প্রতীকী ছবি।
ব্যাঙ্কগুলির আইএফএসসি কোড পরিবর্তনের গেরোয় ভুগতে হচ্ছে চাষিদেরও।
পূর্ব ঘোষণা মাফিক গত ১৪ মে ‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি যোজনা’-র টাকা ঢুকেছে বলে মেসেজ পেয়েছেন দুবরাজপুরের লোবা এলাকার দুই চাষি মলয় ঘোষ ও ভবসিন্ধু মণ্ডল। কিন্তু, তাঁরা ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, টাকা ঢোকেনি। কারণ যে ব্যাঙ্কে মলয়বাবুদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেটি অন্য এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সঙ্গে মার্জ বা মিশে গিয়েছে। বদলে গিয়েছে ব্যাঙ্কের আইএফএসসি কোড। সেটা আপডেট না হওয়ায় মেসেজ এলেও অ্যাকাউন্টে টাকা পাননি তাঁরা।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সমস্যা জেলা জুড়ে বহু চাষির। একাধিক রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাঙ্ক মিশে যাওয়ায় ১ এপ্রিলের পর থেকে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের আইএফএসসি কোড পরিবর্তিত হয়েছে। আইএফএসসি কোড পরিবর্তিত হওয়া যতগুলি ব্যাঙ্কের শাখা জেলায় রয়েছে, প্রতিটিতেই ওই সমস্যা।
প্রশাসন সূত্রের খবর, দু’বছর পর এই প্রথম বার কৃষক সম্মান নিধির টাকা পাচ্ছেন বাংলার কৃষকেরা। ওই প্রকল্পের আওতায় তিন কিস্তিতে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে। সূত্রের খবর, বীরভূমে ৩৭ হাজারের কিছু বেশি সংখ্যক কৃষক রয়েছেন। তাঁদের অনেকে মেসেজ পেলেও টাকা পাননি।
উপায় একটাই—সমস্যায় থাকা উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টগুলি আপডেট করে দেওয়া। তা না হলে প্রাপ্য টাকা সাসপেন্ডেড অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। জেলা কৃষি দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, একই সমস্যা হয়েছে রাজ্য সরকারের কৃষক বন্ধু প্রকল্পের বেশ কিছু প্রাপকের সঙ্গেও। জেলায় এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ ৯৩ হাজার কৃষক এই প্রকল্পের আওতায় এসেছেন। তাঁদের মধ্যে আড়াই লক্ষ কৃষক বছরে দু’বার নির্ধারিত চাকা পেয়ে থাকেন। কিন্তু, প্রায় ১২০০ কৃষকের টাকা ঘুরে গিয়েছে। ব্যাঙ্কের আইএফএসসি কোড পরিবর্তিত হয়ে যাওয়াই টাকা না-পাওয়ার মুখ্য কারণ বলে মনে করছেন কৃষিকর্তারা।
তবে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের ভুল দ্রুত শুধরে নেওয়া গেলেও প্রধানমন্ত্রী কিসান নিধি প্রকল্পের ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে। জেলার কৃষি আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, কৃষক বন্ধু প্রকল্পে উপভোক্তার অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কোনও ভুল থাকলে সেটা ঠিক করার উপায় রয়েছে। সেই কাজ চলছেও। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী কিসান নিধি প্রকল্পের পোর্টালে গিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কোনও তথ্য আপডেট করার উপায় নেই। এক মাত্র কৃষকের জমির পরিমাপ সংক্রান্ত নথি সংশোধন ছাড়া। তাই আইএফএসসি কোড বদল করতে হলে চাষিকে ব্যাঙ্কে যেতেই হবে।
বীরভূমের লিড ব্যাঙ্কের এক আধিকারিকের দাবি, কোন কোন ব্যাঙ্ক মিশছে, সেই সূচনা অনেক আগে থেকেই ছিল। ৩১ মার্চের মধ্যেই নতুন আইএফএসসি কোড সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলি আপলোড করে দিয়েছিল নিজস্ব সাইটে। সে কথা সরকারি দফতরগুলিকেও জানানো হয়েছিল। তার পরেও যে-সব সরকারি প্রকল্পে উপভোক্তার অ্যাকাউন্ট আপডেট হয়নি, তা করিয়ে নেওয়া ছাড়া টাকা পাওয়ার উপায় নেই।
কৃষি দফতরের পাল্টা যুক্তি, নির্বাচন ও করোনা সংক্রমণের আবহে এমনিতেই কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। তার উপরে যে ব্যাঙ্কগুলি অন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিশেছে, সেই সব ব্যাঙ্ক এখনও গ্রাহকদের অনেককেই পাসবুক দিতে পারে নি। পাসবুকই না পেলে প্রান্তিক মানুষ কী ভাবে আপডেট করাবেন—প্রশ্ন কৃষিকর্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy