প্রতীকী চিত্র।
জেলায় একটিও সাঁওতালি মাধ্যমের হাইস্কুল নেই। এ দিকে, জুনিয়র হাইস্কুলগুলি থেকে ছাত্রছাত্রীরা অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষা দিয়ে ফেলেছে। এর পরে নবম শ্রেণিতে কোথায় ভর্তি হবে তারা? এই বিষয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। সমস্যার কথা এ বার জেলা প্রশাসনকে জানাল ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল সাঁওতালি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুরুলিয়া জেলা শাখা।
জেলার সমস্ত সাঁওতালি মাধ্যমের জুনিয়র হাইস্কুল বিশেষ করে কাশীপুরের ইন্দ্রবিল চক্রের লোহাট গ্রামের জুনিয়র হাইস্কুলটিকে দ্রুত উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করার দাবি জানিয়ে সম্প্রতি পুরুলিয়ার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে সংগঠনটি। এ ছাড়া, সাঁওতালি মাধ্যমের জুনিয়র হাইস্কুলগুলিতে যে সমস্ত যুবক, যুবতীরা বিনা পারিশ্রমিকে পড়াচ্ছেন, তাঁদের ওই স্কুলগুলিতে পার্শ্বশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা-সহ ছ’দফা দাবি প্রশাসনের কাছে জানানো হয়েছে।
সংগঠনের পুরুলিয়ার জেলা সম্পাদক শত্রুঘ্ন মুর্মু বলেন, ‘‘পুরুলিয়ায় সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলি বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে চলছে। সে সবের দ্রুত সমাধানের দাবি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” সম্প্রতি শিক্ষক সংগঠনটির সঙ্গে সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করেন পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মুফতি শামিম শওকত। তাঁর আশ্বাস, সাঁওতালি মাধ্যমের স্কুলগুলির সমস্যা সহানুভূতির সঙ্গে দেখছে প্রশাসন।
পুরুলিয়ায় সাঁওতালি মাধ্যমের জুনিয়র হাইস্কুলের সংখ্যা পাঁচ। কিন্তু কোনও উচ্চমাধ্যমিক স্কুল নেই। ওই শিক্ষক সংগঠনের এক নেতা নিত্যানন্দ মান্ডির দাবি, আগে চালু হওয়া লোহাটের স্কুলটিকে উচ্চমাধ্যমিকে উন্নীত করার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শেষ করে, জেলা থেকে সে নথি রাজ্য শিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়েছে। সামনের জানুয়ারি মাসে নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকেই যাতে ওই স্কুল উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়, সে জন্য জেলা প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে তাঁরা অনুরোধ জানিয়েছেন।
ওই স্কুলে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ার সংখ্যা ৫১ জন। তাদের মধ্যে ৩০ জন ছাত্র, বাকিরা ছাত্রী। নিত্যানন্দবাবু বলেন, ‘‘জানুয়ারিতে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত না করলে ওই ৫১ জন ছাত্রছাত্রী কোথায় নবম শ্রেণিতে পড়বে? কিন্তু সমস্যা রয়েছে ওই স্কুলে শিক্ষকের অভাব।
অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, ‘‘সাঁওতালি মাধ্যমের স্থায়ী শিক্ষকের অভাব আছে। নিয়ম অনুযায়ী, অবসরপ্রাপ্ত কিন্তু ৬৫ বছর বয়সের মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ওই স্কুলে পড়াতে পারেন। কিন্তু তেমন কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। জেলা শিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষকের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। আমরা শিক্ষক সংগঠনটিকেও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের ব্যবস্থা করতে বলেছি।’’
সমস্যা মেটাতে জুনিয়র হাইস্কুলগুলিতে যাঁরা বিনা পারিশ্রমিকে পড়াচ্ছেন, তাঁদেরই সেখানে পার্শ্বশিক্ষক হিসেবে নিয়োগের দাবি তুলেছে ওই সংগঠন। তাঁদের দাবি, ওই স্কুলগুলিতে জনা চল্লিশ যুবক ও যুবতী গত কয়েক বছর ধরেই বিনা পারিশ্রমিকে পড়াচ্ছেন। শত্রুঘ্নবাবুর প্রশ্ন, ‘‘স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ আছে। কিন্তু পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ বন্ধ নেই। তা হলে স্কুলগুলিতে কেন পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে না? জেলা প্রশাসনকে তা জানিয়েছি।” অতিরিক্ত জেলাশসক বলেন, ‘‘জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy