• সরু রাস্তা সাঁইথিয়ার একটি বড় সমস্যা। শহরজুড়ে রাস্তার দু’পাশে গজিয়ে উঠেছে অস্থায়ী দোকান। বিশেষ করে রেলসেতুর পশ্চিমে যেভাবে রাস্তা দখল হয়ে গেছে। তা দখলমুক্ত হওয়া প্রয়োজন। একই অবস্থা বাসস্ট্যান্ড থেকে রেল স্টেশন যাওয়ার রাস্তার। বর্ষায় অধিকাংশ রাস্তা জলকাদায় ভরে থাকে। যা অনেক গ্রাম্য পথকে হার মানায়। পথে পা রাখা দায়। কবে মুক্তি মিলবে?
সৌমী দাস, ৮ নম্বর ওয়ার্ড
পুরপ্রধান: রাস্তার সমস্যা বাস্তব। সেতুর পশ্চিমদিকের রাস্তা দখল হয়ে যাওয়ায় সত্যিই যানজট সমস্যা বেড়েছে। তবে শুধু ওই রাস্তা নয়, অন্যান্য যেসব রাস্তা দখল হয়েছে সে সব রাস্তাতেও একই সমস্যা। আসলে আমরা পুর ক্ষমতায় আসার অনেক আগে বাম আমল থেকেই শহরের রাস্তা দখল হয়েছে। পশ্চিম থেকে পূর্বে চলে যাওয়া রাস্তাটি পূর্ত দফতরের। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছি। রেল সেতু থেকে পশ্চিমের হাটতলা-সহ সমস্ত রাস্তা জনস্বার্থে দখল মুক্ত করার চেষ্টা চলছে। গত পুজোর আগে শহরের সমস্ত রাস্তা সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পাইপ লাইনের কাজ করা হয়েছে। সে কাজ প্রায় শেষের দিকে। জল চালুর পর পাইপ লাইনগুলি পরীক্ষা করে দেখা হবে। তারপর ফের রাস্তা সংস্কার করা হবে।
• এই শহরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার যথেষ্ট সুযোগ আছে। সেটা হলে শহরের আর্থ-সামাজিক চেহারাটাই বদলে যাবে। সতীপিঠ নন্দিকেশ্বরী মন্দিরতো আছেই। সেই সঙ্গে ময়ূরাক্ষী নদী আছে। এখান থেকে মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারি, ঝাড়খণ্ডের ম্যাসানজোড়, ত্রিকূট পর্বত, দেউঘরে যাওয়ার সুবিধা রয়েছে। তাহলে অপেক্ষা কেন?
মানিক রায়, ৯ নম্বর ওয়ার্ড
পুরপ্রধান: ইচ্ছা থাকলেও জায়গার অভাবে অনেক কিছু করা যায় না। নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে একেবারে পূর্বের শেষ পর্যন্ত ওই পাড় খালি করে রাস্তা, আলো, গাছ, বসার ব্যবস্থা-সহ সাজানোর ও পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে হবে। এ সবের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। শহরকে পরিস্কার রাখতে শরের বাসিন্দাদেরও দায়িত্ব নেওয়া উচিৎ। সকলের চেষ্টাতেই সুনাম অর্জন করা যায়।
• এ শহরে যুব সমাজের একাংশ মদ ও মাদকের নেশায় ডুবে যাচ্ছে। প্রায় সন্ধেতে নিমতলায় এলাকায় মদের ঠেক বসে। ওই পথে যাতায়াত করা দায়। বিশেষ করে মহিলাদের। কিন্তু উপায় নেই, ওই পথ দিয়েই যাতায়াত করতে হয় সকলকে। শুধু নিমতলা নয়, শহরের বিভিন্ন স্থানে মদ-সহ নানারকম নেশার ঠেক বসে। পুরসভা ব্যবস্থা নিলে ভাল হয়।
সোমনাথ দত্ত, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড
পুরপ্রধান: যে কোনও মাদকই সমাজের অভিশাপ। এই শহরও তা থেকে মুক্ত নয়। নিজের নিজের এলাকায় দেখার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নির্দেশ দেওয়া আছে। পুর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের উদ্যোগে ৮ নম্বর ওয়ার্ড সহ বিভিন্ন এলাকায় বহুবার মাদক বিরোধী অভিযানও চালানো হয়েছে। সচেতনতার জন্য নানা ভাবে প্রচার করা হচ্ছে। কিছুটা হলেও ফল মিলেছে। নিমতলার মদের দোকানটি বহু পুরনো। ওখান থেকে মদের দোকান সরানোর ব্যাপারে ইতিপূর্বে আমাদের কাছে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আবগাড়ি দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে।
• শহরের জলের সমস্যা বহু দিনের। পুরসভা পরিচালিত যে ট্যাপকলে দিনে দু’বার জল দেওয়া হয়, তা পর্যাপ্ত নয়। অন্তত তিনবার এবং কম করে দু’ঘন্টা দেওয়া উচিৎ। প্রতি বর্ষায় নদীতে জল বাড়লে কলের জল কাদাঘোলা। যা কোনওভাবেই পান করা বা ব্যবহারের উপযুক্ত নয়। জল দেওয়ার আগে তা শোধন করা উচিৎ। নইলে রোগ ছড়াবে।
রিয়া মণ্ডল, ১১ নম্বর ওয়ার্ড
পুরপ্রধান: প্রথমত বলি, আগের মতো জলের সমস্য নেই। জল সমস্যা সমাধানে ট্যাপ কলের পাশাপাশি শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডের পাড়ায় পাড়ায় একাধিক গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। পরিকাঠামোর অভাবে ইচ্ছা থাকলেও ট্যাপকলে তিনবার জল দেওয়া যায় না। দীর্ঘদিন আগে নদীগর্ভে বসানো পাম্পে পিউরিফিকেশন সিস্টেম নেই। তাই বর্ষায় ঘোলা জলের সমস্যা রয়ে গেছে। তবে নতুন প্রকল্প চালু হলে সমস্যা থাকবে না।
• সম্প্রতি মোহনবাগান মোড় থেকে হাটতলা যাওয়ার রাস্তার দক্ষিণ দিকের নর্দমার সংস্কার করেছে পুরসভা। সেই নর্দমার উপর স্লাব ঢেলে কার্যত নর্দমার গতি স্তব্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়দের কেউ কেউ। ওই চওড়া নর্দমা দক্ষিণে হাটের রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়া তুলনায় অনেক ছোটো নর্দমায় মিশেছে। তাতে বড় নর্দমার জল ও হাটের মাছ বাজারের নোংরা জল এসে পড়ছে। কখনও নর্দমা ছাপিয়ে নোংরা জল রাস্তায় যায়। নোংরা জলের দুর্গন্ধে প্রাণ ওষ্ঠাগত। নজর দিলে ভাল হয়।
উজ্জ্বল ঘোষ, ১০ নম্বর ওয়ার্ড
পুরপ্রধান: মোহনবাগান মোড় থেকে হাটতলা পর্যন্ত নর্দমার উপর স্লাব বসিয়ে তা কার্যত বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ আগেও পেয়েছি। এ ব্যাপারে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে স্লাবগুলি ভেঙে দেওয়া হবে। হাটতলা মোড় থেকে দক্ষিণে যাওয়া যে ছোটো নর্দমার সমস্যার কথা বললেন তা দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
• অনুষ্ঠানের মঞ্চ বলতে শহরের পশ্চিমে পুরসভা সংলগ্ন রবীন্দ্রভবন। যদি পূর্ব প্রান্তে একটি আধুনিক মঞ্চ গড়ে তোলা যায়, তাহলে পূর্ব পাড়ের নাট্য ও সংস্কৃতি প্রেমীদের সুবিধা হয়।
মৌসুমী মিশ্র, ৫ নম্বর ওয়ার্ড
পুরপ্রধান: বিষয়টা পুর কর্তৃপক্ষের মাথায় আছে। জায়গার অভাবে এতদিন তা করা যায়নি। ৫ নম্বর ওয়ার্ডেরই পুরনো ডাকবাংলা পাড়ায় জেলা পরিষদের জায়গা আছে। আমরা সংস্কৃতি মঞ্চ গড়ার জন্য জেলা পরিষদের কাছে আবেদন জানিয়েছি। জেলা পরিষদ রাজি হয়েছে।
• একমাত্র রাস্তার চাপ কমাতে একটি বাইপাস রাস্তা হওয়া বিশেষ প্রয়োজন। যে হারে জনসংখ্যা ও গাড়ির চাপ বাড়ছে তাতে ভাসা ব্রিজটিকে স্থায়ী ব্রিজ করা দরকার। আর রেলসেতু সম্প্রসারণের কি হল?
সমীর বিত্তার, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড
পুরপ্রধান: ইতিমধ্যে বাইপাস রাস্তার কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে সমস্যা হল মাঝে রেল লাইন। রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে একটা কিছু ব্যবস্থা করবই। রেলসেতু সম্প্রসারণের ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি এখন সম্পূর্ণ রেল কর্তৃপক্ষের।
• শহরে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আসেন। কিন্তু পথে কোন়ও শৌচাগার না থাকায় অনেককেই সমস্যায় পড়তে হয়। যদি বাসস্ট্যান্ড, চৌরাস্তা মোড়, ইউনিয়ন বোর্ড, পালির মোড়, কলেজের কাছে শৌচাগার করলে অনেকেই উপকৃত হয়। এখানে সোমনাথ দত্ত রয়েছেন। তিনি প্রস্তাব বিএসএনএল অফিস লাগোয়া উত্তর পশ্চিম কোণে করা যাতে পারে।
কাজী মঞ্জুর হোসেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ড
পুরপ্রধান: টয়লেটের বিষয়টি অনেক দিন থেকেই পুর কর্তৃপক্ষের মাথায় আছে। জায়গা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা করা হবে। সোমনাথবাবুর প্রস্তাবও খতিয়ে দেখছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy