Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

পৌষমেলায় নেই ‘চাঁদের হাট’, ক্ষোভ

‘চাঁদের হাটের’ উদ্যোক্তাদের ক্ষোভ, স্টল বসানোর জন্য এ বার বিশ্বভারতী অস্বাভাবিক বেশি সিকিয়োরিটি মানি ধার্য করেছে।

উপাসন গৃহে আলপনা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

উপাসন গৃহে আলপনা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

বাসুদেব ঘোষ
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৪৮
Share: Save:

এক দশকের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ছে শান্তিনিকেতনের পৌষমেলায়। বিশ্বভারতীর প্রাক্তনীদের স্টল, ‘চাঁদের হাট’ হচ্ছে না এ বছর।

‘চাঁদের হাটের’ উদ্যোক্তাদের ক্ষোভ, স্টল বসানোর জন্য এ বার বিশ্বভারতী অস্বাভাবিক বেশি সিকিয়োরিটি মানি ধার্য করেছে। তা বহন করা সম্ভব নয় বলেই এ বার তাঁরা ‘চাঁদের হাট’ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উদ্যোক্তাদের অন্যতম, বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী শর্মিলা রায় পোমো বলেন, ‘‘গত বার শুধু জায়গার জন্য ১৮ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়েছিল। কোনও সিকিয়োরিটি মানি ছিল না। এ বছর বিশ্বভারতীর তরফ থেকে জানানো হয় জায়গার ভাড়া ছাড়াও অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ সিকিয়োরিটি মানি জমা রাখতে হবে। তা আমাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। তাই আমরা স্টল বুক করতে পারিনি। পরের বছর যদি সম্ভব হয় আমরা স্টল করব।’’

শান্তিনিকেতনের পৌষমেলায় প্রাক্তনী-সহ অনেকেরই গন্তব্য থাকে এই ‘চাঁদের হাট’। প্রাক্তনীরা জানান, রবীন্দ্রনাথের চিন্তাধারাকে ধরে রাখতে শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক ও বিশ্বভারতীর কয়েকজন প্রাক্তনী ঠিক করেন, পৌষমেলায় সবার সাক্ষাৎ ও মতের আদানপ্রদানের জন্য একটি স্টল করা হবে। সেই মতো ২০০৮ সালে প্রবীণ আশ্রমিক ও বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী শর্মিলা রায় পোমো, শিবাদিত্য সেন, শ্রীলা চট্টোপাধ্যায়, জয়িতা চক্রবর্তী, শুভাশিস মিত্র প্রমুখরা মিলে তৈরি করেন ‘চাঁদের হাট’।

পৌষমেলার ‘চাঁদের হাট’ নিয়ে আবেগ জড়িয়ে আছে বিশ্বভারতীর প্রাক্তনীদের। উদ্যোক্তারা জানান, ‘চাঁদের হাট’ মেলায় আসা প্রাক্তনীদের অন্যতম মিলনক্ষেত্র। ওই স্টলে মেলার কয়েকদিন গান, বাজনা, কবিতা, আবৃত্তি ছাড়াও শিক্ষা, ইতিহাস, লোকসংস্কৃতি, সঙ্গীত ও চিত্রকলা প্রভৃতি বিষয়ের উপর আলোচনাসভা হত। ‘চাঁদের হাট’ থেকে বিভিন্ন বই ও হাতের তৈরি ক্যালেন্ডারও বিক্রি করা হতো। যা উপার্জন হত, তা দিয়ে দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় সাহায্য করা হতো। অমর্ত্য সেন, শঙ্খ ঘোষ-সহ বহু প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব এসেছেন ‘চাঁদের হাটে’। মেলায় এ বার সেই ‘চাঁদের হাট’ না থাকার খবরে ক্ষুব্ধ অনেকেই। শর্মিলাদেবী বলেন, ‘‘পৌষমেলা মানে আমাদের কাছে এক মিলন উৎসব। সমস্ত প্রাক্তনী যাতে এক জায়গায় হতে পারেন সে জন্য আমরা প্রতি বছর মেলাতে চাঁদের হাট করতাম। কিন্তু স্টল করার জন্য এত টাকা দিতে হবে এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না।’’

এ বিষয়ে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকারকে প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

অন্য বিষয়গুলি:

Pous Mela Biswa Bharati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE