ধৃত ভুয়ো চিকিৎসক সুদীপ্ত সর্দার। নিজস্ব চিত্র।
ডাক্তারি পাশ না করেও দিব্যি অস্ত্রোপচার করতেন তিনি। রোগী দেখতেন একাধিক চেম্বারে। সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকের নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ভাঁড়িয়ে জলপাইগুড়িতে দিনের পর দিন রোগীদের ‘চিকিৎসা’ চালাচ্ছিলেন সুদীপ্ত সর্দার নামে এক যুবক! সোমবার জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ থেকে ওই ভুয়ো চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, সুদীপ্তের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর এলাকায় । সোমবারই জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে ওই ভুয়ো চিকিৎসককে পেশ করে ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। আদালত দু’দিন ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করায় অভিযুক্তকে নিয়ে বাঁকুড়ার পথে রওনা দেন তদন্তকারীরা।
বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানায় লিখিত অভিযোগ জানান বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক সুদীপ্ত সর্দার । তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর নাম এবং ‘মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’-র রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে এক ব্যাক্তি অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন জায়গায় রোগীদের প্রতারণা করছে। চিকিৎসক সুদীপ্তের অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৭, ৪১৯, ৪৬৮, ৪৬৯, ৪৭৩ এবং ৩৪ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ ।
সম্প্রতি ‘বিশেষ সূত্রে’ বারুইপুরের বাসিন্দা সুদীপ্ত সর্দারের খোঁজ পায় পুলিশ । জানা যায় নাম একই হওয়ার সুযোগ নিয়ে ওই যুবক বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক সুদীপ্ত সর্দারের নাম ভাঙিয়ে ২০১৯ সাল থেকে হাওড়া , দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং জলপাইগুড়ি জেলার একাধিক জায়গায় চেম্বার খুলে ‘চিকিৎসা’ করছেন।
পুলিশ এই ভুয়ো চিকিৎসকের তিনটি পৃথক জেলায় একাধিক চেম্বারের হদিশ পেলেও অভিযুক্ত গা ঢাকা দেওয়ায় তাঁর নাগাল পাচ্ছিল না। সোমবার সকালে সূত্রে খবর পেয়ে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জে ওই ভুয়ো চিকিৎসকের সন্ধান পায় পুলিশ । এর পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক সুদীপ্ত সোমবার বলেন, “ এক রোগীর মাধ্যমে আমি এই ভুয়ো চিকিৎসকের কথা জানতে পারি । এর পরই আমি বড়জোড়া থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলাম । ধৃতের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।’’ বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “প্রাথমিক ভাবে আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি। অভিযুক্তকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে পেশ করে পুলিশ হেফাজতের জন্য আবেদন জানানো হবে। হেফাজতে নিয়ে তাঁকে জেরা করলে বিশদ তথ্য পাওয়া যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy