে সমস্যা হয়।


পরিকাঠামোগত এই সব সমস্যা নিয়েও কী ভাবে সাফল্য আসছে? শ্যামরঞ্জনবাবু বলেন, “রামানুজের সাফল্যের পরেই স্কুলের নতুন দিগন্ত খুলে যায়। জঙ্গলমহলের ছেলেমেয়েরাও যে রাজ্যের শিক্ষা-মানচিত্রে দাগ কাটতে পারে, সেটা রামানুজই দেখিয়ে গিয়েছে। তার পরে শিক্ষকেরাও আরও মরিয়া হয়েছেন পড়ুয়াদের সাফল্যের জন্য।” তিনি জানান, প্রশ্নের উত্তর কী ভাবে লেখা উচিত, পড়াশোনাকে আরও সহজ ভাবে নেওয়ার পদ্ধতি, বাড়িতে কী ভাবে পড়াশোনা করতে হবে— এই সব বিষয়ে শিক্ষকেরা পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেন। এ বারের উচ্চমাধ্যমিকে ওই স্কুলের কৃতী ছাত্রী মৌ দাস মহন্ত বলেন, “স্কুলের শিক্ষকেরা খুবই আন্তরিক। পড়াশোনার বিষয়ে কোথাও খামতি দেখতে পেলেই শুধরে দেন। এটাই এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।”
বাঁকুড়ার বঙ্গ বিদ্যালয় জেলার অন্যতম প্রাচীন স্কুল। জেলার বাইরের বহু পড়ুয়াও এখন এখানে ভর্তি হতে আসে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় জায়গা পেয়েছেন এই স্কুলের পড়ুয়ারা। প্রধান শিক্ষক অনিমেষ চৌধুরী বলেন, “পড়ুয়াদের মেধা ও অভিভাবকদের সচেতনতার পাশাপাশি, ছাত্রছাত্রীদের সাফল্যের পিছনে স্কুলেরও একটা দায়িত্ব থাকে। আমরা সেই দায়িত্ব পালনে কোথাও খামতি রাখতে চাই না।” স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১,৮০০। শিক্ষক রয়েছেন ৩০ জন। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যা ও কম্পিউটারের ‘ল্যাবরেটরি’ থাকলেও জায়গা খুবই সংকীর্ণ। তাই ছাত্রছাত্রীদের ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে পরীক্ষাগারে যায়। স্কুলের ক্লাসঘরও অপ্রতুল।
অনিমেষবাবু বলেন, “পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জোগানো, পরিশ্রম করে তাদের খামতি মেটানো এবং সজহ-সরল ভাবে প্রতিটি বিষয় বোঝানোর উপরে আমরা জোর দিই। এ ছাড়া নিয়মিত ‘কাউন্সেলিং’ করে থাকি।’’ বঙ্গ বিদ্যালয়ের কৃতীদের মধ্যে লোপামুদ্রা পাত্র বলেন, “টেস্ট পরীক্ষার পরে, স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে ‘ডাউট ক্লিয়ারিং ক্লাস’ হয়। আমি সে ক্লাসে এ বার যোগ দিতে পারিনি। তাই আলাদা ভাবে আমাকে স্কুলে ডেকে সেই ক্লাস করিয়েছেন শিক্ষকেরা। এতেই বোঝা যায়, তাঁরা কতটা আন্তরিক।”
জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) গৌতমচন্দ্র মাল বলেন, ‘‘দু’টি স্কুল নতুন করে শিক্ষাক্ষেত্রে ছাপ ফেলেছে। পরিকাঠামোগত সমস্যার বিষয়গুলি আমাদের নজরে আছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

hs exam 2020 education school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy