Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Ham Radio

স্মৃতি হারিয়ে চার মাস, পরিবারের কাছে ফেরাতে সেতু হ্যাম রেডিয়ো

রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি পলাশ দাস জানান, ওই যুবক চিকিৎসক নার্সদের সেবায় সুস্থ হয়ে উঠলেও স্মৃতি শক্তি হারিয়েছিলেন।

আজিমুদ্দিন আনসারি হ্যাম রেডিওর সাহায্য ফিরে পেল পরিবার। মেডিক্যাল কলেজে মা ও স্ত্রী সাথে। ছবি সব্যসাচী ইসলাম।

আজিমুদ্দিন আনসারি হ্যাম রেডিওর সাহায্য ফিরে পেল পরিবার। মেডিক্যাল কলেজে মা ও স্ত্রী সাথে। ছবি সব্যসাচী ইসলাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট  শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৪ ১০:০২
Share: Save:

দুর্ঘটনায় চলে গিয়েছিল স্মৃতি। চার মাস তাই যোগাযোগ হয়নি পরিবারের সঙ্গে। সেই যুবককে পরিবারের সঙ্গে মিলিয়ে দিল হ্যাম রেডিয়ো। ১১৫ দিন পরে শনিবার বাড়ি ফিরলেন ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা আজিমউদ্দিন আনসারি।

রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকার সময় মোবাইল ফোন দেখতে দেখতে হাঁটতে থাকা এক যাত্রীর সঙ্গে ধাক্কায় পড়ে যান বছর চল্লিশের আজিমউদ্দিন। মাথায় ও কোমরে গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জের বারেট এলাকার বাসিন্দা ওই যুবক। গত ২ এপ্রিল রামপুরহাট স্টেশনে ওই ঘটনার পরে তাঁকে অন্য যাত্রীরা রেল পুলিশের সহযোগিতায় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে ওই যুবক সুস্থ হয়ে উঠলেও স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। বাড়ির ঠিকানা বলতে পারছিলেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত হ্যাম রেডিয়োর মাধ্যমে তাঁর পরিবারের খোঁজ পান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি পলাশ দাস জানান, ওই যুবক চিকিৎসক নার্সদের সেবায় সুস্থ হয়ে উঠলেও স্মৃতি শক্তি হারিয়েছিলেন। ফলে বাড়ির ঠিকানা ও নাম বলতে পারছিলেন না। অথচ হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা হলেই জোড় হাত করে বাড়ি ফেরানোর জন্য আবেদন জানাতেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেও ওই যুবকের বাড়ির ঠিকানা পাইনি। শেষ পর্যন্ত তিন দিন আগে হ্যাম রেডিয়োর সঙ্গে যোগাযোগ করি। শনিবার সকালে বাড়ির লোকজন এসে ওই যুবককে নিয়ে যান।’’

হ্যাম রেডিয়োর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস জানান, ‘‘হাসপাতালের সুপারের কাছ থেকে ওই যুবকের ছবি পেয়ে আমরা ওই যুবকের সঙ্গে নার্সের মাধ্যমে কথা বলি। কথাবার্তায় বুঝতে পারি ওই যুবক বিহার বা ঝাড়খণ্ডের। সেই মতো ঝাড়খণ্ডের দিকে খোঁজ চালাতে গিয়ে ওই যুবকের গ্রামের সন্ধান পাওয়া যায়।’’ তিনি জানান, রেডিয়ো ক্লাবের তরফে ওই গ্রামের মুখিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে যুবকের বাড়ির ঠিকানা মেলে। অম্বরীশ বলেন, ‘‘বাড়ির লোকেদের ছবি দেখানোর পরে তাঁরা চিনতে পারেন।’’

এ দিন সকালে যুবকের মা, স্ত্রী, ছেলে দাদা ও অন্য আত্মীয়রা হাসপাতালে আসেন। যুবকের স্ত্রী মাসুদা খাতুন বলেন, ‘‘চার মাস ধরে সাহেবগঞ্জ, রাজমহল, পাকুড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করেও সন্ধান পাইনি। শনিবার একজন বাড়িতে গিয়ে ছবি দেখিয়ে রামপুরহাট মেডিক্যালে স্বামী ভর্তি আছে বলে জানান।’’ চার মাস পরে হারানো ছেলেকে কাছে পেয়ে মা আয়েষা বেওয়াও খুশি।

হাসপাতালের সহকারী সুপার সুস্মিত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এর আগে হ্যাম রেডিয়োর মাধ্যমে হাসপাতাল থেকে সাত জনকে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দিতে পেরেছিলাম।’’ হ্যাম রেডিয়োর এই ভূমিকার প্রশংসা করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

অন্য বিষয়গুলি:

Rampurhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy