Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
বিশেষ কর্মসূচি শুরু রামপুরহাটে

বাল্যবিবাহ নয়, বাড়ি গিয়ে বোঝাবে মেয়েরা

নারী পাচার থেকে বাল্যবিবাহের পরিসংখ্যানে জেলার অবস্থান মোটেও সন্তোষজনক নয়। তা দেখেই প্রশাসনের এমন ভাবনা। মেয়েদের সমস্যা মেয়েরাই সবচেয়ে ভাল বুঝতে পারে। গুছিয়ে বলতে পারে। ফলে যে মেয়েরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিসংখ্যান তোলার কাজ করবে, এ দিকে তারা যেমন বিষটির কুফল ভাল ভাবে বুঝতে পারবে।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৭ ০১:০৫
Share: Save:

নারী, শিশুপাচার এবং বাল্যবিবাহ মোকাবিলায় পথে নামানো হল স্কুল ছাত্রীদেরই। রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ওই ছাত্রীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে দশ থেকে কুড়ি বছর বয়সী মেয়েদের তথ্য সংগ্রহ করবে। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে আপাতত রামপুরহাটের শ্যামপাহাড়ি শ্রীরামকৃষ্ণ শিক্ষাপীঠকে বাছা হয়েছে। দলবদ্ধ ভাবে গ্রামে ঘুরে তথ্য সংগ্রহের কাজও শুরু করেছে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধাপ্রাপক ছাত্রীরা। সাহায্যের জন্য রয়েছেন গ্রামের এক জন করে সিভিক ভলান্টিয়ার এবং রামপুরহাট হাইস্কুলের শিক্ষক সন্দীপ মণ্ডল।

রামপুরহাটের মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাস জানান, নারী, শিশুপাচার রোধ এবং বাল্যবিবাহ রোধ করার জন্য বিভিন্ন সংগঠন যেমন কাজ করছে, তেমনই বিভিন্ন সরকারি অফিসও এর সঙ্গে যুক্ত। অনেক সময় কাজের নাম করে ফুঁসলিয়ে নারী ও শিশু পাচার করার চেষ্টা করা হয়। বাল্যবিবাহ দেওয়ারও চেষ্টা হয়। সেক্ষেত্রে এলাকায় সচেতনতা বাড়াতে স্কুল ছাত্রীরাই প্রতিটি গ্রাম থেকে ১০ থেকে ২০ বছর বয়সী মেয়েদের ডেটা সংগ্রহ করে প্রশাসনের কাছে জমা দেবে। এ ছাড়াও এই স্কুলের মেয়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য
রামপুরহাট রেড ক্রস সোসাইটির মাধ্যমে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিলি করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

নারী পাচার থেকে বাল্যবিবাহের পরিসংখ্যানে জেলার অবস্থান মোটেও সন্তোষজনক নয়। তা দেখেই প্রশাসনের এমন ভাবনা। মেয়েদের সমস্যা মেয়েরাই সবচেয়ে ভাল বুঝতে পারে। গুছিয়ে বলতে পারে। ফলে যে মেয়েরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিসংখ্যান তোলার কাজ করবে, এ দিকে তারা যেমন বিষটির কুফল ভাল ভাবে বুঝতে পারবে। তেমনই সমবয়সি অন্য মেয়েদেরও তা ভাল ভাবে বোঝাতে পারবে। প্রশাসনের পর্যবেক্ষণ, এক জন আমলা কিংবা পুলিশের থেকেও এক জন সমবয়সীর সমস্যা অন্য সমবয়সী ভাল করে অনুভব করে বলেই তা আরও কার্যকরী। লাভও দ্বিগুণ। কেননা, যে বোঝাচ্ছে সেই মেয়েটি সচেতন হয়েছে। সে আবার অন্যকেও সচেতন করতে পারছে।

পাইলট প্রজেক্টের কনভেনর সন্দীপ মণ্ডল জানান, গত ২৬ মে ‘ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন্স মিসিং ডে’ উদ্‌যাপনের দিন প্রকল্পটি শুরু হয়। শ্যামপাহাড়ি শ্রী রামকৃষ্ণ শিক্ষাপীঠ স্কুলে এলাকার ১৮টি গ্রামের ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করে। স্কুলের কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা প্রাপক ছাত্রীদের নিয়ে কোনও গ্রামের জন্য সাত জন, কোনও গ্রামের জন্য চার জন ছাত্রীদের নিয়ে দল করা হয়েছে। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে ওই সমস্ত ছাত্রীরাই দলবদ্ধ ভাবে এলাকার ১০ থেকে ২০ বছর বয়সীদের ডেটা সংগ্রহ করছে। স্কুলের তরফে কাজটি দেখভাল করছেন শ্যামপাহাড়ি শ্রী রামকৃষ্ণ শিক্ষাপীঠের সহকারি শিক্ষক কৃষ্ণেন্দু দাস। রয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়ারও।

কী কী তথ্য চাওয়া হচ্ছে?

পাইলট প্রজেক্টের কনভেনর জানান, নাম, বয়স, অভিভাবকদের নামের পাশাপাশি পরিবারের সদস্য সংখ্যা, কত জন ছেলেমেয়ে রয়েছে, অভিভাবকের পেশা, শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি বিষয়। এ ছাড়াও বাড়ির মেয়েদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, বিবাহিত কিনা— এমনই ১৩টি প্রশ্নমালা লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। আধার কার্ডের নম্বর, একটি ফটোও লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। এসডিও জানান, প্রকল্পটি আগামী দিনে মহকুমার বিভিন্ন ব্লকের স্কুলগুলিতেও নেওয়া হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Child marriage Prevention
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy