বোলপুরের হাসপাতালে বেডে ঠাসাঠাসি। । নিজস্ব চিত্র
জ্বর ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ নিয়ে শিশু ভর্তির সংখ্যা উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে বীরভূমের হাসপাতালগুলিতে। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অবস্থা ততটা খারাপ না হলেও বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার অধীনে থাকা বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল ও সিউড়ি জেলা হাসপাতালের শিশু বা ‘পেডিয়েট্রিক’ ওয়ার্ডে উপচে পড়ছে শিশু রোগী। সিউড়ি হাসপাতালে সন্ধান মিলেছে এক করোনা আক্রান্ত ৫৬ দিনের শিশুরও। তবে, তার অবস্থা স্থিতিশীল বলেই চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্যকর্তা ও চিকিৎসকদের মত, অধিকাংশই ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত। তবে, উত্তরবঙ্গে একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে কয়েক জন শিশুর মৃত্যু এবং কোভিডের সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা থাকায় বিষয়টিকে হালকা ভাবে নিচ্ছেন না স্বাস্থ্যকর্তারা। সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা ও বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার অধীন বিভিন্ন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রচুর সংখ্যক শিশুকে রেফার করা হয়েছে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল ও সিউড়ি জেলা হাসপাতালে। পাশাপাশি বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসা শিশুদেরও অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে বোলপুর, সিউড়িতে এখনই শিশু-রোগীর চাপে নাকাল হাসপাতাল।
ছবিটা বেশি উদ্বেগজনক বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। সূত্রের খবর, ওই হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দ ৫০টি বেডে ভর্তি ১৫০ জন শিশু। ঠাসাঠাসি করে রাখা শিশুদের অধিকাংশই জ্বরে আক্রান্ত। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ৬০ জন শিশু নতুন করে ভর্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু। যদিও হাসপাতাল সূত্রে দাবি, শিশু ভর্তির সংখ্যাটা ৮০-র কিছু বেশি। শয্যা নিয়ে পরিস্থিতি খুব ভাল নয় জেলা হাসপাতালেও। শিশুদের জন্য ৫২টি বেড রয়েছে এখানে। কিন্তু, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে প্রতিদিন ভর্তি করাতে হচ্ছে ৫০-এর বেশি শিশুকে।
জেলা হাসপাতাল সুপার শোভন দে মানছেন, শিশু ভর্তির সংখ্যা গত কয়েক দিনে বেড়েছে। তবে উদ্বেগ থেকেও অনেক অভিভাবক তাঁদের শিশুদের এখানে ভর্তি করাচ্ছেন। জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, ‘‘চরম সঙ্কটজনক অবস্থা না-হলে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে পরিকাঠামোগত সমস্যা নেই। রয়েছে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবায়োটিক, ছোটদের জন্য নেবুলাইজ়ার। তবে হাসপাতালে ‘পেডিয়েট্রিক’ভেন্টিলেটর নেই।’’
বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘কোনও রকম ঝুঁকি না-নিয়ে উপসর্গ বুঝে ভর্তি থাকা শিশুদের কোভিড, ম্যালেরিয়া এনসেফ্যালাইটিস-সহ সব পরীক্ষা করানো হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত ভাইরাল ফিভার ছাড়া অন্য কিছু মেলেনি।’’ রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, ‘‘রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে শুক্রবার বিভিন্ন ব্লক থেকে ৩২ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। তবে, অবস্থা এখনও উদ্বেগজনক নয়।’’
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এই সময়টায় অন্য বছরও ভাইরাস ঘটিত কারণে বাচ্চারা সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত হয়। এ বার সেই সংখ্যাটা বেশি। তবে, অধিকাংশ শিশুই দু-তিন দিনে বাড়ি ফিরছে। কিন্তু, কোভিড ভীতি থাকায় অভিভাবকদের উদ্বেগ থাকাটা স্বাভাবিক। সেই ভীতিতেই অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে এ দিন বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে লাভপুর, নানুর, ইলামবাজার থেকে ছুটে এসেছেন মালিনী বিবি, নাসিমা বিবি, সন্ধ্যা বাউড়িরা। তাঁরা বলেন, ‘‘বাচ্চা দু-তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছে। তাই আর ঝুঁকি নিইনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy