প্রতীকী ছবি।
এ বার জেলার কৃষকদের যৌথ ভাবে কিসান ক্রেডিট কার্ডের আঙ্গিকে ‘রুপে কিসান ক্রেডিট কার্ড’ দিতে চলেছে সমবায় দফতর ও বীরভূমের কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক। সব ঠিকঠাক চললে বীরভূমে ডিসেম্বরেরই জেলার ৫০ হাজার কৃষক এই কার্ড হাতে পাবেন। এ কথা জানিয়েছেন, জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সিইও বেনজির হোসেন ও জেলা সমবায় সমিতি সমূহের নিয়ামক কৃষ্ণকান্ত সরকার। সমবায় ব্যাঙ্ক ও দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন কৃষকদের জন্য প্রদত্ত ‘কিসান ক্রেডিট কার্ড’টি আদতে পরিচয় পত্রের বেশি কিছু ছিল না। এ বার কার্ডটি ব্যবহার করে একজন কৃষক যাতে প্রকৃত ‘ডেবিট’ বা ‘ক্রেডিট’ কার্ডের সুযোগ পান সেই জন্যই এমন ভাবনা নেওয়া হয়েছে।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, জেলার সাড়ে তিন লক্ষ কৃষকদের দুই তৃতীয়াংশের কিসান ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। তবে সব কৃষকের কার্ড চালু নয়। যত সংখ্যক কার্ডগ্রাহক চাষি রয়েছেন তাঁদের প্রায় ৮০ শতাংশই কোনও না কোনও প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতি বা প্যাকস-এর সদস্য। মোট ২ লক্ষ ১৮ হাজার সদস্যের প্রত্যেকেরই কার্ড থাকার কথা। কিন্তু সমস্ত সদস্যের কার্ড অ্যাকটিভ নয় বলে অ্যাকটিভ কার্ডগ্রাহকের সংখ্যা ১ লক্ষ ১৭ হাজার।
একজন কৃষকের ওই কার্ড থাকলে ফসল ভিত্তিক স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়া থেকে ফসল বিমার আওতায় আসা-সহ এক গুচ্ছ সুবিধা তিনি পেয়ে থাকেন। তবে কিসান ক্রেডিট কার্ড নামের সঙ্গে ক্রেডিট কার্ড যুক্ত থাকলেও আদতে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের সেই সুবিধা চাষিরা পেতেন না। বছর কয়েক আগে কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেম চালু হয়েছে। তারপর গত বছর থেকে জেলার যেখানে ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় ঘাটতি রয়েছে, সেই এলাকার ১১৭টি কৃষি উন্নয়ন সমিতিকে সমবায় সমিতিকেও বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক লিমিটেডের ‘কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট’ হিসাবে উন্নীত করা হয়েছে। বাকি প্যাকসগুলির পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটিয়ে আধুনিকীকরণের পথে হাঁটা হচ্ছে।
কৃষ্ণকান্ত সরকার জানিয়েছেন, কৃষকদের জন্য নতুন ‘রুপে কার্ড’ চালু করার উদ্দেশ্যেই প্রতিটি সমিতিতে যাতে নির্দিষ্ট মানের একটি পরিকাঠামো গড়ে ওঠে, সে জন্য ধাপে ধাপে কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিগুলিকে আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়া চলছে। সমবায় দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও জেলার মোট ৩২১টি প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতির (প্যাকস) মধ্যে ২৪৩টিতে কম্পিউটারের আওতায় আনার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটির প্যাকসের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। প্রতিটি কৃষি সমবায়কে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার, নিজস্ব সফটওয়্যার, স্ক্যানার, পাসবুক প্রিন্টার ও একটি স্টেটমেন্ট প্রিন্টার, একটি সোয়াইপ মেশিন দেওয়া হবে। যাতে সোসাইটি গুলি মাইক্রো এটিএমের কাজ করে। তবে রুপে কার্ড চালু হলেও আপাতত টাকা নিতে হবে ম্যানেজারের কাছ থেকে। পরে যে কোনও ব্যাঙ্ক থেকেই ওই সুবিধে পাবেন চাষিরা। কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক কৃষি সমবায় সমিতির মাধ্যমে এতদিন খরিফ রবি বোরো চাষের জন্য ‘শর্ট টার্ম সিজিওনাল এগ্রিকালচারাল অপারেশন’ বা কৃষকেরা যে ঋণ পেতেন সেটা কিসান ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেই পেতেন। কিন্তু যে পরিমাণ ঋণ অনুমোদন হতো সেটা পুরোটার জন্য কৃষককে সুদ দিতে হতো। রুপে কার্ড হলে সেই সমস্যা থাকবে না। একজন কৃষক তাঁর প্রয়োজন অনুযায়ী ধাপে ধাপে টাকা তুলতে পারবেন। যেটুকু টাকা তুলবেন সুদ দেবেন সেটার উপরেই। প্রয়োজনে ওই কার্ড ব্যবহার করে কিছু কিনতে পারবেন তিনি। এতে অনেকটা লাভবান হবেন কৃষক।
কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সিইও বেনজির হোসন বলছেন, ‘‘রুপে কার্ড দেবে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন (এনপিসিআই)। ইতিমধ্যেই ওই সংস্থার অনুমোদন মিলেছে। প্রথম ধাপে ৫০ হাজার কার্ড তৈরির জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে।
আশা করি চলতি মাসেই রুপে কার্ড হাতে পাবেন চাষিরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy