হাটআশুড়িয়ায় বিরিঞ্চিনারায়ণ জিউর গাজনে। নিজস্ব চিত্র
হাটআশুড়িয়া গ্রামে বুধবার শুরু হয়েছে প্রায় চারশো বছরের প্রাচীন বাবা বিরিঞ্চিনারায়ণ জিউর গাজন। এলাকার অন্যতম প্রাচীন উৎসব এ’টি। নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষ উৎসবে যোগ দেন। গাজন পরিচালনা করেন গ্রামের সাতবাড়ি গুপ্ত পরিবার। চার দিন দিনরাত কয়েক হাজার মানুষ বিরিঞ্চিনারায়ণের মন্দির আর ধর্মরাজের মন্দিরের মধ্যে যাতায়াত করেন। আলোর মালায় সাজানো হয় গোটা গ্রাম। ভৈরব আনা আর ভূত ধরা এই গাজনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। গাজন কমিটির অন্যতম প্রধান ফাল্গুনী গুপ্ত বলেন, ‘‘গাজনের প্রথম দিন ভক্তরা পাট কামারশালায় নিয়ে যান। সেখান থেকে পাট যায় মসজিদে। তারপরে শুরু হয় গাজন। এমনটাই রীতি।’’ তিনি জানান, মসজিদ থেকে ভক্তদের জন্য ছোলা-গুড় পাঠানো হয়।
মূল গাজন শুরু হয় ভৈরব আনা দিয়ে। গ্রামের একটি ভৈরব মন্দির থেকে ভক্তেরা ভৈরব মূর্তি এবং হাতি-ঘোড়াগুলি শোভাযাত্রা করে বিরিঞ্চিনারায়ণের মন্দিরের কাছে একটি ভৈরব মন্দিরে নিয়ে আসেন। বাজতে থাকে ঢাক ও নানা রকমের বাজনা। গাজন কমিটির পক্ষ থেকে আশিস গুপ্ত বলেন, ‘‘ভৈরব আনা দেখতে নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষ চণ্ডীমণ্ডপে ও রাস্তায় জমায়েত করেন।’’
গাজনকে কেন্দ্র করে মেলা বসে। থাকে নাগরদোলা। আর রাশিরাশি আইসক্রিম, চপ-কাটলেট, খেলনার দোকান। মেলা জমে ওঠে চড়কের দিন। এক সময়ে এই মেলার তালপাতার পাখা ছিল বিখ্যাত। সময়ের সঙ্গে তার কদর কমলেও ঐতিহ্যটা অমলিন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সাত বাড়ির রাহুল গুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের গাজনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ভূত ধরা। নীল পুজোর বিকেলে এক জন ভক্ত গ্রামের শেষ প্রান্তের শ্মশানে গিয়ে পড়ে থাকা হাড়ের টুকরো দু’হাতের মুঠোয় নেন। বাকি ভক্তেরা বেত দিয়ে গোল করে ঘিরে রাখেন। তাঁকে রাগান। আর ওই ভক্ত তেড়ে তেড়ে যান।’’ তিনি জানান, সুঠাম ও রাগি-রাগি চেহারার কাউকে এই ভূত সাজার জন্য বাছাই করা হয়। রাহুলবাবু বলেন, ‘‘শিশুরা গাজনের আগে থেকেই জোর চর্চা করে, এ বার ‘ভূত’ কত রাগি হবে।’’ তিনি জানান, নববর্ষের দিনে ভক্তদের জন্য পঙ্ক্তি ভোজের আয়োজন হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy