নলকূপ বন্ধ। হারামজাঙা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
বর্ষার মরসুম শেষ হতেই ডায়েরিয়া ছড়াতে শুরু করেছে পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে পুরুলিয়া ২ ব্লকের হারামজাঙা, পুরুলিয়া ১ ব্লকের পাঁড়রামা, ঝালদা ২ ব্লকের কচাহাতু গ্রাম থেকে সংক্রমণের খবর এসেছে। তিনটি গ্রাম থেকেই আক্রান্তদের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে।
গত সপ্তাহের শেষের দিকে একই সঙ্গে হারামজাঙা ও পাঁড়রামা গ্রামে সংক্রমণ ছড়ায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
পাঁড়রামা গ্রামের বাসিন্দারা পানীয় জল হিসেবে নলকূপের জলই ব্যবহার করেন। পুজোর পরে হঠাৎই নলকূপ বিকল হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে কুয়োর জল খাচ্ছিলেন তাঁরা। তারপরেই একের পর এক ব্যক্তি পেটের যন্ত্রণা ও ঘনঘন পায়খানার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
খবর পেয়ে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা গ্রামে যান। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫। জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাস পাত্র ও মহামারি বিশেষজ্ঞ সতীনাথ ভুঁইয়া ওই গ্রামে যান। দফতরের এক আধিকারিক জানান, ওই গ্রাম থেকে ১৩ জনকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছিল। বাকিদের গ্রামেই চিকিৎসা হয়েছে। বাসিন্দারা যে জল পান করতেন, তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। নলকূপটি মেরামত করেছে প্রশাসন।
সংক্রমণ ছড়িয়েছে পুরুলিয়া শহরের কাছেই হারামজাঙা গ্রামের সর্দার পাড়ায়। গত চার দিনে পেট ব্যথা-সহ অন্য উপসর্গ নিয়ে এই গ্রাম থেকেও স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন আট জন বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে এক বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর মিলেছে। তবে ডায়েরিয়ার তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মানতে নারাজ জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘ওই মহিলার মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়। তা ছাড়া ওই গ্রামে ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দেওয়ার আগে তিনি মারা যান। তবে এখন অবস্থা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।’’ তিনি জানান, সোমবার রাতে এক জনকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাঁরা পানীয় জল হিসেবে নলকূপের জল ব্যবহার করেন। তবে নলকূপের পাশেই পুকুর রয়েছে। তাঁদের অনুমান, পুকুরের জল কোনও ভাবে নলকূপে মিশে গিয়ে সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে। আপাতত বাসিন্দাদের নলকূপের জল খেতে নিষেধ করা হয়েছে। সেই সতর্কবার্তা নলকূপের গায়ে লিখেও দেওয়া হয়েছে।
পুরুলিয়া পুরসভার উপপুরপ্রধান বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধানে আপাতত আমরা ওই গ্রামে জলের গাড়ি পাঠাচ্ছি।’’
মঙ্গলবার ঝালদা ২ ব্লকের কচাহাতু থেকেও সংক্রমণের খবর আসে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রাম থেকে এখনও পর্যন্ত ১০ জনকে ভর্তি করানো হয়েছিল। তবে তাঁরা ছাড়া পেয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, গ্রামের বাসিন্দারা নলবাহিত পানীয় জল ব্যবহার করেন। কিন্তু অন্য কাজে পুকুরের জল ব্যবহার করেন। পুকুরের জল থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy