একটি শাড়ি তৈরি করতে এক জন শিল্পীর সময় লাগছে প্রায় ১৫ দিন নিজস্ব চিত্র।
বাংলার শাড়ির বাজারে গত কয়েক দশক ধরে সুপারহিট বিষ্ণুপুরের বালুচরি। এ বছরও পুজোর আগে বাজার মাতাতে তৈরি বিষ্ণুপুরের বালুচরি শিল্পীরা। সাধারণ বালুচরি বা স্বর্ণচরি তো আছেই, এ বার দুর্গাপুজোর আগে নবতম সংযোজন ‘কারুকলা’ নামের একটি শাড়ি। বিষ্ণুপুরের বালুচরি শিল্পী অমিতাভ পালের তাঁতে তৈরি এই বিশেষ বালুচরি শাড়ির চাহিদা বাড়ছে।
এক সময় যে বালুচরিতে স্থান পেত শুধু রামায়ণ-মহাভারতের বিভিন্ন দৃশ্য, এখন সেই বালুচরির গায়েই বোনা হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যের শিল্প-সংস্কৃতির টুকরো টুকরো দৃশ্যপট। ক্রেতাদের বদলে যাওয়া রুচির সঙ্গে ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে বালুচরির নিজস্ব ঘরানা। এ বার সেই বালুচরিতেই স্থান পেল বাঁকুড়ার নিজস্ব কুটির ও হস্তশিল্প। বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য হস্তশিল্প কেন্দ্র। তার মধ্যে টেরাকোটা, ডোকরা উল্লেখযোগ্য। আর এই সব শিল্পকর্মকেই বালুচরি শাড়িতে ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী অমিতাভ। শাড়ির গা জুড়ে নানা রঙের সুতোর উপর সুতো বুনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ডোকরা শিল্পে তৈরি ময়ূর, টেরাকোটার ঘোড়া, বিষ্ণুপুরের লন্ঠন, ঐতিহ্যবাহী দশাবতার তাসের নকশা, নীল-সাদা সুতোয় বোনা তাঁতের গামছার ছবি। শাড়ির আঁচলে ও পাড়ে স্থান পেয়েছে বিষ্ণুপুরের শ্যামরাই মন্দিরের গায়ে থাকা টেরাকোটার কারুকার্য ও মল্ল রাজাদের ঘোড়ায় চেপে যুদ্ধে যাওয়ার কাল্পনিক ছবি। অমিতাভ এই শাড়ির নাম দিয়েছেন ‘কারুকলা’। শিল্পীর দাবি, একটি শাড়ি তৈরি করতে এক জন শিল্পীর সময় লাগছে প্রায় ১৫ দিন। এক একটি শাড়ির দাম ১৮ হাজার টাকা।
অমিতাভ বলেন, “এই শাড়িতে ন’টি রঙের সুতোর ব্যবহার রয়েছে। বুনতে সময় লাগছে বেশি। এক সঙ্গে বেশি শাড়ি বোনা সম্ভব নয়। তবে চাহিদার কমতি নেই। একটি শাড়ি বোনা শেষ করতেই আরও ১৯টি শাড়ির বরাত মিলেছে। আশা করি এ বার পুজোয় এই শাড়ি ক্রেতাদের মনে জায়গা করে নেবে।’’
শাড়িতে বাঁকুড়া জেলার কুটির ও হস্তশিল্পকে স্থান দেওয়ার ভাবনা এল কী ভাবে? এই প্রশ্নের জবাবে অমিতাভ বলেন, “টানা প্রায় দু’বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বাঁকুড়ার কুটির ও হস্তশিল্প। পর্যটকরা না আসায় বিক্রি একেবারে তলানিতে। তাই শিল্পীদের চাঙ্গা করতেই শাড়ির এই থিম বেছে নিয়েছি। নিজে একজন কুটিরশিল্পী হয়ে অন্য কুটিরশিল্পের বাজার চাঙ্গা করতে পারলে তার থেকে বড় সাফল্য আর কী হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy