পুরুলিয়া হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
এক ডাক্তারের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ায় আগেই বন্ধ হয়েছে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের আলট্রাসোনোগ্রাফি বিভাগ। দু’জন রোগীর সংক্রমণ ধরা পড়ায় সোমবার থেকে ‘আইসিইউ’ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর। ‘স্যানিটাইজ়’ করার পরে, ফের ওই বিভাগ খোলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে এ দিনই হাসপাতালের সুপার সুকোমল বিষয়ী দাবি করেন, আইসিইউ খোলার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। যে কোন সময়েই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে।
জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে আইসিইউ বিভাগে ভর্তি থাকা হৃদরোগে আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যুর পরে, তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। তার পরে টানা কয়েক দিন ওই বিভাগ বন্ধ ছিল। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগীর পরিজনদের রাতে থাকার জন্য একটি ভবন রয়েছে। গত সপ্তাহে সেটির দু’টি তলে ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’ চালু হয়েছে। দোতলায় পুরুষ ও মহিলাদের জন্য ৩০টি করে মোট ৬০টি শয্যা রয়েছে। ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’-এর আশঙ্কাজনক রোগীদের জন্য অক্সিজেনের ব্যবস্থা-সহ তিনটি শয্যার পৃথক ওয়ার্ড চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে ওই ভবনেরই এক তলায়। কিন্তু হাসপাতাল সূত্রের খবর, যে পাইপলাইনের মাধ্যমে রোগীদের শয্যার কাছে অক্সিজেন পৌঁছয়, সেটির যন্ত্রাংশ না মেলায় শয্যাগুলি চালু করা যায়নি।
হাসপাতালের সুপার সুকোমলবাবু জানান, গত শনিবার ওই ভবনের দোতলায় ভর্তি থাকা দু’জন রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের নিয়ে আসা হয় আইসিইউ-তে। ভর্তির আগে দু’জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করানো হয়েছিল ‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট’ দিয়ে। তখন রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসে। পাশাপাশি, আরটি-পিসিআর যন্ত্রে পরীক্ষা করানোর জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছিল। শনিবার রাতেই এক জনের রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। দ্রুত তাঁকে বাঁকুড়ার ওন্দার কোভিড-হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সোমবার সকালে অন্য রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার পরেই তাঁর ‘পজ়িটিভ’ রিপোর্ট এসে পৌঁছয়।
সোমবার রোগীর মৃত্যুর পরেই আইসিইউ ফাঁকা করে দেওয়া হয়। সেখানে চার জন ভর্তি ছিলেন। ‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট’ দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসায় সরানো হয় তাঁদের। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সাবধানতার সঙ্গে মৃতদেহ প্লাস্টিকে মুড়ে মর্গে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের সুপার সুকোমলবাবু বলেন, ‘‘আমরা গোটা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।’’
এ দিকে, পুরুলিয়া জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত জেলায় ১৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। রবিবার রাত পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৬৩। রবিবার নতুন করে ৬২ জন আক্রান্তের সন্ধান মেলে। এখনও জেলায় যা এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে সব থেকে বেশি। তিনটি পুরসভার মধ্যে পুরুলিয়া ও কুড়িটি ব্লকের মধ্যে জয়পুর শীর্ষে রয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর বলেন, ‘‘পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলেই আক্রান্তের খোঁজ বেশি করে মিলেছে। রবিবার ১,৯৫৪ জনের পরীক্ষা করানো হয়েছে। এই মরসুমে এক দিনে যা সব থেকে বেশি।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যে সমস্ত ব্লকে এত দিন সংক্রমণ কম ছিল, সেখানেও এখন বেশি করে সংক্রমণের খোঁজ মিলছে। এই পরিস্থিতিতে, পরীক্ষার মাধ্যমে আক্রান্তদের চিহ্ণিত করে তাঁদের আলাদা করা এবং কঠোর ভাবে সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy