সাঁতুড়ির রামচন্দ্রপুরে পাহাড়ে আগুন। বুধবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
সচেতনতা প্রচার থেকে শুরু করে নাকা-তল্লাশি। পাহাড়ে অগ্নিকাণ্ড ঠেকাতে সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে বন দফতর। তার পরেও পাহাড়ে আগুন লাগার ঘটনা থামছে না। অযোধ্যা, গড়পঞ্চকোট, জয়চণ্ডীর পরে, এ বার আগুন লাগল পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি ব্লকের রামচন্দ্রপুর গ্রাম লাগোয়া পাহাড়ে। বুধবার সন্ধ্যায় প্রথমে পাহাড়ের নীচে ও পরে পাহাড়ের উপরের অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তবে বনকর্মী, সিভিক ভলান্টিয়ার ও স্থানীয়েরা মিলে শেষ পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
রঘুনাথপুরের রেঞ্জ অফিসার বিবেক ওঝা জানান, প্রায় চারশো হেক্টর এলাকা জুড়ে থাকা পাহাড়ের তিরিশ হেক্টর এলাকায় আগুন লেগেছিল। আগুনে মূলত শুকনো পাতা পুড়েছে। গাছ বা পাহাড়ের জঙ্গলে থাকা বন্যপ্রাণীর বিশেষ ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পরে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা
সম্ভব হয়েছে।
স্থানীয় ও বন দফতর সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যার দিকে স্থানীয়েরা পাহাড়ে আগুন জ্বলতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন বনকর্মী ও দফতরের আধিকারিকরা। বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, প্রথমে পাহাড়ের নীচের ভাগে আগুন লাগে। পাহাড় জুড়ে শুকনো পাতার স্তূপ থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাহাড়ের উপরের অংশে। বেশি রাতের দিকে প্রায় দু’শো ফুট উপরে পাহাড়ের চূড়োয় আগুন পৌঁছয়।
বন দফতর জানায়, আগুন লাগার খবর পাওয়ার পরেই ‘ফায়ার ব্লোয়ার’ নিয়ে বনকর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। সাহায্যে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। দফতরের এক আধিকারিক জানান, ‘ফায়ার ব্লোয়ার’ দিয়ে যেমন আগুন নেভানো যায়, তেমনই শুকনো পাতার স্তূপও সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। পাতার স্তূপ সরানো সম্ভব হওয়ায় আগুনকে পাহাড়ের এক দিকেই আটকে রাখা সম্ভব হয়েছিল।
পাহাড়টি থেকে রামচন্দ্রপুর গ্রামের দূরত্ব বেশি নয়। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায় গ্রামেও। স্থানীয়দের মধ্যে পূর্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, শেখর চক্রবর্তীরা জানান, পাহাড় থেকে আগুন যাতে লোকালয়ের দিকে চলে না আসে তা নজরে রেখেছিলেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, ‘‘সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত জেগে আগুনের গতিপথ লক্ষ্য রেখেছিলাম। বরাত জোরে আগুন পাহাড়ের উপরের দিকেই ছড়িয়েছিল।”
এ দিকে, স্থানীয়দের একাংশের অসাবধানতাতেই এই ঘটনা বলে মনে করছে বন দফতর। এলাকায় অবৈধ কাঠকয়লা কারবারিদের দৌরাত্ম্য নেই। তাই ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ পাহাড়ের জঙ্গলে আগুন লাগিয়েছে, এমন সম্ভাবনা কম বলেই দাবি দফতরের। বন দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘পাহাড়ে আগুন ধরা নিয়ে সচেতনতা প্রচারের পাশাপাশি, পাহাড়ের জঙ্গলে যাওয়া লোকজনদের আটকে নাকা তল্লাশি করে তাঁদের কাছ থেকে দেশলাই, ‘লাইটার’ নেওয়ার কাজ করছে দফতরের কর্মী ও বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যেরা। তার পরেও কী ভাবে পাহাড়ে আগুন লাগল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy