ধস্ত: ভেঙে পড়েছে মাটির দোতলা বাড়ি। শুক্রবার বাঁকুড়ার জয়পুরের সুপুর গ্রামে। ছবি: শুভ্র মিত্র
মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল দু’ভাইয়ের। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকের সুপুর গ্রামের নামোপাড়ার ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতেরা হলেন সন্তোষ বিশ্বাস (৫৬) ও তাঁর ভাই বিকাশ বিশ্বাস (৫২)। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁদের বাবা অনিলচরণ বিশ্বাস বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
সলদা পঞ্চায়েতের সুপুর গ্রামে বিশ্বাস পরিবারের পাশাপাশি দু’টি বাড়ি। একটি পাকা, একটি কাঁচা। শুক্রবার গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার ধারে টিনের চালের মাটির দোতলা বাড়িটি পুরোপুরি ধসে পড়েছে। পড়শি বিপ্লব কুণ্ডু ও অমিতাভ রাহা জানান, বহু প্রাচীন মাটির বাড়িটিতে থাকতেন রাজগ্রাম শশীভূষণ রাহা ইনস্টিটিউশনের প্রাক্তন শিক্ষক, নব্বই বছরের অনিলচরণ বিশ্বাস।
ধসে পড়া বাড়িটির প্রতি তলায় দু’টি করে ঘর ছিল। পড়শিদের কয়েক জনের দাবি, বাড়ি থেকে মাটি ঝরে পড়ত। তাঁরা অনেক বার অনিলবাবুকে পাকা বাড়িতে চলে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি ভিটে ছাড়তে চাইতেন না। অনিলবাবুর তিন ছেলে। বড় ছেলে সন্তোষ বেসরকারি সংস্থায় চাকরির সূত্রে বর্ধমানে থাকতেন। মেজ ছেলে পরিতোষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী। ছোট ছেলে বিকাশ গ্রামেই ব্যবসা করতেন।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে পাকা ঘরের এক তলায় ছিলেন বিকাশবাবুর স্ত্রী ও মেয়ে। দোতলায় পরিতোষবাবু। মাটির বাড়ির এক তলায় বিকাশের সঙ্গে ছিলেন অনিলবাবু। দোতালায় ছিলেন সন্তোষবাবু, তাঁর স্ত্রী চিত্রাদেবী ও কলেজ পড়ুয়া ছেলে সৈকত। সৈকত জানান, ঠাকুরদাকে দেখতে তাঁরা প্রায়ই গ্রামের বাড়িতে আসতেন। তেমনই এসেছিলেন মঙ্গলবার।
চিত্রাদেবী বলেন, ‘‘রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে শুয়ে পড়েছিলাম। ঘরটা দুলে উঠতেই ঘুম ভেঙে যায়। ছেলেকে নিয়ে দ্রুত নীচে নেমে আসি।’’ তিনি জানান, অসুস্থ বাবাকে বের করে আনতে গিয়েছিলেন সন্তোষবাবু ও বিকাশবাবু। সেখানেই চাপা পড়েন। আওয়াজ শুনে ছুটে আসেন পড়শিরাও। মাটি কাটার দু’টি যন্ত্র জোগাড় করে আনা হয়। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ, দমকল কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধারকাজে নামেন। তিন জনকে উদ্ধার করে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে জানা যায়, সন্তোষবাবু ও বিকাশবাবুর মৃত্যু হয়েছে।
সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা কমিটির সদস্য ষড়ানন পাণ্ডে জানান, দীর্ঘদিন সলদা পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন অনিলবাবু। এবিটিএ-র প্রাক্তন জেলা সম্পাদক ও বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় কাউন্সিলের সভাপতিও ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘অনিলবাবু জয়পুর থানায় আমাদের দলের এক জন পুরোধা ব্যক্তিত্ব। দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসুন, সেটা চাই সবাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy