Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

শিকারিদের অস্ত্র বাজেয়াপ্ত

শনিবার অযোধ্যা পাহাড়ের তারপানিয়ার জঙ্গলে শিকারিদের পাতা ফাঁদে আটকে পড়েছিল খরগোশের ছানা।

কেউ শিকার না করে মুরগি কিনে বনভোজনে গেলেন। অযোধ্যা পাহাড়ে। নিজস্ব চিত্র

কেউ শিকার না করে মুরগি কিনে বনভোজনে গেলেন। অযোধ্যা পাহাড়ে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

রেহাই পেল খরগোশ। প্রাণ গেল বুনো শুয়োরের। শনিবার শিকার উৎসবে অযোধ্যা পাহাড়ের ছবিটা ছিল এ রকমই। তবে, এ বার শিকার রোখায় অনেকটাই সাফল্য মিলেছে বলে দাবি বন দফতরের। আটক করা হয়েছ বেশ কিছু শিকারের সরঞ্জাম।

শনিবার অযোধ্যা পাহাড়ের তারপানিয়ার জঙ্গলে শিকারিদের পাতা ফাঁদে আটকে পড়েছিল খরগোশের ছানা। বন দফতরের টহলদারি দল চলে আসায় ভেস্তে যায় শিকার। মুক্তি পায় খরগোশ। বুদ্ধ পূর্ণিমায় অযোধ্যা পাহাড়ে শিকার উৎসবের রেওয়াজ আছে। জেলা তো বটেই, পড়শি জেলা এবং ঝাড়খণ্ড থেকেও লোক আসে। গত কয়েক বছর ধরে বন দফতর বন্যপ্রাণ রক্ষার জন্য প্রচারে নেমেছে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে সচেতন করা হচ্ছে মানুষজনকে। বিলি করা হচ্ছে লিফলেট। এ বার পথ নাটকও হয়েছে। বলা হচ্ছে, উৎসব হোক, শিকার নয়। কিন্তু তার পরেও শিকারের চেষ্টা দেখা গিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘন জঙ্গল এলাকায় একদল শিকারি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আগের দিন থেকে থেকে গিয়েছিলেন। শনিবার সকাল সকাল তাঁরা জঙ্গলের কয়েকটি জায়গায় ফাঁদ পেতে দেন। দিনের শুরুতেই একটি খরগোস ফাঁদে পড়ে। কিন্তু বন দফতরের তৎপরতায় খালি হাতেই জঙ্গল ছাড়তে হয়েছে শিকারিদের দলটিকে।

বাঘমুণ্ডি রেঞ্জ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিকারিদের কাছ থেকে মোট ছ’টি জাল, তিনটি বল্লম, পাঁচটি কাটারি এবং চারটি তির-ধনুক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, খরগোশটিকেও ছেড়ে দেওয়ার আগে বন দফতরের সঙ্গে তাঁদের রীতিমতো তর্কাতর্কি হয়। বাঘমুণ্ডি রেঞ্জের আধিকারিক মনোজকুমার মল্ল বলেন, ‘‘খরগোসটিকে তারপানিয়ার ঘন জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শিকারিদের সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’

অযোধ্যা পাহাড়ে শিকার উৎসবে অসম থেকে এসেছিলেন সর্বেশ্বর হেমব্রম ও ভীম বেসরা। ভীম বলেন, ‘‘অযোধ্যাপাহাড়ের শিকার উৎসবের কথা বড়দের কাছে অনেক শুনেছি। অনেকদিন ধরেই তাই এখানে আসার ইচ্ছা ছিল। এসে এখানকার সৌন্দর্য দেখে মন ভরে গেল।’’ তাঁর মত অনেকেই এবারই প্রথম পা রেখেছেন পাহাড়ে.

এ দিন পাহাড় ঘুরে দেখা গিয়েছে, অন্যবারের থেকে এ বারে শিকারিদের সংখ্যা কম ছিল। শিকারিদের অনেকের মতে, ভোটের মরসুম বলে লোকজন কিছুটা কম এসেছেন।

তবে বন দফতরের দাবি, পশু হত্যা বারণ করে টানা প্রচার চালানো হয়েছে। তা ছাড়া, পাহাড়ে ওঠার বিভিন্ন রাস্তায় শনিবার থেকেই বনকর্মীরা মোতায়েন ছিলেন। এ দিন বলরামপুর রেঞ্জের কলাবেড়া ও ঘাটবেড়া এলাকায় শিকারিদের কয়েকটি দলের কাছ থেকে দড়ি, ফাঁদ ও শিকার করার অস্ত্রও আটক করেন বনকর্মীরা। পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছিল পুলিশ থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার। তাতেই সাফল্য।

এ দিন দিনভর পাহাড়ে ঘুরেছেন ডিএফও (পুরুলিয়া) রামপ্রসাদ বাদানা। তিনি বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণ হত্যা রুখতে বেশ কয়েকদিন থেকে প্রচার চালানো হয়েছিল। জেলার সমস্ত বনকর্মীরা পাহাড়ে ছিলেন। কয়েকটি জায়গায় শিকারিদের কাছ থেকে জাল, ফাঁদ ইত্যাদি আটক করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, শিকারিরা বন্যপ্রাণ শিকার করতে পেরেছেন বলে খবর পাইনি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Wildlife Forest Department Poaching Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE